Sylhet Today 24 PRINT

২৪ বছরেও হয়নি ডাম্পিং স্টেশন, যত্রতত্র আবর্জনার স্তূপ

নবীগঞ্জ পৌরসভা

অঞ্জন রায়, নবীগঞ্জ:  |  ৩০ জুলাই, ২০২১

নবীগঞ্জ পৌরসভার অভ্যন্তরীণ একাধিক সড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এভাবে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলায় সড়কগুলো ময়লার ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে। সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজারো মানুষ দুর্গন্ধের দুর্ভোগে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। কাপড়ে নাক চেপে স্থানগুলো অতিক্রম করতে হচ্ছে পথচারাদীদের।

পৌরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা, ১৯৯৭ সালে গঠিত হয় নবীগঞ্জ পৌরসভা। ২০০৫ সালে তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে দ্বিতীয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। প্রথম শ্রেণীর এ পৌরসভার আয়তন ৯ দশমিক ৭ কিলোমিটার। পৌর এলাকায় রয়েছে ৩টি হাটবাজার, ১টি কসাইখানা, ৪২ কিলোমিটার পাকা রাস্তা, ইট সলিং রাস্তা ৮.১ কিলোমিটার, কাঁচারাস্তা ৩.৯ কিলোমিটার। এছাড়াও পাঁকা ড্রেন রয়েছে ৬ কিলোমিটার, কাঁচা ড্রেন ৪.১ কিলোমিটার, সড়কবাতি আছে ৫০০টি। বর্তমানে মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ৭৭৭। কিন্তু প্রতিষ্ঠার প্রায় ২৪ বছর পার হলেও আবর্জনা ফেরার নির্ধারিত স্থান (ডাম্পিং স্টেশন) করতে পারেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। এর কারণে প্রতিদিন পৌরসভার গাড়িতে ভরে ময়লা এনে হবিগঞ্জ-নবীগঞ্জ সড়কের শান্তিপাড়া, নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কের ১ নম্বর ব্রিজের গোড়া ও খালে ফেলছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। পাশাপাশি নবীগঞ্জ  নতুন বাজার মোড় ময়লা জমে থাকে, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক, ডাকবাংলো সড়কের ব্রিজের গোড়া, হাসপাতাল এলাকার অদূরের শাখা বরাকের খাল ও রুদ্রগ্রাম সড়কের শিবপাশা ব্রিজের গোড়া ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নবীগঞ্জ নতুন বাজার, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক, ডাকবাংলো সড়কের ব্রিজের গোড়া, হাসপাতাল এলাকার অদূরের শাখা বরাকের খাল ও রুদ্রগ্রাম সড়কের শিবপাশা ব্রিজের গোড়া ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা হয়েছে। এসব এসব আবর্জনার পচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। পথচারীরা চলাচল করছেন নাকে কাপড় ঢেকে। একই চিত্র দেখা গেছে হবিগঞ্জ-নবীগঞ্জ সড়কের শান্তিপাড়া, নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কের ১ নম্বর ব্রিজ এলাকায়ও। তবে অভ্যন্তরীণ চারটি সড়ক আবাসিক এলাকায় হওয়ায় বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

শিবপাশা এলাকার বাসিন্দা দুলাল মিয়া বলেন, ‘আমাদের এলাকায় গত প্রায় ৭-৮ মাস ধরে ময়লা ফেলা হচ্ছে। আমাদের বাসা সড়কের কাছেই। আমরা বাসা-বাড়ি নিয়া থাকি এভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলা মোটেও ঠিক নয়। ১ নম্বর সমস্যা ময়লায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া। আগুন দিলে গন্ধ বেশি বেড়ে যায়। বাসা-বাড়িতে থাকা যায়না। কাশি অয়। এরপর যাওয়া আসা করা যায় না গন্ধের জন্য।’

এই এলাকার সড়ক দিয়ে প্রতিদিন রিকশা চালান সাফি মিয়া। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন রাস্তা দিয়া পেসেঞ্জার নিয়া যাই। রাস্তার কান্দাত ময়লা থাকায় খারাপ গন্ধ বাইরয় (গন্ধ ছড়ায়)। ওই এলাকা দিয়ে যাওয়া কষ্টকর।’

শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে বাসা ভাড়া করে থাকেন ছমির মিয়া। তিনি বলেন, ‘যত্রতত্র পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। মানুষ খুব ভোগান্তিতে আছে। শহরে বেশ কয়েকটি রাস্তা এখন ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে।’

এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, স্থানীয় কাঁচা বাজারের প্রতিদিনের নষ্ট তরিতরকারি, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বর্জ্যসহ বিভিন্ন রকমের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এসব সড়কের পাশে, খালে। ডাস্টবিন না থাকায় স্থানীয় লোকজনও আবর্জনা ফেলেন সড়কের পাশে। এতে এ সড়কে চলাচলকারী মানুষ পরিবেশ দূষণের শিকার হচ্ছেন। কয়েক বছর ধরে এ অবস্থা বিরাজ করলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

হাসপাতাল এলাকায় কথা হয় সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক জসিম উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, ‘প্রায় ৮ বছর আগে পৌরসভা প্রথম শ্রেণী হয়েছে। আর প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার প্রধান কাজ হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে পৌর এলাকাকে স্বাস্থ্যকর শহরে পরিণত করা। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ২টি ও অভ্যন্তরীণ ৪টি সড়কের অবস্থা শোচনীয়।’

এ প্রসঙ্গে পৌরসভার মেয়র ছাবির আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ডাম্পিং স্টেশনের জায়গার ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’


টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.