Sylhet Today 24 PRINT

নগরীতে এডিস মশার উৎসস্থলে সিসিকের ভ্রাম্যমাণ আদালত, জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ০৯ জুলাই, ২০২০

সিলেটে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী না থাকলেও নগরীতে নতুন করে এডিস মশার লার্ভার সন্ধান পাওয়া গেছে। নগরীর ২৬ নং ওয়ার্ডের ভার্থখলা এলাকায় এলাকায় এডিস মশার লার্ভা ও পূর্ণাঙ্গ মশার সন্ধান পেয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)।

চলমান এডিস মশা নিধনে পরিচালিত সিসিকের অভিযানের চতুর্থ দফায় বুধবার (৮ জুলাই) এর সন্ধান পায় সিসিক। পরে আজ বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) বেলা সোয়া ১২টার দিকে ভার্থখলা এলাকায় সিরামিক ও প্লাস্টিক পণ্যের দোকানগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সিসিক। সিসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট মো. জসিম উদ্দিন এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

এসময় এডিস মশার লার্ভার জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি ও সরকারী জায়গায় অবৈধভাবে পণ্য রাখার অভিযোগে ৬ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সিলেট সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে ৮৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সিসিকের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-১ মোহাম্মদ তৌফিক বকস ও সিসিকের সচিব (ভারপ্রাপ্ত) ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম।

অভিযানে সহায়তা করেন সিলেট জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীট তত্ত্ববিদ মো. নজরুল ইসলাম। এসময় তিনি অভিযুক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর খোলা স্থানে রাখা প্লাস্টিক ও সিরামিক পণ্যে জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে এডিস মশার লার্ভার অস্তিত্ব পান।

সিসিকের ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাজমুল এন্ড ব্রাদার্স-২, ধর স্যানিটারি মার্ট, মেসার্স হিমালয় স্যানিটারি, মেসার্স কয়েছ এন্ড ব্রাদার্স সহ ৬টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এডিস মশার লার্ভার জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিতে তাদের অপরাধ এবং সরকারী জায়গায় অবৈধভাবে পণ্য রাখার অপরাধও স্বীকার করেন তারা।

ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক ৬টি মামলা করেন এবং সর্বমোট ৮৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
এছাড়া সরকারী জায়গা থেকে দুদিনের মধ্যে পণ্য সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। খোলা স্থান থেকে পণ্যগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গুদামজাতের নির্দেশও দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

নতুন করে সন্ধান পাওয়া এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসে ঔষধ স্প্রে করা হয়। একই সময় এলাকায় ফগার মেশিন দ্বারা মশক নিধনের ঔষধ দেয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

সিসিকের সচিব (ভারপ্রাপ্ত) ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, গতবার এসব স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ার কারণে এবার সিসিকের পক্ষ থেকে বছরের শুরু থেকেই সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। টায়ার টিউব ব্যবসায়ীরা খোলা স্থান থেকে তাদের পণ্য সামগ্রী সরিয়ে নিলেও ভার্থখলার প্লাস্টিক ও সিরামিকের ব্যবসায়ীরা কোন পদক্ষেপ নেননি। ফলে ইতিমধ্যেই এ এলাকায় ডেঙ্গু মশার জন্ম হয়েছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক।

সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সরকারের যুগ্ম সচিব বিধায়ক রায় চৌধুরী বলেন, নগরবাসীকে ডেঙ্গুর হাত থেকে রক্ষা করতে বছরব্যাপি কার্যক্রম চালাচ্ছে সিসিক। ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতার জন্য নগরজুড়ে মাইকিং করা হচ্ছে। বিতরণ করা হচ্ছে সচেতনতামুলক লিফলেট।

সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ও ও প্যানেল মেয়র-১ মোহাম্মদ তৌফিক বকস জানান, এর আগের এডিস মশা বংশ বৃদ্ধি সহায়ক পরিবেশ ধ্বংস করতে ব্যবসায়ীদের একাধিকবার অনুরোধ করা হয়েছে। বেআইনিভাবে সরকারী জায়গা থেকে পণ্যসামগ্রী সরিয়ে নিতে বলা হলেও তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় সিটি করপোরেশন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে বাধ্য হয়েছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নগরবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, এডিস মশার সম্ভাব্য উৎস স্থল পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোথাও স্বচ্ছ পানি জমে থাকতে দেবেন না। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে নতুন করে স্বাস্থ্য সংকটে পড়বে নগরজীবন। ডেঙ্গু মুক্ত নগরী গড়তে নগরবাসীর সহযোগিতাও চান সিসিক মেয়র।

প্রসঙ্গত, গতকাল (বুধবার) চতুর্থবারের মতো সিসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ ঐ এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা মূলক প্রচারণা চালায়। এবং খোলা স্থানে রাখা স্যানিটারি ও প্লাস্টিকের পণ্যে জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে লার্ভা পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্টদের সচেতন হবার পরামর্শ ও খোলা স্থান থেকে প্লাস্টিক বা সিরামিকের পণ্য সামগ্রী সরিয়ে নিতে অনুরোধ জানানো হয়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.