Sylhet Today 24 PRINT

গোলাপগঞ্জে ঘরে ঘরে করোনার লক্ষণ, নমুনা পরীক্ষায় অনীহা

গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি |  ৩১ জুলাই, ২০২১

গোলাপগঞ্জে দিন দিন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে করোনাভাইরাস। গত ৩দিনের নমুনা পরীক্ষায় ৫৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গোলাপগঞ্জে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৬১ জনে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৭৪ জন। করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১৬ জন। আইসোলেশনে আছেন ৯০ জন।

এদিকে গোলাপগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি গ্রামে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে করোনার লক্ষণ সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই দুই থেকে তিনজন সদস্য রয়েছেন জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত। তবে করোনা আক্রান্ত হওয়ার কথা প্রকাশের ভয়ে অনেকেই চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে বাড়িতেই গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কিন্তু করোনার উপসর্গ থাকলেও নমুনা পরীক্ষা করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এতে করে করোনার রোগীর সংখ্যা আশংকাজনক হারে প্রতিদিন বাড়ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জ্বর ও সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কারও নমুনায় করোনা পজিটিভ এলে পুরো পরিবার নিয়ে আইসোলেশন এমনকি বাড়ি লকডাউনের ভয়ে অনেকেই নমুনা পরীক্ষায় অনীহা দেখাচ্ছেন। সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পাড়া ও মহল্লায়। আক্রান্ত ব্যক্তিরা অবাধে চলাচল করায় একজন থেকে অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ। অবস্থা জটিল না হলে কেউ করোনা পরীক্ষা করছেন না।

শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের দীর্ঘ লাইন। যার বেশিরভাগই নারী ও শিশু। হাসপাতালে আসা তুহিনা বেগম নামের এক তরুণী বলেন, তিনি গত দুইদিন ধরে জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভুগছেন। চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ নিতে হাসপাতালে এসেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, প্রথমে তার জ্বর ও সর্দি হয়েছে পরে পরিবারের অন্যরাও আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা ধরা পড়ার ভয়ে পরীক্ষা করাননি। বাড়িতে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেয়ে সবাই সুস্থ হয়েছেন।

আল আমিন নামের এক যুবক জানান, আমার মা গত ২/৩দিন ধরে জ্বরে কাশি, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। হাসপাতালে নিয়ে আসলে করোনার নমুনা পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহিনুর ইসলাম শাহিন বলেন, পুরো দেশজুড়েই করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেছে। গোলাপগঞ্জ উপজেলায়ও করোনা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আড়াইশ থেকে ৩শ জন রোগী করোনার লক্ষণ জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে আসছে। করোনা পরীক্ষার কথা বললে বেশির ভাগই রোগী অনীহা প্রকাশ করছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতিদিন গড়ে ৪০ জনে নমুনা সংগ্রহ করছি। নমুনার ৫০% করোনা সনাক্ত হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চললে ভবিষ্যতে করোনা আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।

এদিকে গত কয়েকদিন থেকে উপজেলার বিভিন্ন ফার্মেসিগুলোতে নাপা, অ্যাজিথ্রোমাইসিন, প্যারাসিটামল ও কিটোটোফেন গ্রুপের ওষুধসহ সর্দি-কাশির ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে।

গোলাপগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ঔষধের ফার্মেসীতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জ্বর, কাশি, মাথা ব্যথা ও সর্দির ঔষধের চাহিদা বেড়ে গেছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অনেক সময় ঔষধের সংকট দেখা দেয়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.