Sylhet Today 24 PRINT

ট্রেনের টিকেট যেন সোনার হরিণ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

শায়েস্তাগঞ্জ প্রতিনিধি |  ০৭ আগস্ট, ২০২০

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে ট্রেনের টিকিট নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। আগাম টিকিট বিক্রির অ্যাপের সার্ভার ডাউন থাকায় বেশ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। একাধিক ভুক্তভোগিরা জানান, এবারের মত অবস্থা থাকলে মানুষ অনলাইনে টিকিট কিনার আগ্রহই হারিয়ে ফেলবে।

টিকিট প্রত্যাশী ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে শুক্রবার কথা বলে জানা গেছে, সকাল থেকেই রেলের অ্যাপ ‘রেলসেবা’ কাজ করছে না। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, ঈদে ট্রেনের টিকিট বিক্রির একদিন আগেই অ্যাপে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। যদিও বলা হয়েছিল, এবার অ্যাপটি একসঙ্গে লক্ষাধিক মানুষ অ্যাপে হিট নিতে পারবে।

গত ঈদে অ্যাপ ব্যবহারে চরম ভোগান্তি আর অব্যব্যস্থাপনার অভিযোগ ছিল রেলওয়ে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমের (সিএনএসবিডি) বিরুদ্ধে। সিএনএসবিডি ২০০৭ সাল থেকে রেলের টিকিটিং পদ্ধতি পরিচালনা করছে। অনলাইন ও অ্যাপের কাজও তারা করছে। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবার ই-টিকিটিং সিস্টেমের অবস্থার উন্নতি হবে।

শুক্রবার সকালে ইয়াসির আরাফাত নামের একজন যাত্রী জানান, সকাল ৯টার পর থেকে এই অ্যাপের সঙ্গে তিনি যুদ্ধ করছেন। আরেকজন বলেছেন, একঘণ্টা চেষ্টা করে অবশেষে টিকিট পেয়েছি। কিন্তু অ্যাপ ঠিকঠাক কাজ করছে না।

আরেকজন ই-সেবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকিট কাটতে গিয়ে দেখেন সাইট সার্ভার ডাউন হয়ে আছে।

রেল মন্ত্রণালয় সুত্রে জানা যায়, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিএনএসবিডি’র সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ। এরপর একটি প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রেলের আইটি সাপোর্ট প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হবে। তাদের তৈরি করা অ্যাপে গত ঈদুল ফিতরে ৯৫ ভাগ টিকিট যাত্রী টিকিট কাটতে গিয়ে জটিলতার মুখে পড়েন। এ তথ্য তারা নিজেরাই প্রকাশ করেন। এছাড়া বছরের পর বছর ঈদের সময়ে সার্ভার বিকল হয়ে যাওয়ার ঘটনা তো আছেই।

আড়াই মাস পর একই চিত্র ঈদুল আজহার টিকিট বিক্রিতেও। বিক্রি শুরুর আগের দিনেই অ্যাপে লগইন সমস্যা ও ওয়েবসাইটে সার্ভার ডাউন দেখানো শুরু করেছে।

গতবার অ্যাপ নিয়ে অভিযোগ আসার পরিপ্রেক্ষিতে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন রেলসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এদিকে, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ট্রেনের টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, টিকেটের মুল্যের চেয়ে দিগুন বেশি নেয়া হচ্ছে। ২১৫ টাকার টিকেট ৫০০টাকা। কোন কোন ক্ষেত্রে তা ৮০০ থেকে ৯০০ টাকাও নেয়া হচ্ছে।

সকাল ৬ টায় রেল সেবা এ্যাপস থেকে টিকেট কাটতে হয়। প্রশিক্ষনপ্রাপ্তরা ছাড়া কেউ টিকেট কাটতে পারেন না। এই সুযোগে কম্পিউটারের দোকানীরা টিকেট কেটে দিগুন দামে বিক্রি করেন। আবার অনেক যাত্রীই টিকেট ছাড়া ভ্রমন করে থাকেন।

এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার এডিএম সাইফুল ইসলাম টিকেটের বাড়তি দাম সম্পর্কে বলেন, এখন আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের কাউন্টারে কোন টিকিট বিক্রি হয় না। মানুষ ঘরে বসেই ট্রেনের টিকিট কাটেন। তিনি জানান, সবজায়গাই রেলওয়ে স্টেশন এর পাশেই কম্পিউটারের দোকান খুলে বসে আছেন, তারাই এখন টিকেট কাটতে সহায়তা করেন। তারা টিকিটের দাম বেশি নিলে আমাদের কিচ্ছু করার নেই।

অনলাইনে টিকিট কিনার ভোগান্তির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুলত সকালেই সার্ভার কিছু সমস্যা করে, কারণ এই সময় হাজার হাজার মানুষ একসাথে এ্যাপস এ ঢোকার চেষ্টা করেন, সকাল বেলা ছাড়া সার্ভার সমস্যা করে না। টিকেটের ভোগান্তির কারনে প্রতিদিন ৪ শ থেকে ৫ শ যাত্রী বিনা টিকেটে যাত্রা করেন। আমরা ইত্যিমধ্য টিকেটের বিষয়টি মন্ত্রনালয়কে অবহিত করছি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.