Sylhet Today 24 PRINT

বিশ্বনাথে মামলা করে বিপাকে এক নারী

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি |  ৩১ মে, ২০২০

সিলেটের বিশ্বনাথে অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুই সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পপি বেগম (৩২) নামের এক নারী। তিনি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরি গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল করিমের স্ত্রী। মামলা দায়েরের দীর্ঘ ২৯দিনেও আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়া আর স্বামী প্রবাসে থাকায় আরও বিপদে পড়তে হচ্ছে ওই নারীকে। যে কারণে দিনে-রাতে ওই নারীর বাড়িতে অভিযুক্তরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছে মামলার অভিযুক্তরা। এদিকে করোনাভাইরাসে বিশ্বনাথ থানা পুলিশের কর্মকর্তাসহ ৩৬জন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হওয়ার কারণে ওই মামালার কোনো আসামি গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না বলে জানা যায়।

মামলা তুলে না নিলে প্রাণনাশের হুমকির পাশাপাশি দিচ্ছে বাড়ি ছাড়ারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানান পপি বেগম। তিনি আরও জানান, শুক্রবার (২৯ মে) রাত থেকে তার ঘরের চালে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হচ্ছে। শনিবার (৩০ মে) রাত ১২টার পর থেকে রোববার (৩১ মে) ভোররাত ৩টা পর্যন্ত ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। যার কারণে দুই সন্তানকে নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়েছে তাকে।

পপি বেগমের অভিযোগ, গত ২মে শনিবার বিশ্বনাথ থানায় মামলা দেওয়ার পর থেকে আসামিরা প্রকাশ্যে তাকে হত্যা ও বাড়ি ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। দিনে রাতে বসত ঘরে বড়বড় ইটের টুকরা ও পাথর দিয়ে ঢিল ছোঁড়ছে। কয়েকদিন ধরে দুই সন্তানকে নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে তাকে। বিষয়টি তিনি থানা পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও জানিয়েছেন। কিন্তু কোনভাবেই হুমকি ও ঢিলছোঁড়া বন্ধ হচ্ছে না।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, স্বামী বিদেশে থাকায় পপি বেগম তার দুই মেয়ে ও আপন ছোটভাই আফসান আহমেদকে নিয়ে স্বামীর গোয়াহরির বাড়িতে বসবাস করছেন। বাড়ির প্রবেশ গেটের ভিতরে তাদের ছোট মোদি-দোকানটি তার ভাই আফসান পরিচালনা করলেও, করোনাভাইরাসের কারণে সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে। গত ১৯ এপ্রিল দুপুরে জুয়া খেলার জন্য তালাবন্ধ ওই দোকান ঘর খোলে দিতে বলেন গ্রামের আবু তাহের (২৪), নজরুল ইসলাম (২৮), রাকিব উল্লাহ (২৩), সিরাজুল ইসলাম (২৪), জুবেল আহমদ (২৪) ও কয়ছর আহমদ (২২)। আর দোকান খোলে না দেওয়ায় ওইদিন রাতেই দোকানের ৮৫ হাজার টাকার মালপত্র চুরি করা হয়।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গ্রামের লোকজনের কাছে বিচারপ্রার্থী হলে, অভিযুক্তরা তার বাড়িতে গিয়ে প্রকাশ্যে তাকে মারধর করে আহত করার পাশাপাশি শ্লীলতাহানি করেন। ঘটনার ১২দিন পরও কোন সালিশ বৈঠক না হওয়ায় অবশেষে গত ২ মে তিনি ওই ৬জনের নাম উল্লেখসহ আরও ২/৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, (মামলা নং ০২)।

এ প্রসঙ্গে গোয়াহরি গ্রামের ইউপি সদস্য গোলাম হোসেন বলেন, ঘটনার শুরু থেকেই বিষয়টি আপোষে নিষ্পত্তির চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। আর রাতের বেলা ইট ও পাথর নিক্ষেপ করা ও হুমকির বিষয়টি তাকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

দৌলতপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমির আলী এ প্রসঙ্গে বলেন, বিষয়টি ভুক্তভোগী পপি বেগম তাকে জানিয়েছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি দেখবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, পপি বেগমের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফজলুল হক করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ পর্যন্ত থানার ৩৬জন পুলিশ কর্মকর্তা আক্রান্ত। কিন্তু তারপরও এ বিষয়টি গুরুত্বেও সঙ্গে দেখার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.