Sylhet Today 24 PRINT

লন্ডনে আনিসুল হকের সংবাদ সম্মেলন দেশদ্রোহীতার শামিল: আরিফ

সিলেটটুডে ডেস্ক: |  ২০ অক্টোবর, ২০২১

চলতি বছরের জুলাই মাসে এক অভিযানে নগরীর সোবহানীঘাটে বেদখল হওয়া ২৫ শতক জায়গা উদ্ধার করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। এসময় ভূমিতে দখলদারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সীমানা চিহ্নিত করা হয়। অভিযানে ৩ জন নির্বাহী হাকিম উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ঘটনার ৪ মাস পর বিষয়টি নিয়ে গত সোমবার (১৮ অক্টোবর) স্থানীয় রাত সাড়ে ৯টায় যুক্তরাজ্যের হোয়াইট চ্যাপলের একটি রেস্টুরেন্টে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ওই জায়গার মালিক দাবিদার প্রবাসী আনিসুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে ওই ২৫ শতক জায়গা তার পিতার ক্রয় সূত্রে পাওয়া বলে তিনি দাবি করেন। সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী তা অন্যায়ভাবে দখল করেছেন বলে অভিযোগ আনিসুল হকের।

যুক্তরাজ্যের আনিসুল হকের করা সেই সংবাদ সম্মেলনের পাল্টা জবাব দিতে মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় নগরভবনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সরকারের বিচারবিভাগের আওতায় আদালত এবং জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের নিস্পত্তিকৃত ও চলমান মামলা বিষয়ে দেশের বাইরে (লন্ডনে) বসে আনিসুল হক যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সেটি দেশদ্রোহীতার শামিল। সিলেট সিটি করপোরেশন বাংলাদেশ সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান। আনিসুল হক ভিনদেশে বসে সংবাদ সম্মেলনের অর্থ হচ্ছে- তিনি গণমাধ্যম এবং অনলাইন গণমাধ্যম ব্যবহার করে দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’

মেয়র বলেন, যুক্তরাজ্যে সংবাদ সম্মেলনকারী দাবি করেছেন- তার ঘরবাড়িসহ সব স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয় এবং আদালতের রায়ের বা ডিক্রির কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি সিলেট সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু ওইদিন সিসিকের নির্বাহী হকিমের কাছে কেউ কাগজপত্র প্রদর্শনের জন্য আসেননি।’

‘সংবাদ সম্মেলনকারী সিলেট সিটি কর্পোরেশনকে দখলদার ও সিসিকে মেয়র হিসেবে আমাকে জমি দখলকারী উল্লেখ করে শুধু আমার বা সিসিকের নয়, সিলেট মহানগরীর সর্বস্তরের জনসাধারণের মানহানি করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সর্বাবস্থায় আদালতে সিদ্ধান্তক্রমেই বর্ণিত ভূমির উন্নয়নকাজ অব্যাহত রাখা হয়েছে এবং এ পর্যন্ত কাউকে নির্যাতন বা হয়রানি করার কোনো প্রমাণ আমি পাইনি। সংবাদ সম্মেলনকারী বারবার তার বক্তব্যে ‘সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী’ অর্থাৎ- আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জমি দখলকারী, জমি দখলে নেতৃত্বদানকারী, ফিল্মি স্টাইলে অভিযানকারী, নাগরিকদের অধিকার হরণকারী ইত্যাদি বলে আখ্যায়িত করে আমার মানহানি তথা সিলেট মহানগরবাসীর মানহানি করেছেন।’

‘জনগণের রায়ে নির্বাচিত হয়ে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র- কাউন্সিলর হিসেবে নাগরিকদের সেবা প্রদানই আমাদের দায়িত্ব এবং আমরা আমাদের সাধ্যমত সে চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছি। আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই, শুধু প্রবাসী নয়, সিলেট মহানগরীর কোনো নাগরিকের কোনো রকম ক্ষয়ক্ষতি হোক- এমন কোন কাজ করবো না। লন্ডনে বসে উদ্দেশ্যমূলক এমন সংবাদ সম্মেলন করায় আমি মেয়র ও আমার পরিষদের সকল কাউন্সিলরসহ সিসিকের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কার্মচারীগণ তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। কারণ- মামলা চলাকালীন সময়ে সাব-জুডিস বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করা আইনের পরিপন্থী।’

সংবাদ সম্মেলনের শেষদিকে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ওই জায়গা নিয়ে চলমান মামলার সর্বশেষ অবস্থা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে আদালত নালিশা ২৫ দশমিক ৫০ শতক ভূমির দখল বুঝে নিতে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে রায় প্রদান করেন। আদালতের রায়ে ৬৫ বছর পর চলতি বছরের ১৫ জুলাই নগরীর সোবহানীঘাটের এই জায়গার দখল বুঝে নেয় সিসিক । এদিন ভূমিতে দখলদারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সীমানা চিহ্নিত করে সিসিক কর্তৃপক্ষ। এরপর গত ৫ জুলাই সকালে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী হাকিম ইয়াসমিন নাহার রুমা আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে ভূমি পুনুরুদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন।

উদ্ধার অভিযান পরিদর্শন করেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিসিকের কাউন্সিলরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.