Sylhet Today 24 PRINT

এমসি কলেজের ‘অদক্ষ’ অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি আওয়ামী লীগের

ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০

সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ওই কলেজের অধ্যক্ষ ও ছাত্রাবাসের সুপারের পদত্যাগ দাবি করেছে সিলেট জেলা আওয়মী লীগ। কলেজ বন্ধ থাকা অবস্থায়ও কি করে ছাত্ররা ছাত্রাবাসে থাকে এই প্রশ্নও তুলেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। তাদের ছাত্রাবাসে ধরে নিয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়। এঘটনায় ছাত্রলীগের ৬ নেতাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ধর্ষিতার স্বামী।

এ ঘটনায় সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন সাক্ষরিত বিবৃতি উল্লেখ করা হয়- শুক্রবার রাত আনুমানিক ৮ টায় সিলেট এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে বেড়াতে আসা এক দম্পতিকে রাত ৯ টায় কতিপয় ছাত্র নামধারী দুর্বৃত্ত স্বামী-স্ত্রীকে কলেজ ছাত্রাবাসে ধরে নিয়ে স্বামীকে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তারা ঐতিহ্যবাহী সিলেট এমসি কলেজকে কলুষিত করেছে। আমারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সিলেট জেলা শাখার সভাপতি এডভোকেট মো: লুৎফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো: নাসির উদ্দিন খান উক্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।

বিজ্ঞাপন



বিবৃতিতে বলা হয়- করোনাকালীন সময়ে যেখানে সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে সেখানে সিলেট এমসি কলেজের মত স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাসে যেভাবে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করেছে, তা আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ সর্ব্বোতভাবে নির্যাতিতা উক্ত নারী ও তার পরিবারের পাশে থেকে যতটুকু আইনী সহায়তা প্রদান করা প্রয়োজন তা করতে প্রস্তুত আছি। পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ছাত্রাবাস বন্ধ থাকাকালীন সময়ে কিভাবে দুর্বৃত্তরা স্বামী-স্ত্রীকে ধরে নিয়ে ছাত্রাবাসে প্রবেশের সুযোগ পেল তা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চায়। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্বাধীন প্রতিষ্ঠানে আদৌ কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছিলেন কি না তা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা সিলেট এমসি কলেজের অদক্ষ, দায়িত্বহীন অধ্যক্ষ ও ছাত্রবাসের সুপারের পদত্যাগ দাবী করছি। উক্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে যারা জড়িত তারা কোন দলের হতে পারে না। ধর্ষকদের কোন দল নেই। তাদের পরিচয় একটাই তারা ঘৃণ্য অপরাধী। অনতি বিলম্বে এই ঘৃণ্য অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সংশ্লিস্ট প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।


দীর্ঘদিন ধরে কলেজ বন্ধ থাকা অবস্থায়ও ছাত্রাবাস খোলার রাখার কারণ জানতে চাইলে শনিবার দুপুরে এমসি কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ আহমদ বলেন, কলেজের গরীর ও মেধাবী ছাত্রদের সুবিধার জন্য ছাত্রাবাস খোলা ছিলো। যারা কিনা টিউশনি ও ছোটখাটো চাকরি করে তাদের পড়াশোনার খরচ যোগাচ্ছে। তবে কলেজের ছাত্রাবাস খোলা থাকলেও হোস্টেলের ক্যান্টিন বন্ধ ছিলো, ছাত্রাবাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা খাওয়া দাওয়া করতো বাইরেই।

তবে কলেজ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই এমসি কলেজ ছাত্রাবাস ছাত্রলীগের দখলে। ছাত্রদের পাশপাশি অনেক অছাত্রও এখানে আস্তানা গেড়েছে। ছাত্রাবাসের ভেতরে নিজেদের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে কিছু ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। টিলাগড় এলাকার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রশ্রয়ে ছাত্রাবাসে ভেতরে নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছে তারা। মাদক সেবন ও ব্যবসা, জুয়ার আসর বসানোসহ নানা অপকর্ম চলে ছাত্রাবাসের ভেতরে। ছাত্রাবাসের ভেতরে অস্ত্রের মজুদ করে রাখারও অভিযোগ রয়েছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.