Sylhet Today 24 PRINT

হাকালুকি হাওরের উন্নয়নে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে: পরিবেশমন্ত্রী

বড়লেখা প্রতিনিধি: |  ০৯ জানুয়ারী, ২০২২

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি বলেছেন, ‘এক সময় হাকালুকি হাওরে বাঘ আসত, হাতি আসত। অনেক বন্যপ্রাণী ছিল। বনও ছিল। কিন্তু এখন এগুলো নেই। কারও দোষারোপ করে লাভ নাই। আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে এটা হয়েছে।’

মন্ত্রী শুক্রবার রাত ১১টায় মৌলভীবাজারের বড়লেখার হাকালুকি হাওরের বনবিভাগের বিট কার্যালয় এলাকায় পরিবেশ সচেতনতায় মাছরাঙা প্রকাশন আয়োজিত ‘হাকালুকি ক্যাম্প অ্যাওয়ার্ড’-২০২২ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ রক্ষায় অবদান রাখায় ৪ ব্যক্তিকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে মাছরাঙা প্রকাশন।

তারা হলেন- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফকির আজমল হুদা, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জসিম উদ্দিন আহাম্মদ, বড়লেখা পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী, বড়লেখা উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাকালুকি ক্যাম্প সমন্বয়ক মৃণাল কান্তি দাস। শিক্ষার্থী অনিক দে অন্তুর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন হাকালুকি ক্যাম্পের প্রধান সমন্বয়ক আবুল কাসেম।

বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফকির আজমল হুদা, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জসিম উদ্দিন আহাম্মদ, বড়লেখা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী, বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুন্দর, বড়লেখা পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী, বড়লেখা উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন, বড়লেখা থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার, সাবেক অধ্যক্ষ অরুণ চন্দ্র দাস, তালিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এখলাছুর রহমান, তালিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস প্রমুখ।

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘হাকালুকি হাওরের উন্নয়নের জন্য প্রকল্প নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে। হাকালুকি পারের সকল গ্রামে গ্রাম রক্ষা বাঁধ দেওয়া হবে। সেই বাঁধে গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজ করা হবে। এলাকার লোকজনকে গাছ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেব। তারা দেখবে। অপরিকল্পভাবে কোনো গাছ লাগানো হবে না।’

তিনি বলেন, ‘আরেকটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। হাওরের বিলগুলো ভরাট হয়ে গেছে। এই বছরই কাজ শুরু হবে। হাওরের ৪টি বিল খনন করার জন্য পরিবেশের পক্ষ থেকে অর্থায়ন করেছি। মাধবছাড়া হাকালুকি হাওরে এসে মিলেছে; এটাও ৫ কিলোমিটার খনন করা হবে। জুড়ী এলাকারও কিছু বিল খনন করা হবে। এসব পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আগের চেয়ে হাকালুকিতে মাছ কমে গেছে। তার কারণ আমরা নিজেরাই। বেড় জাল দিয়ে নেট জাল দিয়ে মাছের ডিম পর্যন্ত নিয়ে আসি। এটা বন্ধ করতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। স্থানীয় লোকজনকে সচেতন হতে হবে। পাখি নিধন বন্ধ করতে হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘হাকলুকি হাওরে আগাম বন্যা হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষক। বোরো ফসল তলিয়ে যায়। সারা বছরে একবার ফসল ফলে। এটা হচ্ছে আগাম বন্যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই আগাম বন্যা হচ্ছে। এই আগাম বন্যার হাত থেকে আমরা কী করে হাকালুকি হাওরের মানুষকে বাঁচাতে পারি এই জন্য গবেষকরা গবেষণা করে নতুন ধান বের করেছেন। কম দিনে ধান উঠতে পারি। চৈত্র মাসের মধ্যে ফসল উঠাতে পারলে ফসল আর বিনষ্ট হবে না।’

মন্ত্রী বলেন, ‘হাওরের পরিবেশ রক্ষায় মানুষকে সচেতন করতে মাছরাঙা প্রকাশনার ব্যতিক্রমী এই আয়োজনকে স্বাগত জানাচ্ছি। এটা ভালো উদ্যোগ।’
এর আগে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ক্যাম্পের ম্যাগাজিন নিয়ে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ব্রিফ করেন ক্যাম্পের সহযোগি সমন্বয়ক রাজেশ দেবনাথ ও রিপন দাস। ক্যাম্পের শুরুতে অতিথিদের মাঝে মাস্ক এবং ক্যাম্পের টিশার্ট প্রদান করেন ক্যাম্প সমন্বয়ক জামিদুল ইসলাম নাহিদ, চন্দন দেবনাথ ও অম্লান দাস সৌরভ।

ক্যাম্পে ৩০টি তাবু স্থাপন করা হয়। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৯০ জন পরিবেশপ্রেমী তাঁবুবাস করেন। রাতভর সেখানে চলা বাউল গানের ফাঁকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে মুক্ত আলোচনা করা হয়।

শনিবার সকালে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী চুঙা পিঠা পরিবেশন করা হয়। এছাড়া ক্যাম্পের আশাপাশে যত্রতত্র স্থানে ফেলা পরিবেশনের জন্য ক্ষতিকারক প্লাস্টিক কুড়িয়ে তা পুড়িয়ে ফেলা হয়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.