Sylhet Today 24 PRINT

ভূমি আত্নসাত করতে হয়রানি করছেন এভারগ্রীন হাউজিংয়ের চেয়ারম্যান

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০

সরকারী কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাউজিং প্রকল্প তৈরী করায় দুদকসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দেওয়াই আমার কাল হয়ে দাড়িয়েছে। সরকারের কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির তথ্য দেওয়াই যেন আমার মূল অপরাধ। এ অভিযোগ দেওয়ার পর তারা আমার ভূমি আত্মসাত করতে বিভিন্ন সময় জেল জুলুম মামলা হামলা করে হয়রানী করছে। এভারগ্রীন হাউজিং এর চেয়ারম্যান জামাত-শিবিরের অর্থের যোগান দাতা জামাল মো. নূর উরফে পেছন মিয়া ও তার একান্ত সহযোগী তার ভাগনা ৫নং টুলটিকর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেন আমার স্বাভাবিক জীবন অতিষ্ট করে তুলেছে।

সোমবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমমন অভিযোগ করেন সিলেট নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ডের মীরাপাড়াস্থ মরহুম আব্দুল গফুরের ছেলে রুহুল আমিন।

সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আমীন বলেন, সদর উপজেলার দেবপুর মৌজার জে.এল.নং-৯৬, ছাপা ৭৭১নং খতিয়ানের ১৪৩৭ দাগে ১১৫ শতক জায়গার মালিক ছিলেন আমার দাদা গনি মিয়া। পরবর্তীতে পরে আমি ও আমার স্ত্রী পারভীন বেগম উক্ত জায়গা বিভিন্ন দলিলে খরিদ করে নামজারী ও মাঠ ফরসা নিয়া ভোগ দখল করিয়া আসছি।

আমার মৌরসী ও খরিদা স্বত্বের ১৪৩৭ দাগের সংলগ্ন এভারগ্রীণ আবাসিক প্রকল্প গড়ে উঠেছে। যা দেবপুর মৌজায় এই আবাসন প্রকল্পের নিজস্ব ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা আমার ১৪৩৭ দাগে জোরপূর্বক দখল নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। তারা বিভিন্ন সময় উক্ত ভূমিতে কাম কাজ ও বাসাবাড়ী বানানোর পায়তারা করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায়। সন্ত্রাসীদের মূল হোতা ও হাউজিং এর চেয়ারম্যান জামাত-শিবিরের অর্থ দাতা জামাল উরফে পেছন মিয়া ও তার ছেলেরা এর আগেও বিভিন্নভাবে হয়রানী করছে। জামালের ছেলে মামলায় ২৬ দিন জেল খেটে বের হয়। এই মামলা বিচারাধীন আছে। এখন আবার এই জায়গা দখল নিতে তারা প্রতিনিয়ত দাঙ্গা হাঙ্গামা করিয়া প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। তাদের সর্বপ্রকার জোর হল জামাল উরফে পেছনের আপন ভাগনা চেয়ারম্যান আলী হোসেন ও আপন ভাতিজা মেম্বার মাহবুব আমীন। এই প্রভাবে আমাদের বিভিন্নভাবে জোরেবলে জায়গা নেওয়ার পায়তারা করে এবং বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় সাক্ষী দিয়া জেল খাটানোর চেষ্টা করে আসছে। এমনকি তারা আমার মৌরসী ও রায়-ডিক্রির জায়গার উপর লোলুপ দৃষ্টি ফেলেছে।

হাউজিং এর দালালরা আমার ১৪৩৭ দাগে ৪৪ পয়েন্ট জমি নামজারী করে নেয়। পরবর্তীতে সহকারী কমিশনার (ভূমি), সদর, সিলেটকে ভূল তথ্য দিয়ে ৪৪ পয়েন্টের বদলে ১৬ শতক নামজারী করায়। স্বত্ব ৬০/২০১৫ ইং নং মোকদ্দমায় উক্ত জাল নামজারী নিয়া দরখাস্থ দাখিল করি। উক্ত মামলা বর্তমানে বিচারাধীন আছে।

এভারগ্রীণ প্রকল্প সরকারের অনেক ভূমি আত্মসাত করে রেখেছে। যাহার দাগ নং-১৪৭৪, ১৪৮৭ ও ১৫৬৩ দাগে ৫১ শতক ভূমি। তাদের প্লটের সাথে সামিল করে ভোগ দখল করতেছে। কিন্তু এটা প্রকৃতপক্ষে খাস খতিয়ানের জায়গা ও ১৪২৬ দাগে প্রকৃত সরকারী গোপাট এভারগ্রীণ প্রকল্পে মাটি ভরাট করে। এতে সম্পূর্ণ গোপাটে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ড্রেনের কোন ব্যবস্থা না করিয়া তাদের স্বার্থের জন্য হাউজিং এর রাস্তা বানাইয়া ৭৯ একর জায়গা ভোগ দখল করছে। রাস্তায় ইট সলিং করিয়া সরকারের অর্ধ কোটি টাকার বেশী ক্ষতি করিয়াছেন। বর্তমানে এ রাস্থার মাঝে মাঝে স্থানীয় লোকজনের প্লট থাকায় তারা পিলার স্থাপন করে। এছাড়াও রাস্থা হাউজিং কর্তৃপক্ষ গেইট দিয়ে বন্ধ রাখে, তাদের প্রয়োজনে উক্ত গেইট খোলে। এখানে কোন বসতবাড়ী নেই এবং চেয়ারম্যান টাকা লুট করে খাওয়ার স্বার্থে ১৪২৬ দাগে গোপাটের উপর ব্রীজ বানাইয়াছে। এখানে ব্রীজের কোন প্রয়োজন না থাকা স্বত্বেও শুধুমাত্র সরকারী টাকা লুট করার জন্য উক্ত ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। আলী হোসেন চেয়ারম্যান পড়ালেখা করা অবস্থায় শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল, এখন সে লোক দেখানো আওয়ামী লীগ নেতা। আওয়ামীলীগের প্রভাবে অনেক হয়রানীমূলক কাজ করতেছে। সাধারণ মানুষ তার ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না।

এভারগ্রীণ প্রকল্প সরকারের জায়গা আত্মসাত ও সরকারের বড় অংকের রেজিস্টারি ফি বাবদ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে। বাড়ী রকম, সাইল রকম ও আমন রকম ভূমি তারা জালিয়াতি করে দলিলে বুরো রকম ভূমি দেখায়। এতে সরকারের কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেয়। এই বিষয় নিয়া ১২ মে ২০১৪ তারিখে সহকারে রেজিস্টারি, জেলা প্রশাসক বরাবরে প্রেরণ করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন চেয়ারম্যান ও জেলা সাব-রেজিস্টার কার্যালয় অভিযোগ করা হলেও এতে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। একারণে তারা আমার ও আমার পরিবারকে ধ্বংস ও নিশ্চিন্ন করতে চায়।

হাউজিং এর মালিক মিরাপাড়াস্থ আব্দুর রব ও মোছা. শামীমা রব আমেরিকায় থাকেন। হাউজিং এ টাকার জোরে তাদের নিজস্ব ও ভাড়াটিয়া গুন্ডা বাহিনী জামাল উরফে পেছন ও তার ভাগনা টুলটিকর ইউ/পি চেয়ারম্যান আলী ও তার ভাগনা কুতুব ও তার ছেলেরা সহ রাস্তাঘাটে বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দিতেছে। আশাকরি এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.