Sylhet Today 24 PRINT

শাল্লায় হামলা: আ. লীগ নেতাসহ আরও দুজন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ১০ মে, ২০২১

সুনামগঞ্জের শাল্লার উপজেলার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। হামলার ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নের ধনপুর গ্রামের আব্দুল রশিদের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা হান্নান মিয়া (৫০) ও পার্শ্ববর্তী চন্ডিপুর গ্রামের সোয়েব মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম (২২)।

সোমবার বিকালে জেলা ডিবি পুলিশের একটি দল তাদের নিজ গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে। গত ২ মে থেকে নোয়াগাঁও গ্রামের ঘটনায় তিনটি মামলা তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে হান্নান মিয়া সরমঙ্গল ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও একই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য।

হামলার ঘটনায় প্রধান আসামী যুবলীগ নেতা ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম স্বাধীন মিয়াসহ এ পর্যন্ত মোট ৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবি পুলিশ।

দুইজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশের জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইকবাল বাহার বলেন, ‘নোয়াগাঁও গ্রামের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে দুইজনকে শনাক্ত করে সোমবার বিকালে তাদেরকে নিজ গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে ১৭ মার্চ নোয়াগাঁও  গ্রামে হামলা চালায় তার অনুসারীরা। কয়েক হাজার মানুষ মিছিল করে এসে হামলা চালিয়ে এই গ্রামের ৮৮ টি বাড়িতে লুটপাট ও ভাংচুর করা হয়। এসময় গ্রামের ৫ টি মন্দির ভাংচুর করা হয়।

নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাস আপন নামের এক তরুণের ফেসবুক আইডি থেকে মাওলানা মামনুল হককে সমালোচনা করে স্ট্যাটাসের প্রতিক্রিয়ায় এই তাণ্ডব চালানো হয়। নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় ১৮ মার্চ দুটি পৃথক মামলা করা হয়। ১৫০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলার বাদী শাল্লা থানার এসআই আব্দুল করিম। নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর পক্ষে অন্য মামলাটি করেছেন স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল।

এরপর ২৫ মার্চ আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সেই ঝুমন দাশের মা নিভা রানী দাশ। পৃথক তিনটি মামলায় আসামী করা হয়েছে দিরাই থানার সরমঙ্গল ইউনিয়নের চন্দ্রপুর ও নাচনী এবং শাল্লা থানার হবিবপুর কাশিপুর গ্রামের নামাংকিত ৫০ জনসহ ১৫০০ জনকে।

মামলার প্রধান আসামী ঘটনার উস্কানীদাতা নাচনী গ্রামের বাসিন্দা সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য যুবলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম স্বাধীন মিয়া। গত ২ মে থেকে তিনটি মামলা  তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সোমবার পর্যন্ত মোট ৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৯ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।

এর আগে ১৫ মার্চ গত সোমবার সুনামগঞ্জের দিরাই স্টেডিয়ামে হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বক্তব্য দেন। এসময় ধর্মীয় উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন মামুনুল হকসহ হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতারা।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.