Sylhet Today 24 PRINT

কমলগঞ্জে শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত জনজীবন

বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রকোপ

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: |  ২৪ জানুয়ারী, ২০২১

গত কয়েকদিন থেকে কনকনে হিমেল বাতাস ও শীতের তীব্রতায় কমলগঞ্জ উপজেলার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। শীতের কারণে সকল প্রকার কাজ-কর্মে ব্যাঘাত ঘটছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

মাঘের শুরুতেই শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। দিনের বেলা সূর্যের তাপে তেমন শীত অনুভূত না হলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই ঠান্ডার তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। রাত যতই গভীর হয় ঠান্ডার প্রকোপ ততই বাড়তে থাকে। এ অবস্থা চলে পরের দিন সূর্যোদয় পর্যন্ত। সকাল ও রাতের বেলা খড়কুটা জ্বালিয়ে অনেকে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। ঘন কুয়াশার দিনের বেলায়ও যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

টানা কয়েকদিনের শীতের তীব্রতায় মধ্য ও নিম্নবিত্তের মানুষ গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন। এ অবস্থায় রাতে গরম কাপড়ের অভাবে শীত কষ্টে ভুগছেন ছিন্নমূল মানুষেরা। রাতের বেলা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুদেরকে।

বিশেষ করে চা জনপদের মানুষ তীব্র শীতের কবলে পড়েছে। ফলে হাড় কাঁপানো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছেন মানুষজন। ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষেরা দুর্ভোগে পড়েছেন। যতই দিন যাচ্ছে তাপমাত্রার পারদ ততই নিচের দিকে নামছে। মাঘের শুরুতে এসে যেন হামলে পড়েছে শীত। ভোরের ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছেন ছিন্নমূল মানুষগুলো। তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপজেলার মানুষ। বিশেষ করে চা বাগান গুলোতে এবং গ্রামগুলোতে শীতের কাঁপুনি বেশি। টাকা-পয়সার অভাবে শীতবস্ত্র কিনতে পারছেন না নিম্ন আয়ের ও বাগানের শ্রমিকরা।

শীতবস্ত্রের অভাবে প্রাত্যহিক ভোরে শীতের তীব্রতার জন্য কাজে যেতে কষ্ট পোহাতে হচ্ছে তাদের। চা বাগান এলাকার চা শ্রমিকেরা সকালের দিকে গাছের পাতা, লাকড়ি কুড়িয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। এদিকে গবাদি পশু ও শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা। গবাদি পশুকে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা করতে তাদের গায়ে চটের বস্তা জড়ানো হচ্ছে। সাথে সাথে রোগব্যাধির প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। রোগব্যাধিতে বেশী আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধবয়সী পর্যন্ত সবাই। সর্দি-জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া সহ ঠান্ডাজনিত রোগ দেখা যাচ্ছে। শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশী। তারা হাসপাতাল প্রাইভেট চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এম মাহবুবুল আলম ভুঁইয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সর্দি, জ্বর, কাশি ও ঠান্ডা জনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশী। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের মধ্যে রয়েছে।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২০ও ২৯ ডিসেম্বর ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৭ জানুয়ারি ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৮ জানুয়ারি ৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ২০ জানুয়ারি ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলার উপর দিয়ে গত কয়েক দিন থেকে বইছে মাঝারি ধরনের শৈত্য প্রবাহ। আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অধিদপ্তর।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.