Sylhet Today 24 PRINT

বন্যায় সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি |  ১১ জুলাই, ২০২০

ভারতের পাহাড়ি ঢলে ও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার আরও ২৯ সেন্টিমিটার বেড়ে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির হয়েছে। এছাড়া পানিতে প্লাবিত হওয়া শুরু করেছে নদী তীরবর্তী বাড়িঘর ও দোকানপাট।

শনিবার (১১ জুলাই) সকালে সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্ট দিয়ে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা শুক্রবার রাত পর্যন্ত ছিল ২৫ সেন্টিমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভারতের মেঘালয়-চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাত ফলে উজানের ঢলে ও সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টির ফলে সুনামগঞ্জে বিভিন্ন নদ-নদীর বৃদ্ধি হওয়া শুরু করেছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ও যাদুকাটা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৩৩ মিলিমিটার। টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

এ দিকে টানা বৃষ্টিপাতে ও ঢলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুনামগঞ্জ শহর ও হাওরের মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। শহরের উকিলপাড়ার, কাজির পয়েন্ট, হোসেন বখত চত্বর এলাকার রাস্তাগুলো দিনের বেলা পানি না থাকলেও রাতের দিকে পানি ঢুকতে থাকে।

এ ছাড়া শহরের উত্তর আরপিন নগর, বড়পাড়া, মল্লিকপুর পশ্চিম তেঘরিয়া, কাজির পয়েন্ট, উকিলপাড়া, হোসেন বখত চত্বর এলাকাসহ বেশি কয়েকটি এলাকায় পানি প্রবেশ করে মানুষের ঘরবাড়িতে প্রবেশ করেছে।

এ দিকে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার সাথে বিভিন্ন ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। অন্যদিকে বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, ছাতক ও জামালগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়া শুরু করেছে এবং এসব উপজেলাও বাড়িঘর দোকানপাটে পানি প্রবেশ করেছে।

অন্যদিকে দ্বিতীয় দফার বন্যার কবলে পড়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা দেখা দিলে ত্রাণ সংকট দেখা দিতে পারে বলে ধারনা অনেকের। তবে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে বন্যা মোকাবেলায় তারা প্রস্তুত রয়েছেন।

নবীনগর এলাকার নজরুল মিয়া জানান, আগেও একবার বন্যায় ঘর ছাড়িয়া আশ্র‍য় কেন্দ্রে উঠলাম এখন আবার রাত থকি ঘরও হাটু পানি। ছেলে, মেয়ে, বউ নিয়া বড় সমস্যাত আছি। কাজ কাম নাই তার উপর পানি। ঘরও এখনো চুলা জ্বলছে না। আমরা বড় সমস্যাত আছি।

কাজির পয়েন্ট এলাকার দোকানী জাহিদ তালুকদার বলেন, রাতে দোকান লাগানোর সময়ও দোকানে পানি উঠেনি, কিন্তু সকালে এসে দেখি দোকানে হাটু পানি। এ রকম পানি বৃদ্ধি হতে থাকলে ব্যবসার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সহিবুর রহমান জানান, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাত থেকে আরও ২৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সকালে ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ বলেন, দ্বিতীয়বার বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। ইতিমধ্যে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং আশ্রয় কেন্দ্র খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.