Sylhet Today 24 PRINT

চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন শাল্লার সেই ঝুমন

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি |  ৩০ নভেম্বর, ২০২১

হেফাজতের সাবেক নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দীর্ঘ ৬ মাস কারাগারে থাকা শাল্লার ঝুমন দাস নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

শাল্লা থানা পুলিশের ‘ওপেন হাউজে ডে’ অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি নিজে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। তবে কোনো রাজনৈতিক ব্যানারে নয় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান তিনি।

এ ব্যাপারে ঝুমন দাস বলেন, ‘এলাকার মানুষ নির্বাচন করার জন্য আমাকে বার বার বলছে। তাই সবাইকে সঙ্গে নিয়েই নির্বাচনে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছি। তবে কোনো দলের হয়ে নয়। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি সবসময়ই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এসেছি। তাই ইউনিয়নের মানুষ চায় আমি নির্বাচন করি।’

ঝুমনের মা নিভা রানী দাস বলেন, ‘আশা করি এলাকাবাসী আমার ছেলেকে ভোটে জয়ী করবে।’

গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ‘শানে রিসালাত সম্মেলন’ নামে একটি সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম। এতে হেফাজতের তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বক্তব্য দেন।

এই সমাবেশের পরদিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন দিরাইয়ের পার্শ্ববর্তী উপজেলা শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের যুবক ঝুমন দাস। স্ট্যাটাসে তিনি মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনেন।

মামুনুলের সমালোচনাকে ইসলামের সমালোচনা বলে এলাকায় প্রচার চালাতে থাকেন তার অনুসারীরা। এতে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা ১৬ মার্চ রাতে ঝুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

পরদিন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর সকালে কয়েক হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করে হামলা চালায় নোয়াগাঁও গ্রামে। তারা ভাঙচুর ও লুটপাট করে ঝুমন দাসের বাড়িসহ হাওরপাড়ের হিন্দু গ্রামটির প্রায় ৯০টি বাড়ি, মন্দির। ঝুমনের স্ত্রী সুইটিকে পিটিয়ে আহত করা হয়।

এরপর ২২ মার্চ ঝুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল করিম।

শাল্লায় হামলার ঘটনায় শাল্লা থানার এসআই আব্দুল করিম, স্থানীয় হাবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল ও ঝুমন দাসের মা নিভা রানী তিনটি মামলা করেন। তিন মামলায় প্রায় ৩ হাজার আসামি। পুলিশ নানা সময়ে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তারা সবাই জামিন পান।

শুধু জামিন পাচ্ছিলেন না ঝুমন দাস। বিচারিক আদালতে কয়েক দফা জামিন নাকচের পর ২৩ সেপ্টম্বার জামিন পান ঝুমন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.