Sylhet Today 24 PRINT

‘বাণিজ্যিক কমিটি’ আখ্যা দিয়ে শান্তিগঞ্জে ছাত্রলীগের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি |  ২৮ অক্টোবর, ২০২১

বছর ছ’মাস ধরে কানাঘুষা চলছে শান্তিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির ঘোষণা নিয়ে। দলের নবীন প্রবীণ নেতা-কর্মীদের চোখ ছিল কমিটির প্রতি। কখন সম্মেলনের তারিখ হবে, ঘোষণা হবে একটি ‘ফ্রুটফুল’ কমিটি, কে কে আসবেন কমিটিতে তা নিয়ে চলছিলো জল্পনা কল্পনা। কিন্তু তা আর হলো না। কোনো রকমের সম্মেলন, অনুষ্ঠান, রাগ-ডাক ছাড়াই  মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দীপঙ্কর কান্তি দে ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান রিপন স্বাক্ষরিত প্যাডে এই উপজেলার ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে সভাপতি করা হয় ছদরুল ইসলামকে ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে নাঈম আহমেদকে।

এক বছর মেয়াদের এ কমিটিতে ছাত্রলীগের অনেক সিনিয়র নেতাকে অবমূল্যায়নের অভিযোগ করেছেন অনেক নেতা। এছাড়াও তাদের দাবি, অপরিচিত, বিবাহিত, চাকুরীজীবী, নিষ্ক্রিয় লোক দ্বারা গঠিত একটি পকেট কমিটি এটি। বিক্ষুব্ধ ও বঞ্চিত নেতারা দাবি করেন, ঢাকায় বসে যে কমিটি করা হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে একটি বাণিজ্যিক কমিটি। মোটা অংকের অর্থ বিনিময়ের মাধ্যমে সক্রিয়, কর্মঠ, রাজপথের লড়াকু মুজিব সৈনিকদের বাদ দিয়ে এ কমিটি দেওয়া হয়েছে।

কমিটি ঘোষণার পর থেকেই ঘোষিত এ  কমিটিতে যেসব নেতাদের আগের পদপদবি থেকে নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে ও যারা বঞ্চিত হয়েছেন তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কমিটি থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। ফেসবুক ঘেঁটে দেখা যায়, আগের কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আল মাহমুদ সোহেল, ছাত্রলীগ নেতা সমীরণ দাস সুবির, ছালেক আহমদ, রায়হান কবির ও সাইফুর রহমান মোয়াজ নিজেদের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করে নতুন পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

এসব ছাড়াও বুধবার (২৭ অক্টোবর) বিকাল ৫টায় শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরে ও পরে সন্ধ্যা ৬টায় পাগলা বাজারে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছেন বিক্ষুব্ধ ও পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দীপঙ্কর কান্তি দে ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান রিপনের নামে ভর্ৎসনা করেন উপস্থিত ছাত্রনেতারা।

এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মনসুর আলম সুজন, সদস্য সচিব রাজন হোসেন, সদ্য সাবেক সভাপতি রয়েল আহমদ, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আল মাহমুদ সোহেল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম (বঞ্চিত), সমীরণ দাস সুবির, এহসান আলম শিপনসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে পাগলা বাজারে সিলেট সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছিলো।

জাহিদুল ইসলাম ও সমীরণ দাস সুবির বলেন, আমরা রাজপথে দিন রাত ছিলাম, এখনো আছি। আমাদেরকে বঞ্চিত করে শান্তিগঞ্জে ছাত্রলীগ হতে পারে না। যারা এ কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন তারা মোটা অংকের টাকা খেয়েছেন। ঘৃণা তাদের প্রতি। অনতিবিলম্বে এ কমিটি বাতিল করতে হবে। না হলে রাজপথে আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দিবে শান্তিগঞ্জ ছাত্রলীগ।

আল মাহমুদ সোহেল বলেন, আগের কমিটিতে আমি সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলাম। এ কমিটিতে আমাকে ৪নং সহ-সভাপতি করা হয়েছে। পদোন্নতির বদলে অবনমন (ডিমোশন) করা হয়েছে। অথচ যাদের কমিটিতে ভাইটাল পদে আনা হয়েছে তারা কেউই কোনোদিন রাজপথে আমাদের চেয়ে বেশি সক্রিয় ছিলেন না। ঢাকার হোটেলে বসে বাণিজ্যিক কমিটি আমরা মানি না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমিটি বাতিল করতে হবে।

মনসুর আলম সুজন ও রয়েল আহমদ বলেন, শান্তিগঞ্জে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার সময় থেকে আমরাই রাজ পথে আছি। উড়ে এসে জোরে বসিনি। আমাদেরকে ‘অন্ধকারে’ রেখে, বঞ্চিত রেখে কোনো কমিটি হতে পারে না। আমরা মানবো না। দিনের আলোতে, সম্মেলন করে নেতা কর্মীদের রায় নিয়ে, আমাদের অভিভাবকদের সম্মতিতে একটি ‘ফ্রুটফুল’ কমিটি দিতে হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ কমিটি বাতিল করতে হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.