Sylhet Today 24 PRINT

গায়ে হলুদের নাম ‘প্রকৃতিমঙ্গল’, অতিথিরা পেলেন গাছের চারা

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ২৭ নভেম্বর, ২০২০

"সৃষ্টির আদি থেকেই প্রকৃতির সাথে লেনদেন মানুষের। প্রকৃতিকে ঘিরেই মানব সভ্যতার বেড়ে ওঠা। প্রাণীদের বেঁচে থাকার অবলম্বন একমাত্র প্রকৃতি। অথচ, এই প্রকৃতি মাতার সাথে কি নিষ্ঠুর আচরণই না করছি আমরা। সাময়িক আরাম আয়েশের লোভে ক্ষতবিক্ষত করছি ধরিত্রী মাতাকে। আসলে প্রকারান্তরে আমরা নিজেদের পায়েই কুড়াল চালাচ্ছি। তাই, আমাদের আগামী প্রজন্মের বেঁচে থাকার স্বার্থেই আমাদের বাঁচিয়ে রাখেন যিনি-প্রকৃতিমাতা, তাঁর মঙ্গল আমাদের চাইতেই হবে। সুখে-দুখে,হাসি-কান্না আনন্দ-বেদনার সকল আয়োজনে প্রকৃতিকে ধারণ করতে হবে...''

...বুধবার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের ফাঁকে গল্প করতে করতে এভাবেই বলছিলেন সিলেটের নাট্যকর্মী দেবজ্যোতি দেবু।

বিজ্ঞাপন

তাঁর জীবন চলার সাথী হচ্ছেন আরেক নাট্যকর্মী উত্তরা সেন পম্পা। দু'জনেই লিটল থিয়েটারের সদস্য। ঝক্কিঝামেলা এড়াতে এক মঞ্চেই আয়োজন করেন গায়ে হলুদ সন্ধ্যার। আর, প্রকৃতিপ্রেমী এই নবযুগল তাদের হলুদ সন্ধ্যার নামকরণ করেন ''প্রকৃতিমঙ্গল"।

সবুজ শ্যামল প্রকৃতির আদলে ডিজাইন করা হয় ''প্রকৃতিমঙ্গল" মঞ্চের। গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে ব্যতিক্রমী এমন মঞ্চের স্রষ্টা সংস্কৃতিকর্মী অরূপ বাউল।

কথা হয় তাঁর সাথেও, ''এই নাম ও আবহের পেছনে একটাই কারণ; আমরা যেন প্রকৃতিকে ভালবাসতে পারি, কেননা প্রকৃতির মঙ্গল হলেই আমাদের মঙ্গল"।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের বর-কনের পক্ষ থেকে তুলে দেয়া হয় বিভিন্ন জাতের গাছের চারা। নিম, তুলসী, পুদিনা, পেঁপে, টমেটো, মরিচসহ বিভিন্ন জাতের মোট একশটি গাছের চারা তুলে দেয়া হয়।

''কেন এমন উদ্যোগ?''

নাট্যকর্মী উত্তরা সেন পম্পা জানান, আমাদের আশেপাশে শহরে এখন শুধু সবুজ কমছে। কার্বন বাড়ছে। যে গাছ আমাদের অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে; উন্নয়নের নামে সেই গাছ কাটা হচ্ছে। কিন্তু গাছ লাগানো হচ্ছে কই? আমাদের এই ছোট্ট প্রয়াস থেকে আমরা প্রত্যেককে এই একটি গাছ দিয়েছি। উৎসাহিত হয়ে যদি কেউ আরও দুএকটি করে গাছ লাগান, তাহলেই আমাদের এই কষ্ট সার্থক।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিরাও ভীষণ উচ্ছ্বসিত ছিলেন এমন ব্যতিক্রমী প্রয়াস দেখে।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি তানভীর রুহেল বলেন, সবুজের প্রতি আমাদের সবারই যত্নশীল হওয়া উচিত; ''প্রকৃতিমঙ্গল" যেন আমাদের আবারো দূষণের হাত থেকে ধরণীকে রক্ষার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। সবার উচিত এভাবে সকল উৎসবে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি মাথায় রাখা।

বিজ্ঞাপন

এমন আয়োজনে মুগ্ধ চিত্রশিল্পী সত্যাজিত চক্রবর্তীও, ''এই প্রকৃতির প্রতি আমাদের দায় অনেক, যা শোধ করার ক্ষমতা হয়তো আমাদের নেই। তবে, এভাবেই জীবনের পরতে পরতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি আমরা।''

এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগের জন্য নবদম্পতিকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান তিনি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.