Sylhet Today 24 PRINT

বানিয়াচং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালদের উৎপাতে অসহায় রোগীরা

রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচং |  ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

হবিগঞ্জে উপজেলা পর্যায়ে সরকারি হাসপাতালে দালালদের শক্তিশালী সক্রিয় সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তাদের কাজ সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া। আর রোগী ভাগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে নিয়মিত দালালরা ঘন্টার পর ঘন্টা সেখানে থেকে দুর-দুরান্ত হতে আসা রোগীদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রিত ক্লিনিকে নিয়ে যাচ্ছে।

গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারটায় বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে এমনই কয়েক দালালদের উৎপাত চোখে পড়ে।

হাসপাতাল সুত্রে ও রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালদের উৎপাত নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওখানে আসলেই চোখে পড়ে রোগীর প্রেসক্রিপশন নিয়ে দালালদের টানটানির দৃশ্য। স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রশাসনও বিষয়টি দেখেও যেন না দেখার ভান করছেন।

রোগীদের নিয়ে বাণিজ্য করে অধিকাংশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও দালালরা বিপুল টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। কারণ রোগী ভাগিয়ে নিয়ে তাদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে নানা কৌশলে টাকা আদায় করছে এসব প্রতিষ্ঠান। নামমাত্র সেবা প্রদান করে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বড় অঙ্কের টাকা। অযথা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে এবং ভর্তি  থেকে শুরু করে রোগী রিলিজদান পর্যন্ত এসব দেখাশুনা করে দালালরা।

সংশ্লিষ্ট সুত্র মতে, বানিয়াচং সদরের কয়েকটি বাজারের গজিয়ে উঠেছে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত দালালরাই মূলত সরকারি হাসপাতালরে রোগীদের ভাগিয়ে নিচ্ছে। যদিও বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার মোটামুটি ব্যবস্থা রয়েছে তারপরও কমিশনের লোভে এক শ্রেণির সরকারি চিকিৎসকরা বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা ক্লিনিকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সরকারি হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরাই ওই এলাকার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকগুলোর মুল টার্গেট। সেজন্য তাদের নিয়োজিত দালাল নিয়োগ করা হয়েছে। এসব দালালরা রোগী ধরার ফাঁদ পেতে বসে থাকে। আবার অনেক ক্লিনিকের নিজস্ব  মার্কেটিং প্রতিনিধি আছে। যারা বেতন হিসেবে আবার কমিশন হিসেবে কাজ করে। এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালরা সকাল থেকে সরকারি হাসপাতালে রাত পর্যন্ত  অবস্থান করে। রোগী ভাগানো নিয়ে তাদের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলে। অনেক সময় রোগীর প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করে দালালরা।

এদিকে হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা লাগানো থাকার পরেও দালালদের এতে কোনো ভাবলেশ নেই। কয়েকজন চিকিৎসকের সাথে এদের সখ্যতাও রয়েছে বলে জানা গেছে। তারা যে কাজটি জরুরী বিভাগে বা তাদের চেম্বারে করতে পারেন সেই কাজটা মোটা অংকের টাকার আশায় অনেক ওষুধের দোকানে রোগী দেখছেন। ছোটখাটো কাজ সেখানেই সেরে নিচ্ছেন। তবে এসব তাদের অফিস টাইমের বাহিরে গিয়ে এমনটা করছেন বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র নিশ্চিত করেছে।

এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শামীমা আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, অনেক চিকিৎসকের রোস্টার অনুযায়ী ডিউটি দেয়া থাকে। তাদের ডিউটির সময় যদি চিকিৎসা না প্রদান করে সেটা দেখার বিষয় আছে। তবে ডিউটির পরে যদি অন্য কোথাও গিয়ে তারা রোগী দেখেন এটা আমার কোনো কিছু করার নাই। আর দালালের বিষয়টা এটা খোঁজ নিয়ে দেখব।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.