Sylhet Today 24 PRINT

বানিয়াচংয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন

বানিয়াচং প্রতিনিধি |  ০১ অক্টোবর, ২০২০

দেশের সপ্তম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বানিয়াচং উপজেলার ৯নং পুকড়া ইউনিয়নের নাগুড়ার ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর পাশে নাগুড়ায় স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন পালন করেছে ওই ইউনিয়নের নাগুড়া, মৈউতৈল, আদমনগর, আলমপুর, পুকড়া গ্রামবাসীসহ প্রায় ১০টি গ্রামের সর্বস্তরের জনসাধারণ।

বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় হবিগঞ্জ-নবীগঞ্জ রোডের ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের সামনে এ মানববন্ধন পালন করে গ্রামবাসী।

পুকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নানু মিয়ার চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা আক্তার।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন-নাগুড়ার কৃষি ফার্মকে কেন্দ্র করেই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের চিন্তা করেন হবিগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান। বিগত ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় তার নিকট দাবি জানান সাবেক রেলমন্ত্রী প্রয়াত বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ হয়েছে মহান জাতীয় সংসদে।

নাগুড়ার কৃষি ফার্ম এলাকায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের যৌক্তিক দাবি উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, এখানে প্রায় ১শ একরের উপরে কৃষি-অকৃষিজ জমি রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও বিদ্যমান আছে। একটি তৈরি জায়গা থাকতে নতুন করে আরেকটি জায়গা তৈরি করে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয় করার কোনো মানেই হয় না। যেখানে মন্ত্রিসভার বৈঠকে নাগুড়াতে হবে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পাস হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর এই রায় পরবর্তীতে কিভাবে পরিবর্তন হয়ে জেলা সদর হল সেটাই বোধগম্য নয়। নাগুড়া ফার্ম এলাকাটি জেলার প্রাণকেন্দ্র, যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভাল। যানজট ও কোলাহলমুক্ত মনোরম পরিবেশ হওয়ার কারণে এটিই একমাত্র উপযুক্ত স্থান।

অত্র এলাকায় জমির দাম খুবই কম বলে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য জমির প্রয়োজন পড়লেও শহরের তুলনায় প্রায় ২০ গুণ কম খরচে জমি ক্রয় করা সম্ভব। প্রাথমিক গবেষণা চালানোর মতো যাবতীয় অবকাঠামো ও ব্যবস্থা বিদ্যমান আছে এই নাগুড়া ফার্মে। তাই অন্য জায়গায় নতুন করে জায়গা ক্রয় করে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে বক্তারা মানববন্ধনে উল্লেখ করেন।

তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে উত্থাপিত এবং প্রস্তাবিত নাগুড়া কৃষি ফার্মেই হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে হবিগঞ্জবাসীর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জোর দাবি জানান মানববন্ধনে আসা বক্তারা।

মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগ নেতা নাসির উদ্দিন, আব্দুর রহমান তালুকদার, যুবলীগ নেতা আজিজুল হক, ছাত্রলীগ নেতা আলাউদ্দিন, সালেহ আহমেদ, এস এ কাওসার, মোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ। মানববন্ধনে সর্বস্তরের নেতাকর্মী ছাড়াও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর হবিগঞ্জের নিউফিল্ড মাঠে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় প্রয়াত এমপি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তার বক্তব্যে নাগুড়া কৃষি ফার্মের পাশে বিপুল পরিমাণ সরকারি জমি রয়েছে উল্লেখ করে সেখানে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার যৌক্তিকতা তুলে ধরেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হবিগঞ্জে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে জেলাবাসী ধরে নিয়েছিলেন যে, নাগুড়াতেই হবে ‘হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’। গত ২৩ জুন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি সংসদে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিল উত্থাপন করেন। বিলের ৩ দফার ১ উপদফায় বলা হয় ‘এই আইনের বিধান অনুযায়ী হবিগঞ্জ জেলায় হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হবে।’ এরপর বিলটি পরীক্ষাপূর্বক সংসদে প্রতিবেদন প্রদানের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। গত ২৫ আগস্ট স্থায়ী কমিটির সভায় বিলটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষার পর কয়েকটি সংশোধনী সুপারিশ করে সংসদে পাঠানো হয়। সুপারিশের ৫ নম্বর ক্রমিকে বলা হয়, বিলের দফা ৩ এর উপদফা (১) এর প্রথম লাইনে উল্লিখিত ‘হবিগঞ্জ জেলায়’ শব্দগুলির পরিবর্তে ‘হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায়’ শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হবে। গত ১০ সেপ্টেম্বর বিলটি সংশোধিত আকারে সংসদে উপস্থাপন করা হলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.