Sylhet Today 24 PRINT

ওয়ার্ড বিএনপির সম্পাদক এখন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা

জুড়ী প্রতিনিধি |  ১২ এপ্রিল, ২০২১

২০১৩ সালের ৮ আগস্ট হয়েছিলেন ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আর ২০২১ সালে এসে হয়েছেন উপজেলার নেতা,তবে বিএনপির নয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের।
ঘটনাটি মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের নব গঠিত কমিটির চিত্র। তবে একজন নয় ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে স্থান পেয়েছেন সরাসরি বিএনপি করা ৪ জন এবং জামায়াতের রাজনীতি করা একজন।

এ নিয়ে গত ১০ এপ্রিল সিলেটটুডে টুয়েন্টি ফোর এ সংবাদ প্রকাশ হলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ ঝাড়তে থাকেন ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের উপর।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর দীর্ঘ ১৫ বছর পর জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেসময় কাউন্সিল ছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা বদরুল হোসেনকে সভাপতি ও মাসুক আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করেন জেলা সভাপতি এমপি নেছার আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান। সম্মেলনে ভোট না দিয়ে চাপিয়ে দেওয়া কমিটি নিয়ে অসন্তোষ ছিলো তৃণমূল। তখন নেতাকর্মীদের কে উপজেলা কমিটিতে রাখা হবে মর্মে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এরপর গত ৯ এপ্রিল রাতে জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, ২০০৪ সালে ঘোষিত আহবায়ক কমিটির অনেক সদস্য বাদ পড়েন। তাছাড়া উপজেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্ত্রী, ভাতিজা,শ্যালকসহ সরাসরি বিএনপি -জামায়াতের কয়েকজন স্থান পান।

এ ব্যাপারে সিলেটটুডে টুয়েন্টিফোর এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তারপর থেকে বিএনপি,যুবদল থেকে যারা কমিটিতে এসেছেন তাদের অতীতের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিয়ে সরব হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নব্বই দশকের ছাত্রলীগ নেতা, বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে মামলার শিকার হয়ে দেশত্যাগে বাধ্য হওয়া মাসুদ রানা লিখেছেন, ‘৯০ দশকে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের শিখর মজবুত করতে গিয়ে যে সকল ছাত্রদল ও ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীদের সাথে জুড়ীর রাজপথে মুখোমুখি হতাম।। মারামারি করতাম। হামলা মামলার শিকার হয়েছিলাম তাদেরকেই দেখি জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে। জুড়ীর রাজপথে ছাত্রলীগকে প্রতিষ্ঠিত করতে যারা রক্ত দিলো হামলা মামলার শিকার হলো তাদের কোন খোজ খবর নাই।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের নব গঠিত কমিটির সদস্য আনফর আলী কমেন্টে লিখেছেন, ‘বিএনপি থেকে ৪ চারজন " গণফোরাম থেকে ১জন " হাইব্রিড ৭জন " পারিবারিক সদস্য ৯জন "সুবিধা ভুগিদলের ২৩জন।’

তিনি আরও লিখেন, ‘২০০১এর নির্বাচনের রাত্রে আমাদের উপর যারা হামলা করেছিল।তারাই আজ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা।’

হোসাইন মোহাম্মদ শাহজাহান নামের একজন লিখেছে, ‘জুড়ী উপজেলায় আওয়ামী লীগ এর অভাব দেখা দিয়েছে তাইতো বি এন পি থেকে এনে নেতা বানানো চলছে।
কমিটির তালিকায় দেখা যায়, ২০১৩ সালের জুড়ীর ফুলতলা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজল বাউরিকে করা হয়েছে ৬৩ নং সদস্য,ফুলতলা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সদস্য কামাল উদ্দিনকে করা হয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের ৬৪ নং সদস্য,পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন বিএনপির ৩৭ নং সদস্য জাহেদ হোসেন তাজিনকে করা হয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের ৬৯ নং সদস্য।অবশ্য ২০১৭ সালে তিনি ফুলের তোড়া দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছিলেন। কুলাউড়া উপজেলার বাসিন্দা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদের স্ত্রীর বড় ভাই শাহীন আহমদ, যিনি ছাত্র জীবনে শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন তাকে ও করা হয়েছে সদস্য।

ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কাজল বাউরি এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি যে বিএনপির কমিটিতে আছি এটা আমার জানা নেই,এখন ফেসবুকে দেখে জানার পর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে জানিয়েছি।

মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান বলেন, উপজেলা থেকে যে তালিকা দেওয়া হয়েছে সেই তালিকা অনুযায়ী আমরা কমিটি করেছি। বিএনপি-জামায়াত কেউ থাকলে প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতা আহমদ হোসেন বলেন, যেহেতু জুড়ী উপজেলার কমিটি হয়েছে সে কারণে আমার জানা নেই।কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে খতিয়ে দেখা হবে।এ বিষয়ে জেলা কমিটি ভালো জানতে পারবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.