Sylhet Today 24 PRINT

সাইফুরের মধ্যেই ছাত্রলীগের আগামীর নেতৃত্ব দেখতে পেয়েছিলেন নাজমুল

এমসি কলেজে ধর্ষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ০১ অক্টোবর, ২০২০

সিলেট এমসি কলেজে ছাত্রাবাসে সংঘষবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান। এমসি কলেজের ছাত্রলীগ নেতা তিনি। সাইফুরসহ এই মামলার সকল আসামিই ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল ইসলামের অনুসারী বলে জানা গেছে।

যদিও নাজমুল ইসলাম এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, আমি সিলেট সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। সাইফুর এমসি কলেজের ছাত্র। এই মামলার বাকিরাও হয় এমসি কলেজের ছাত্র নতুবা বহিরাগত। ফলে তাদের কারোই আমার অনুসারী হওয়ার সুযোগ নেই।

নাজমুলের দাবি, জেলার ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততার কারণে ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মীর সাথেই তার পরিচয় আছে। তেমনি পরিচয় ছিলো সাইফুরসহ এই মামলার কয়েকজন আসামির সাথে।

নাজমুল ইসলাম সিলেট জেলা ছাত্রলীগের গত কমিটির সদস্য। বর্তমানে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি নেই। আগামী কমিটিতে সভাপতি প্রার্থী ছিলেন নাজমুল।
 
তবে এই ঘটনার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাজমুলের সাথে অভিযুক্তদের অনেক ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে।

ফেসবুকে নাজমুলের একাউন্ট ঘেঁটে দেখা যায়- ২০১৬ সালে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুরের জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি পোস্ট দেন নাজমুল। এই পোষ্টে তার ভূয়সী প্রশংসা করে সাইফুরই আগামীদিনে এমসি কলেজ ও জেলা ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দেবে বলে মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন



২৯ আগস্ট ২০১৬ সালে দেওয়া ওই পোষ্টে সাইফুরকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে নাজমুল ইসলাম লিখেন-

আমার ক্ষুদ্র রাজনৈতিক জীবনে অনেক সহযোদ্ধা পেয়েছি, কিন্তু সাইফুর একজনই। আজ এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা, স্নেহাশীষ ছোটভাই সাইফুরের জন্মদিন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এবং আমি নিশ্চিত জানি আগামীর এমসি কলেজ ও সিলেট জেলা ছাত্রলীগ সাইফুরের মতো মেধাবী, সাহসী ও লড়াকুরাই নেতৃত্ব দেবে, সেই দিনটি দেখার অপেক্ষায় আজকের জন্য শুভকামনা।

তবে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের মামলায় সাইফুরকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট দেন নাজমুল। এতে সাইফুরকে গ্রেপ্তারের সংবাদের একটি লিংক শেয়ার করে নাজমুল লিখেন-

এমসি কলেজে গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধন্যবাদ জানাই প্রশাসনকে মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করায়। আশা করি দ্রুতসম সময়ের মধ্যে অন্যরাও গ্রেপ্তার হবে।

এ প্রসঙ্গে বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে নাজমুল ইসলাম বলেন, জন্মদিনে সব নেতাকর্মীকেই আমি ফেসবুকে শুভেচ্ছা জানাই। অনেকেই এরকম জানান। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানার সময় স্বাভাবিকভাবেই কিছু ভালো কথা লিখতে হয়।

তিনি বলেন, সাইফুর এমসি কলেজ থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেছে। এই দীর্ঘ সময়ে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ওঠেনি। ফলে আমি কিভাবে বুঝবো সে খারাপ। এখন যখন অভিযোগ ওঠেছে তখন আমি তার বিরুদ্ধেও লিখেছি।

নাজমুল বলেন, যে কাউকে নৈতিক-আদর্শিক শিক্ষা প্রদানের প্রদান দায়িত্ব পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। তারা যদি ব্যর্থ হয় আমরা কতটুকুইবা করতে পারি!

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। খবর পেয়ে রাতে গৃহবধূকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে শাহপরান থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় ছয় জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করে শনিবার সকালে নগরীর শাহপরান থানায় মামলা করেছিলেন ভুক্তভোগীর স্বামী। এজাহারভূক্ত ছয় আসামিসহ মোট ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.