Sylhet Today 24 PRINT

বাংলাদেশকে হারিয়ে সিরিজে ফিরল ভারত

স্পোর্টস ডেস্ক |  ০৭ নভেম্বর, ২০১৯

নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে কখনোই টানা ৪ ম্যাচ জেতেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এছাড়া ভারতের বিপক্ষে আগে কখনো দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজও জেতেনি বাংলাদেশ। আবার ভারতের ইতিহাসেও টানা ৩ টি-টোয়েন্টি হারের ঘটনা বিরল। তাই রাজকোটের সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি বাংলাদেশ দল জিতলে নতুন করে লেখা হতো অনেক রেকর্ড।

কিন্তু সেটি হতে দেননি স্বাগতিক দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও বাঁহাতি ওপেনার শিখর ধাওয়ান। নিজের শততম ম্যাচ খেলতে নামা রোহিত, উপলক্ষ্যটি স্মরণীয় করেছেন ৮৫ রানের ইনিংসের মাধ্যমে। উদ্বোধনী জুটিতে ১১৮ রান যোগ করার পথে ধাওয়ান করেন ৩১ রান। আর প্রথম ইনিংসে বোলাররা দেন নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ।

আর এতেই বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারিয়ে দিল্লির পরাজয়ের পর সিরিজে সমতা এনেছে ভারত। টাইগারদের করা ১৫৩ রানের সংগ্রহ পেরিয়ে যেতে ভারতকে খেলতে হয়েছে মাত্র ১৫.৪ ওভার। তরুণ লেগস্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের কল্যাণে দুইটি উইকেট নিতে পেরেছে বাংলাদেশ। যা কেবল কমিয়েছে পরাজয়ের ব্যবধান।

এ জয়ের ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনল ভারত। ফলে শেষ ম্যাচেই নির্ধারিত হবে সিরিজের জয়ী দলের নাম। যা হবে নাগপুরের বিধর্বা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে, আগামী রোববার।

রাজকোটের ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে ১৫৪ রানের লক্ষ্যটা বেশ সহজই ছিলো ভারতের জন্য। যা একদম মামুলী হয়ে যায় দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মার ঝড়ো ব্যাটে। দুজনের জুটিতে আসে ১১৮ রান। একটা সময় মনে হচ্ছিলো বিনা উইকেটেই জিতে যাবে ভারত।

তবে একাদশ ওভারে আমিনুল বিপ্লব ফিরিয়ে দেন ধাওয়ানকে। নিজের পরের ওভারেই তিনি ফেরান সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা রোহিতকেও। আউট হওয়ার আগে ধাওয়ান ৩১ ও রোহিত করেন ৮৫ রান। শততম ম্যাচের ইনিংসটিকে ৬টি করে চার-ছক্কার মারে সাজান ভারতীয় অধিনায়ক।

মূলত উদ্বোধনী জুটিতেই নিশ্চিত হয়ে যায় ভারত। এরপর বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন লোকেশ রাহুল ও শ্রেয়াস আইয়ার। রাহুল ১১ বলে ৮ ও আইয়ার করেন ১৩ বলে ২৪ রান।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৫৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। দারুণ সূচনা করেন দুই ওপেনার লিটন দাস আর নাইম শেখ। দেখেশুনে খেলেছেন তারা, বাজে বলকে সীমানার বাইরে পাঠাতেও দ্বিধা করেননি।

ফলে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিকে বিপদে ফেলতে বেগ পেতে হয়েছে ভারতীয় বোলারদের। এর মধ্যে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বাচ্চাসুলভ এক ভুল করে বসেন পান্ত। ইয়ুজবেন্দ্র চাহালের ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারিটি ডাউন দ্য উইকেট খেলতে গিয়ে অনেকটাই এগিয়ে এসেছিলেন লিটন। উইকেটকিপার পান্ত সেই বল ধরে স্ট্যাম্পও ভেঙে দেন।

লিটনও তখন সাজঘরের পথ ধরছেন। কিন্তু আম্পায়ার বললেন, তাকে দাঁড়াতে। আর রিপ্লেতে দেখা গেল পান্তের ভুলটা, উইকেটের সামনে গ্লাভস দিয়ে বল ধরেছেন তিনি। ফলে তৃতীয় আম্পায়ার নটআউট ঘোষণা করেন লিটনকে।

কিন্তু এরপর লিটন ইনিংসটা আর বেশিদূর টেনে নিতে পারেননি। চাহালের পরের ওভারের রানআউটের শিকার হন টাইগার ওপেনার। ওভারের দ্বিতীয় বলটি পায়ে লাগলে কিছু না দেখেই দৌড় দিয়েছিলেন লিটন, পান্ত সেটা একটু সামনে এসে হাতে নিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন। তাতেই ২১ বলে ৪ বাউন্ডারিতে গড়া লিটনের ২৯ রানের ইনিংসটির অপমৃত্যু ঘটে।

এরপর দারুণ খেলতে থাকা নাইমও ইনিংসের এগারতম ওভারে এসে সাজঘরে ফেরেন। ওয়াশিংটন সুন্দরকে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে বোধ হয় ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বাউন্ডারিতে ক্যাচ হয়ে যান তরুণ এই ওপেনার। ৩১ বলে ৫ চারে তিনি তখন ৩৬ রানে।

সৌম্য সরকার তবু চালিয়ে খেলছিলেন। এর মধ্যে হঠাৎ আউট হয়ে যান গত ম্যাচের নায়ক মুশফিকুর রহীম। ৬ বলে মাত্র ৪ রান করে চাহালের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ওই ওভারেই সৌম্যও ফিরলে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ১০৩ রানে হারায় ৪ উইকেট।

সৌম্যর আউটটি নিয়ে অবশ্য বিতর্ক আছে। লিটনের স্ট্যাম্পিংয়ের সময় যেভাবে বল ধরেছিলেন পান্ত, অনেকটা সেভাবেই স্ট্যাম্পের সামনে থেকে আরেকবার বল ধরে ফেলেন পান্ত। ফলে তৃতীয় আম্পায়ারের শরণাপন্ন হতে যায়।

সেখানেই ঘটে অবাক করার মতো এক ঘটনা। রিপ্লে দেখে সৌম্যকে ‘নটআউট’ ঘোষণা করে দিয়েছিলেন থার্ড আম্পায়ার। কিন্তু পরক্ষণেই জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে ওঠে ‘আউট’। ২০ বলে ২ চার আর ১ ছক্কায় সৌম্য করেন ৩০ রান। এরপর আফিফ হোসেন সাজঘরের পথ ধরেন ৮ বলে মাত্র ৬ রান করে।

এরপর কাঁধে দায়িত্ব তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। মোটামুটি মারমুখী ব্যাটিংই করেছেন। কিন্তু যতটা ঝড় তোলার দরকার ছিল, সেই চাহিদা পূরণ করতে পারেননি টাইগার অধিনায়ক। ২১ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩০ রান করে চাহারের শিকার হন তিনি।

এরপরের ব্যাটসম্যানরাও পারেননি টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটা করতে। মোসাদ্দেক হোসেন ৯ বলে ৭ আর আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ৫ বলে অপরাজিত থাকেন ৫ রানে। ফলে অল্প পুঁজিতেই থামতে হয় বাংলাদেশকে।

ভারতের পক্ষে বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন ইয়ুজবেন্দ্র চাহাল। ৪ ওভারে ২৮ রান খরচায় ২টি উইকেট নেন এই লেগস্পিনার।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.