Sylhet Today 24 PRINT

আসামি না হয়েও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা!

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি  |  ০২ জুলাই, ২০২০

জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে মারামারিতে গত ২৩ জুন আমার স্বামী মনোকুপা গ্রামের মসজিদের মোতাওয়াল্লী মখলিছ মিয়া (৬৫) ও প্রতিপক্ষের ওয়ারিছ আলী (৬০) নিহত হন। ঘটনার পরদিন ২৪ জুন আমার ছেলে আকরাম হোসেন বাদি হয়ে বিশ্বনাথ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং ১৬)। একইদিনে নিহত ওয়ারিছ আলীর স্ত্রী নুরুননেছা বাদী হয়ে আমাদের ৩০জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন, (মামলা নং ১৫)। কিন্তু প্রতিপক্ষের দেওয়া মামলায় আসামি না হয়েও তাদের ভয়ে আমাদের পরিবারের শিশুসহ ১৪জনকে এখন পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। প্রতি রাতেই বাড়িতে এসে আমাদের মামলার আসামিরা নানা হুমকি-ধামকি ও ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন। বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি ঘরে ঢুকার চেষ্টা করছেন। মামলা তুলে না নিলে আমাদের বাড়িতে তারা আরও লাশ ফেলা হবে বলে হুমকি দিয়েছে। ভয়ে আমরা গত ৩/৪দিন থেকে বাড়ি ছেড়ে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।

বৃহস্পতিবার (০২জুলাই) বিকেলে সিলেটের বিশ্বনাথের নিহত মখলিছ মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম (৫৫) স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেছেন।

নিহত মখলিছ মিয়ার ছোটভাই স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলু মিয়ার স্ত্রী সেলিনা আক্তার (৩৬) বলেন, প্রতিপক্ষের আত্মীয় বড়তলা গ্রামের মানিক মিয়ার ভাই মাসুক মিয়া সিলেটের বরইকান্দি থেকে ভাড়াটে লোকজনকে নিয়ে রাতের বেলা তাদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে বলেন, আমার ভাই আগামি সপ্তাহে দেশে ফিরলেই তোদেরকে মজা শিখাবো। তার অভিযোগ অলংকারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বড় তলা গ্রামের বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম রুহেলের নেতৃত্বে মারামারির ঘটনা ঘটেছে এবং তার ভাশুর নিহত হয়েছেন। এখন চেয়ারম্যানকে মামলার আসামি দেওয়ায় তার ইন্ধনে এসব হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২জুলাই) রাতে বরইকান্দির আত্মীয় পরিচয়ে মুখোশ পরা ৪/৫জন তাদের বাড়ি-ঘরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাংচুর করেছে। তার দাবি প্রতিপেক্ষর মামলায় আসামি না হয়ে ভয়ে তাকেও সন্তানাদি নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

নিহতের জামাতা (ভাতিজির স্বামী) তেতলী গ্রামের বাসিন্দা সাদেক আহমদের অভিযোগ, আত্মীয়তার সুবাদে মারামারির আগেও তিনি তেতলী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ময়নুল ইসলাম, বরইকান্দির সাবেক চেয়ারম্যান আলফু মিয়া, আজমল আলী মেম্বার, বিশ^নাথের নাজমুল ইসলাম রুহেল চেয়ারম্যান, আলীগ নেতা কবির আহমদ কুব্বারকে নিয়ে সালিশে মিমাংশার চেষ্টা করেছেন। সালিশের জন্য উভয় পক্ষ চেয়ারম্যান রুহেলের নিকট ২লাখ টাকা জামানতও রেখেছেন। কিন্তু চেয়ারম্যান রুহেলের নির্দেশে প্রতিপক্ষের লোকজন সালিশ না মেনে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এক পর্যায়ে রুহেল চেয়ারম্যানের নির্দেশেই তার চাচা শশুড়কে হত্যা করেন প্রতিপেক্ষর লোকজন। আসামি গ্রেপ্তারসহ ন্যায় বিচার পেতে তিনি পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতাও কামনা করেছেন।

মুঠোফোন বন্ধ থাকায় ইউপি চেয়ারম্যান নাজুমল ইসলাম রুহেলের সেঙ্গ যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুসা বলেন, আসামি না হয়েও পালিয়ে বেড়ানোর বিষয়টি তার জানা নেই। তবে এ বিষয়টি তিনি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন। এছাড়াও মামলার আসামি না হলে পালিয়ে বেড়ানোর কোন প্রয়োজন নেই বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে গত ২৩ জুন বিকেলে মনোকুপা গ্রামের নুরুল ইসলাম পক্ষের ওয়ারিছ আলীর (৬০) উপর হামলা করেন সমছু মিয়া পক্ষ। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় উভয়পক্ষে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন সমছু মিয়ার ভাই মখলিছ মিয়া (৬৫)। পরবর্তিতে তাদের দু’জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়েগেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দু’জনকেই মৃত ঘোষণা করেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.