Sylhet Today 24 PRINT

হেফাজত নিয়ে স্ট্যাটাস: সুনামগঞ্জে ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা লাঞ্ছিত

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৭ এপ্রিল, ২০২১

দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলামের উগ্র কর্মীদের তাণ্ডবের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করায় সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা লাঞ্ছিত হয়েছেন। আর এ অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ছেলে আল মোজাহিদের বিরুদ্ধে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতার এই মাদরাসাপড়ুয়া ছেলে নিজ এলাকার ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা আফজাল খানের প্রতি ব্যক্তিগত আক্রোশের প্রতিশোধ নিতে তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে মানুষকে উত্তেজিত করে হেনস্তা করেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন ওই ছাত্র ও তার পরিবার।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জয়শ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম আলম স্থানীয় এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের সম্পর্কে চাচা হন। এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগদান করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেন। তিনি আওয়ামী লীগের সুবিধা নিলেও আওয়ামী লীগের নীতি, আদর্শবিরোধী কাজ করে আওয়ামী লীগকে নানাভাবে সমালোচিত করছেন বলে নেতাকর্মীদের অভিযোগ।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, জয়শ্রী ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের আফজাল খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও স্যার এফ রহমান হলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাদে হরিপুর সাতঘরিয়া গ্রামের আবুল হাসেম আলমের ছেলে সাবেক শিবির নেতা আল মোজাহিদের বিরোধ ছিল। সম্প্রতি ছাত্রলীগ নেতা আফজল খান দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলামের উগ্র কর্মীদের হামলা ও আক্রমণের কিছু ছবি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করেন। এই সুযোগককে কাজে লাগিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে আল মোজাহিদ ধর্ম অবমাননা এবং আল্লাহ-রাসূলের সমালোচনা হিসেবে প্রচার চালিয়ে এলাকাবাসীকে ক্ষুব্ধ করে তোলেন। জয়শ্রী বাজারে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে উদ্ধার করেন।

আবুল হাসেম আলমের পুত্র আবুল কাশেম নিজেকে এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের চাচাতো ভাই উল্লেখ করে বলেন, আফজল ফেসবুকে কী লিখছে আমি দেখিনি। শুনেছি আল্লাহ-রাসূলের বিরোধিতা করে লিখেছেন। এ কারণে আমার ভাই মাদরাসার ছাত্র আল মোজাহিদ তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি করেছিল। এর জের ধরে কিছু মানুষ উত্তেজিত হয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে। পরে তাকে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে রক্ষা করা হয়। বিষয়টি এখন নিষ্পত্তি হয়েছে। তবে আমার বাবা কখনো জামায়াতে ছিলেন না।

ছাত্রলীগ নেতা আফজাল খান বলেন, সম্প্রতি দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলামের হামলা ও আক্রমণের কিছু ছবি তার ফেইসবুক একাউন্ট থেকে পোস্ট করি। যা  কাজে লাগিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে আল মোজাহিদ ধর্ম অবমাননা এবং আল্লা-রাসুলের সমালোচনা হিসেবে প্রচার চালিয়ে এলাকাবাসীকে ক্ষুব্দ করে। আমি গতকাল বিকেলে জয়শ্রী বাজারে ঘুরতে গেলে আমাকে শারিরিকভাবে লাঞ্চিত করে হেফাজত সমর্থকরা। পরে আওয়ামী লীগের স্থানীয় কার্যালয়ে নিয়ে আমাকে ২ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে লাঞ্চিত করে।

এদিকে এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক আল আমিন রহমান এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে জয়শ্রী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ছেলে মিথ্যা অবমাননার অভিযোগ এনে জামাত শিবির নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা আফজল খানকে জনসম্মুখে লাঞ্ছিত করেছে। স্থানীয় ওই আওয়ামী লীগ নেতাসহ ওই হেনস্তাকারীদের বিচার চাই।

ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি। ওই ছাত্র অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.