Sylhet Today 24 PRINT

ফের ভোটে সেই ‘স্বাধীন মেম্বার’

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ২৫ নভেম্বর, ২০২১

সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু গ্রামে হামলা-ভাঙচুর মামলায় জেল খাটা সেই শহীদুল ইসলাম স্বাধীন ফের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

দিরাইয়ের সরমঙ্গল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্যপদে মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। স্বাধীন এই ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য।

আগামী ২৬ ডিসেম্বর এই ইউনিয়নে নির্বাচন হবে।

নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে স্বাধীন বুধবার বলেন, ‘এলাকার মানুষজন চাইতেছে। তাই আবারও খাড়াইছি।’

শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে গত ১৭ মার্চ সকালে হামলার ঘটনা ঘটে। হেফাজতে ইসলামের সাবেক নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে এক যুবকের স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে মিছিল করে হামলা চালায় হাজারের বেশি মানুষ।

গ্রামের হিন্দুদের অন্তত ৯০টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। ভাঙচুর করা হয় মন্দিরও। এ ঘটনার পর হামলাকারীদের ‘মদদদাতা’ হিসেবে স্বাধীন মেম্বারের নাম আসে। স্বাধীন নোয়াগাঁওয়ের পাশে নাচনি গ্রামের বাসিন্দা। নাচনি গ্রামের অবস্থান দিরাই উপলোর সরমঙ্গল ইউনিয়নে।

হামলার পরদিন স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের করা মামলায় স্বাধীনকে প্রধান আসামি করা হয়। পুলিশের করা মামলায়ও আসামি স্বাধীন।

এই হামলার পরই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান স্বাধীন। দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে গত ১৯ মার্চ মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপর ২১ জুন আদালতের মাধ্যমে জামিনে মুক্তি পান তিনি।

শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বাধীন বলেন, ‘আমি এই হামলায় জড়িত ছিলাম না। তখনকার কোনো ভিডিও ফুটেজ বা ছবিতে আমাকে পাওয়া যাবে না। হামলার পরে ইউএনও এবং ওসি সাহেবকে নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই।’

তাকে ফাঁসানো হয়েছে দাবি করে স্বাধীন বলেন, ‘ওই গ্রামের কয়েকজনের সঙ্গে একটি জলমহাল নিয়ে আমার বিরোধ রয়েছে। সেই বিরোধ থেকেই আমাকে মামলায় ফাঁসানো হয়।’

হামলায় সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় আদালত তাকে জামিন দিয়েছে দাবি করে এই ইউপি সদস্য বলেন, ‘এলাকার মানুষজনও বুঝতে পারছে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। তারা আমার সঙ্গে আছে। এবার বিপুল ভোটে জয়ী হব বলে আশা করছি।’

ভোটের জন্য এবার ফুটবল প্রতীক চেয়েছেন জানিয়ে স্বাধীন বলেন, ‘গত নির্বাচনেও আমি ফুটবল প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছিলাম।’

নোয়াগাঁয়ের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হন রঞ্জনা চৌধুরী। তার ঘর থেকে জিনিসপত্রও লুটপাট করা হয়। তিনি বলেন, ‘যারা হামলা চালিয়েছে তারা সবাই আশপাশের গ্রামের। আমাদেরই প্রতিবেশী। হামলার সময় স্বাধীন মেম্বার উঠানে চেয়ার বসে বিড়ি ফুঁকছিল। আমরা হাওর থেকে সব দেখতে পাচ্ছিলাম।’

আদালত থেকে দণ্ডিত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে প্রার্থী হতে বাধা নেই জানিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘মামলার আসামি হলে প্রার্থী হতে আইনি বাধা নেই। তবে হলফনামায় মামলার তথ্য জানাতে হয়। এসব তথ্য ভোটারদের জানানোর দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। যাতে ভোটাররা সব জেনেবুঝে নিজেদের রায় দিতে পারেন।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.