Sylhet Today 24 PRINT

শামীমার ‘ভুল’ সংশোধনের সুযোগ চান বাবা

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল হওয়া আইএসের জঙ্গি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শামীমা বেগমকে বাংলাদেশে আনতে আবেদন করার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করেন তার বাবা আহমেদ আলী। তিনি বলেন, শামীমা বাংলাদেশের নাগরিক নয়। তবে তাকে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি দিয়ে ‘ভুল’ সংশোধনের সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল বলে মনে করেন তিনি।

যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আহমেদ আলী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের দাওরাই গ্রামের বাসিন্দা। একই গ্রামের আসমা বেগমকে বিয়ে করে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছিলেন। সেখানে আসমা বেগম এবং আহমদ আলী দম্পতির চার মেয়ে। এর মধ্যে শামীমা বেগম সবার বড়। একপর্যায়ে স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ১৯৯০ সালে আহমদ আলী দেশে চলে আসেন। সেখানে আবার বিয়ে করেন। বর্তমানে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে তিনি গ্রামের বাড়িতেই থাকেন। মাঝেমধ্যে অল্প কিছুদিনের জন্য যুক্তরাজ্যে গেলেও অধিকাংশ সময় দেশে থাকেন।

শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে শামীমাকে সিরিয়া থেকে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের দেওয়া রায়ে বলা হয়, শামীমা বেগম যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারেন। তাই তার নাগরিকত্ব বাতিলে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাতে তাকে দেশে ফেরার অনুমতি দেওয়া উচিত হবে না।

রায়ের বিষয়ে শামীমার বাবা আহমেদ আলী বলেন, শামীমার সঙ্গে তার এখন কোনো যোগাযোগ নেই। শামীমা যখন সিরিয়া যায়, তখন সে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল। বন্ধুদের প্ররোচনায় পড়ে সে ভুল করতে পারে। তাকে ভুল সংশোধনের সুযোগ দেওয়া দরকার ছিল। ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে তাকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার পদক্ষেপ নেওয়া রাষ্ট্রের উচিত ছিল বলে তিনি মনে করেন।

আহমেদ আলী বলেন, শামীমা বাংলাদেশের নাগরিক নয়, তাই তাকে বাংলাদেশের আনার আবেদন করার কোনো সুযোগ নেই। যুক্তরাজ্যের আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে সুযোগ থাকলে আবারও আপিল করে পুনর্বিবেচনার আবেদন করা যেতে পারে। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তার আরেক মেয়ে এ বিষয়ে মামলার খোঁজখবর রাখছে। তিনি যুক্তরাজ্যে থেকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দেশে এসেছেন। এসব বিষয়ে কারও সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।

২০১৫ সালে পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন এলাকার স্কুলের ছাত্রী শামীমা বেগম ১৫ বছর বয়সে বন্ধুদের সঙ্গে সিরিয়ায় পালিয়ে গিয়ে এক আইএস জঙ্গিকে বিয়ে করেন ও সংগঠনটিতে যোগ দেন। ইয়াগো-শামীমা দম্পতির তিনটি সন্তান হয়েছিল। পুষ্টিহীনতা ও অসুস্থতায় তারা মারা যায়।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটিশ এক সাংবাদিক সিরিয়ার এক শরণার্থীশিবিরে শামীমার সাক্ষাৎ পান। তখন শামীমা যুক্তরাজ্যে ফিরে আসার আকুতি জানান। এরপর যুক্তরাজ্য সরকার শামীমার নাগরিকত্ব বাতিল করে। পরে শুরু হয় আইনি লড়াই। সর্বশেষ যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট শামীমার দেশে না ফেরার আদেশ দেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.