Sylhet Today 24 PRINT

স্বামীকে দ্বিখন্ডিত করে মস্তক পুঁতে রাখলেন স্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ১০ নভেম্বর, ২০১৫

বাবাকে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে স্বামী আলী হোসেনকে দ্বিখন্ডিত করেন স্ত্রী। এরপর স্বামীর খন্ডিত মস্তক পুতে রাখেন গর্তে আর মস্তকবিহীন দেহ ফেলে দেন পাশের জঙ্গলে। এমন রোহমর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর উপকণ্ঠের পীরেরবাজার শাহসুন্দর মাজার সংলগ্ন মোকামেরগুল এলাকায়।

এ ঘটনায় পুলিশ পারভীন আক্তার (৩৬) নামে এক গৃহবধূকে আটক করে। তার দেওয়া তথ্যমতেই পারভীনের স্বামী আলী হোসেনর দ্বিখন্ডতি দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

জানা যায়, সোমবার বিকেলে একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) সূত্র ধরে পারভীনকে আটক করে শাহপরান থানা পুলিশ। এরপর তার দেওয়া তথ্যে আলীর খণ্ডিত দেহ ও মস্তক উদ্ধার কর‍া হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চার সন্তানের জনক আলী হোসেন মোকামেরগুলে স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে।

নির্যাতন সইতে না পেরেই স্বামীকে খুন করেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন পারভীন।

সিলেট মহানগরীর শাহপরান থানার দাশপাড়া এলাকার সুরুজ আলীর মেয়ে পারভীন আক্তার তিন বছর আগে পাথর ব্যবসায়ী আলী হোসেনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি আলীর তৃতীয় স্ত্রী। আলীর অন্য দুই স্ত্রী জাফলংয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে অবশ্য তার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে।

পারভিনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত ৪ নভেম্বর (বুধবার) ভোররাতে ঘুমন্ত অবস্থায় দুই কোপে স্বামীর মাথা বিচ্ছিন্ন করেন পারভীন। বিচ্ছিন্ন মাথাটি পার্শ্ববর্তী একটি টিলার গর্তে পুতে রাখেন। আর দেহ প্রথমে ঘরের মেঝেতে গর্ত করে পুতে রাখেন। এরপর ৫ নভেম্বর রাতে মরদেহ রশি দিয়ে টেনে নিয়ে জঙ্গলে ফেলে রাখেন।

পারভীন জানান, হত্যাকাণ্ডের রাতে তার বাবা (আলীর শ্বশুর) সুরুজ আলী বাসায় অবস্থান করলেও তাকে বেশ ক’টি ঘুমের বড়ি খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখেন তিনি। এ ঘটনায় সুরুজ আলীকে আটক করলেও সোমবার রাতে তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ছয় দিনের মাথায় সোমবার মোকামেরগুল বাড়ির পাশের জঙ্গল থেকে আলী হোসেনের মাথাবিহীন দেহ উদ্ধার করা হয়। পারভীনকে আটককালে ঘর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা একটি রামদাও উদ্ধার করে পুলিশ।

আলীর ছোট ভাই জমির হোসেন জানান, ৪ নভেম্বর থেকে তার ভাইয়ের খোঁজ পাচ্ছিলেন না। অজ্ঞাত নাম্বার থেকে ভাইয়ের বন্ধু পরিচয় দিয়ে এক লোক হত্যাকাণ্ডের কথা জানায়। এরপর তারা শাহপরানা থানায় ডায়েরি (নং-৪২৭) করেন। তিনি বলেন, ৩ ভাই ও ৫ বোনের মধ্যে নিহত আলী হোসেন মেঝো। তার প্রথম স্ত্রীর ঔরসজাত তিন সন্তান এবং তৃতীয় স্ত্রীর এক সন্তান রয়েছে। তবে মেঝো স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে হলেও পরে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

নিহতের পরিবারের দাবি, পারভীন একাই তাকে খুন করে লাশ গুম করেছেন, নাকি অন্য কেউ জড়িত রয়েছে, তা তদন্ত করে বের করা দরকার।

শাহপরান থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ফজলে মাসুদ জানান, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর রাত ১০টার দিকে উদ্ধারকৃত খণ্ডিত মরদেহ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠিয়েছেন।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পারভীনের তথ্য মতে, সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ির পার্শ্ববর্তী টিলা থেকে বিচ্ছিন্ন মাথা ও জঙ্গলে ফেলা দেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় মরদেহের শরীর থেকে মাংস ঝরে পড়ছিল।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.