Sylhet Today 24 PRINT

সিলেটে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরুর দিনেই বিপত্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ০৫ ডিসেম্বর, ২০২০

সিলেটে করোনাভাইরাস শনাক্তে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরুর দিনেই বিপত্তি দেখা দিয়েছে। শনিবার থেকে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হলেও নষ্ট হয়ে পড়েছে ওসমানী মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর মেশিন। পিসিআর মেশিন নষ্ট হওয়ায় অ্যান্টিজেন পরীক্ষার রিপোর্ট প্রদানও ব্যাহত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিস্টরা।

শনিবার সকাল থেকে শামসুদ্দিন হাসপাতালে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়। সকালে নগরের চৌহাট্টা এলাকার হাসপাতালটিতে গিয়ে দেখা যায়, আগের মতো নমুনা প্রদানের ভিড় নেই। মাঝেমাঝে দুএকজন এসে নমুনা জমা দিচ্ছেন। রোগীদের মুখ থেকে নমুনা সংগ্রহ করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

শনিবার সবমিলিয়ে ১০ জনের নমুনা সংগ্রহ হয়। দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে এসব নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। বিকেলের মধ্যে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিস্টরা।

অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় যাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে তাদের নমুনা পুণরায় পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষার নির্দেশনা রয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। তবে ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ায় অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় নেগেটিভ আসা রোগিদের রিপোর্ট এখনই দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিস্টরা।

এদিকে, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন বিদেশযাত্রীরা। শুক্রবার রাতে এই যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে।  সিলেট বিভাগের মধ্যে একমাত্র ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবেই বিদেশযাত্রীদের করোনা পরীক্ষা হয়। যন্ত্র বিকল হওয়ায় আজ এই ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। ফলে জরুরী প্রয়োজনে বিদেশযাত্রীদের ঢাকায় গিয়ে পরীক্ষা করাতে বলা হয়েছে।

গত ৭ এপ্রিল থেকে ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। আর দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর সিলেটের শহীদ ডা. শামসুদ্দিন হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল ঘোষণা করে এখানে এসংক্রান্ত রোগিদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সদর হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত এই চিকিৎসাকেন্দ্রটি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধিভূক্ত একটি প্রতিষ্ঠান।

আজ থেকে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরুর কথা জানিয়ে সিলেট শহীদ ডা. শামসুদ্দিন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুপান্ত মহাপাত্র বলেন, আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত আমরা ১৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছি। সাড়ে ১২টা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

যাদের করোনার সুস্পষ্ট লক্ষণ রয়েছে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য তাদেরই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, নমুনা পরীক্ষায় যাদের রিপোর্ট পজিটিভ আসবে তাদের আজকে বিকেলের মধ্যেই রিপোর্ট জানিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু যাদের নেগেটিভ আসবে তাদের নমুনা আবার পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করানোর নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসির যন্ত্র নষ্ট হয়ে পড়েছে। তাই ওটা ঠিক না হওয়া পর্যন্ত নেগেটিভ আসা রোগীদের অপেক্ষায় থাকতে হবে।

অ্যন্টিজেন পরীক্ষার জন্য ৫০০টি কিট ইতোমধ্যে এসে পৌঁচেছে এবং আরও ৫০০টি আসছে বলে জানিয়েছেন ডা. সুপান্ত।

সিলেট এমএজি ওসমানী মিডিকেল কলেজের আর-পিসিআর যন্ত্রের পাওয়ার সাপ্লাই নষ্ট হয়ে পড়ার কথা জানিয়ে কলেজটির উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শিশির চক্রবর্তী বলেন, শুক্রবার রাতে হঠাৎ করে মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, পিসিআর মেশিন মেরামতের জন্য কাল (রোববার) ঢাকা থেকে সংশ্লিস্ট প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা আসবেন। কালকেই এটি চালু হয়ে যেতে পারে।

ডা. শিশির বলেন, আমাদের মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ায় সাধারণ রোগীরা তেমন সমস্যায় পড়বেন না। যাদের জরুরী প্রয়োজন তাদের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করানো হবে। তবে বিদেশযাত্রীরা কিছুটা বিপাকে পড়বেন। কারণ সিলেট বিভাগে ওসমানী ল্যাব ছাড়া আর কোথাও বিদেশযাত্রীদের করোনা পরীক্ষা করা হয় না। বিদেশযাত্রীদের মধ্যে যাদের আজকালের মধ্যে পরীক্ষা করাতে হবে তাদের আমরা ঢাকায় গিয়ে পরীক্ষা করানোর অনুরোধ করেছি।
 
ওসমানীর উপাধ্যক্ষ বলেন, প্রায় নয় মাস টানা কাজ করার পর পিসিআর যন্ত্রে এমন বিপত্তি হতেই পারে। আমরা অনেকদিন থেকেই বিকল্প একটি পিসিআর যন্ত্র বরাদ্ধের জন্য মন্ত্রণালয়ে বলে আসছি। কিন্তু নানা জটিলতায় তা আর আমরা পাইনি।

সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল বলেন, আজকে পরীক্ষার জন্য আমরা গতকাল ৬০ জন বিদেশযাত্রীর নাম নিবন্ধন করেছিলাম। তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। এবং ওসমানীর পিসিআর মেশিন ঠিক না হওয়া পর্যন্ত সিলেটে নিবন্ধন বন্ধ থাকবে। এইসময়ে বিদেশযাত্রীদের ঢাকা থেকে পরীক্ষা করাতে হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.