Sylhet Today 24 PRINT

লিটনকে নিয়ে স্বস্তি, অস্বস্তি তামিমকে নিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ০৩ মার্চ, ২০২০

জয় দিয়ে কেবল সিরিজ শুরুই নয়, রোববার সিলেট স্টেডিয়ামে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসেরই সবজেয়ে বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ফলে স্বভাবতই সোমবার ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন টাইগাররা। দলের ভেতরে ক্রমের ভারী হতে থাকা চাপ, বিতর্ক, নানা ফিসফাসকে আপাতত বাক্সবন্দি করে রাখা গেছে মাঠের নৈপুন্যে। সেই স্বস্তির ছাপ ছিলো সোমবার। হাসিটাট্টা আর খুনসুটিতে সময়টা কাটিয়েছেন মাশরাফি-মুশফিকরা।

ছন্দে ফিরেছেন ওপেনার লিটন কুমার কুমার দাস, ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফিরে সাইফুদ্দীন জানান দিয়েছেন মাঠে না থাকা তার মাঠের পারফরম্যান্সে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি, ঠিক নিজের ছন্দে না হলেও রোববার উইকেট পেয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফিও। দুই উইকেট তুলে নিয়ে অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে একশ’ উইকেট প্রাপ্তির মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন। এসব ব্যক্তিগত অর্জনেও স্বস্তি ফিরেছে দলে।

এমন প্রাপ্তির ম্যাচেও একজনকে নিয়ে কিছুটা আফসোস থেকে গেছে। তিনি তামিম ইকবাল। নিঃসন্দেহে তিনি দেশসেরা ওপেনার। দলের সেরা ব্যাটসম্যান। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানও তার। কিন্তু কিছুদিন ধরেই যেনো নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন তামিম। ড্যাশিং-মারকুটে ওপেনার হিসেবে যে তামিমের পরিচিতি, বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে বিপক্ষ দলের বোলারদের লাইন-ল্যংন্থ নষ্ট করে দিতে যিতি অভ্যস্ত- সেই তামিমকে যেনো কিছুদিন ধরেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। গত বিশ্বকাপ থেকেই হচ্ছে এমনটি। পরিসংখ্যানই তা জানান দিচ্ছে। সর্বশেষ ১২ ম্যাচে তার সংগ্রহ ২৮০ রান। গড় ২৩.৩৩। আর স্ট্রাইকরেট মাত্র ৫৫.৫৫। ওয়ানডতে একজনের ওপেনার ক্ষেত্রে যা একেবারেই বেমানান।

রোববার সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেও এই ‘নড়বড়ে’ তামিমেরই দেখা মিললো। ওপেনিং সঙ্গী লিটন দাস যখন শুরু থেকেই সাবলিল ব্যাটিং করে যাছিলেন তখন হাঁসফাঁস করছিলেন তামিম। উইকেটে থিতু হতে সময় নিচ্ছিলেন। পাওয়ার প্লেতেও একের পর এক ডট বল দিয়ে গেছেন। ১৩ ওভার পর্যন্ত উইকেটে থাকলেও পুরোটা সময়ই ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। শেষপর্যন্ত ৪৩ বলে ২৪ রান করে ফিরে যান তিনি।
কী হয়েছে তামিমের? কেনো নিজেকে খোলসে বন্দি করে রেখেছেন তিনি?- এই প্রশ্নও উঠলো কালও। সোমবার তামিমকে নিয়ে ঐচ্ছিক অনুশীলনে এসেছিলেন দলের ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি। অনুশীলন শেষে তামিম প্রসঙ্গে কোচকেই ঘিরে ধরেন সংবাদকর্মীরা। তামিমের এই খোলসে বন্দি হয়ে পরার পরিকল্পনা টিম ম্যানেজম্যান্টের নয়, তামিমের নিজেরই- এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।

নিল বলেন, তামিমকে তার নিজের খেলাটা খেলে যেতে বলা হয়েছে। তামিমও জানে তার কি করা দরকার। সে সিনিয়র খেলোয়াড়।  মাঠের পরিস্থিতি বুঝে। তাকে বলে দেওয়ার কিছু নেই। শেখানোরও কিছু নেই।

তবে দলে এখনও তামিম জরুরী উল্লেখ করে নিল বলেন, গত বছর বিপিএলের ফাইনালেও সে বড় সেঞ্চুরি করেছে। তার সেই ক্ষমতা আছে। দলেরও তাকে দরকার। এখন তামিমকে তার নিজের খেলাটা চাপমুক্তভাবে খেলতে হবে। সে নিজের উপর অনেক চাপ নিয়ে ফেলে। আমরা তো কেবল মতামত, ও টেকনিক্যাল পরামর্শ দিব। কিন্তু আমরা স্কুল মাস্টার না। ফলে কাজটা নির্দিষ্ট খেলোয়াড়কেই করতে হবে।

তামিমের উপর কিছুটা নাখোশ হলেও লিটনের পারফরম্যান্সে বেশ খুশি এই ব্যাটিং কোচ। বলেন, লিটন ন্যাচারাল ট্যালেন্ট। এই প্রতিভাটা তার কাজে লাগাতে হবে। কালকে  (রোববার) যেভাবে খেলেছে এভাবেই তার খেলা উচিত।

এদিকে, প্রথম ম্যাচে হেরে সিরিজে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে জিম্বাবুয়ে দল। প্রথম ম্যাচে মাঠে নামা হয়নি দলটির অভিজ্ঞ ক্রিকেটার শন উইলিয়ামসন। টেস্ট ম্যাচের পর সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে দেশে ফিরে যান উইলিয়ামসন। রোববার সিলেট ফিরলেও দেরী হয়ে যায় অনেকটা। ফলে বাধ্য হয়ে ব্যাটিং কোচকেও স্কোয়াডে রাখতে হয় জিম্বাবুয়েকে। সোমবার সিলেট স্টেডিয়ামে ঐচ্ছিক অনুশীলন করেছেনও জিম্বাবুয়ের এই টেস্ট অধিনায়ক। আজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামারও সম্ভাবনা রয়েছে তার।

বাংলাদেশের বিপক্ষে জিততে হলে ব্যাটস্যানদেরই দায়িত্ব নিতে হবে বলে মনে করেন উইলিয়ামসন। এজন্য সিনিয়র ব্যাটসম্যানদের লম্বা ইনিংস খেলার উপর গুরুত্ব দেন তিনি।

উইলিয়ামসন বলেন, আমরা উইকেটে থিতু হওয়ার পর আউট হয়ে যাচ্ছি। আমাদের দীর্ঘ ইনিংস খেলতে হবে। সেঞ্চুরি করা খুবই দরকার। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা সেঞ্চুরি করছে আমাদের বিপক্ষে। সেঞ্চুরি করা মানেই দলকে অনেক এগিয়ে দেওয়া। আমাদের এটাই করতে হবে, বেশি বেশি সেঞ্চুরি করতে হবে।

উইলিয়ামসনের এই কথা যদি মাঠেও বাস্তবায়ন করে ফেলেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা, তবে তো আজ বাংলাদেশের কপালে বিপদই আছে! আজ দুপুরে সিলেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.