Sylhet Today 24 PRINT

গ্রীসে নবীগঞ্জের যুবকের মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা

মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ |  ২৪ অক্টোবর, ২০২০

ইউরোপের দেশ গ্রীসে নবীগঞ্জের এক রেমিট্যান্স যোদ্ধার মৃত্যু নিয়ে নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। গ্রীসের রাজধানী এথেন্সের আত্তিকা নামক একটি এলাকায় এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সেখানের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় নাজমুল হোসেন নামের এক যুবকের। সে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের লালাপুর গ্রামের মৃত আবুল কালামের পুত্র।

শুক্রবার সকালে তাদের বাড়িতে গেলে তার পরিবার এই মৃত্যুকে হত্যা দাবি করেন বলেন, টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই খবরে নিহতের বাড়িতে চলছে স্বজনদের শোকের মাতম। অশ্রুসিক্ত নয়নে অপেক্ষায় আছেন কখন ছেলের লাশ বাড়ি ফিরবে। লাশ দেশে ফেরাতে সরকারের সহযোগিতাও চান নিহতের পরিবার।

জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার লালাপুর গ্রামের গ্রামের আবুল কালামের পুত্র নাজমুল হোসেন পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে প্রায় ১৩ বছর পূর্বে বিদেশে পাড়ি জমান। ইরান, তুর্কি হয়ে প্রায় ৮ বছর ধরে গ্রীসে বসবাস করছিলেন। একটি চায়নার কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেব কর্মরত ছিলেন। প্রায় ৮ মাস পূর্বে সেখানের নাগরিক হিসেবে বৈধতাও পেয়েছিলেন নাজমুল।

সম্প্রতি একই এলাকার মোস্তফাপুর গ্রামের মফিজুর রহমান গ্রীসে যান। সেখানে গিয়ে নাজমুলের সাথে থাকেন। তারা একটি ভাড়াটিয়া বাসায় থাকতেন। নাজমুলের পরিবারের লোকজন জানান, অনেক দিন ধরে কোন যোগাযোগ করছিল না নাজমুল। পরে তারা খবর পান গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে নাজমুলকে একটি পরিত্যক্ত জায়গা থেকে স্থানীয় পুলিশ আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। দীর্ঘসময় চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি মারা যান।

এ ব্যাপারে নিহতের মা নাজমা বেগম জানান, ‘আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল সে দেশে এসে বিয়ে করবে এ জন্য আমরা পাত্রীও খুঁজছিলাম। কিন্তু তার স্বপ্ন পূরণ হতে দিলো না ঘাতক। এসব বলেই বারবার মূর্ছা যান তিনি।’

নিহতের ভাই এনামুল হোসেন জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছিলেন নাজমুল। ভিডিওতে মফিজুলের কথাই বারবার বলেছেন।
এনামুল আরও বলেন, প্রবাস জীবনের উপার্জিত টাকা পয়সা জমা ছিল নাজমুলের কাছে। কিছু দিন পূবে জানিয়েছিল তার কাছে ১৫/১৬ লক্ষ টাকা আছে। তার স্বপ্ন ছিল ভাইকে বিদেশ পাঠাবে, জায়গা কিনে ঘর বানাবে এবং এ বছরই দেশে এসে বিয়ে করবে। তার ওই টাকা আত্মসাতের উদ্দেশেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। এমন অভিযোগ করেন নাজমুলের মা ও ভাই।

এখন নাজমুলের লাশ দ্রুত দেশে এনে শেষ দেখা দেখতে অপেক্ষায় রয়েছেন তার পরিবার। নিহত নাজমুলের ৫ ভাই ও ১ বোনের মাঝে তিনি ছিলেন সবার বড়।

সেখানে অবস্থানরত কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, লাশটি এখনো হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এখনো আসেনি। রিপোর্ট আসার পর বুঝা যাবে কিভাবে নাজমুলের মৃত্যু হয়েছে।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, লাশ দেশে আনতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.