Sylhet Today 24 PRINT

শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে ছাত্রলীগ নেতাদের চাঁদা দাবি!

সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ১৪ জানুয়ারী, ২০২২

সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ ওঠেছে ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ, তিন শিক্ষকের পদোন্নতি ও বদলি বাতিলের দাবি না মানায় শিক্ষকদের আটকে রেখে চাঁদা দাবি করেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা।

এ ঘটনায় সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈকত চন্দ রিমি (৩৫) ও ছাত্রলীগ নেতা মো. তাওহীদ ইসলামকে (২৭) আসামি করা হয়েছে।

এ ছাড়া মামলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ছাত্রসহ বহিরাগত অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানায় এ মামলা করা হয়। আসামিদের মধ্যে সৈকত চন্দ ও তাওহীদ প্রতিষ্ঠানটির সাবেক শিক্ষার্থী বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সৈকত চন্দ ও তাওহীদ প্রাক্তন শিক্ষার্থী হয়েও সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অজ্ঞাতনামা ছাত্র ও বহিরাগতদের নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সুরমা আবাসিক হোস্টেল দখল করে আধিপত্য বিস্তার করছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা ইনস্টিটিউটের প্রশাসনের ওপর চাপ প্রয়োগ করে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করছিলেন।

গত মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন পলিটেকটিক ইনস্টিটিউটের তিন শিক্ষক অমল কৃষ্ণ চক্রবর্তী, মো. মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী ও মো. গোলাম কিবরিয়াকে পদোন্নতি প্রদান করে বিভিন্ন স্থানে পদায়ন করা হয়। শিক্ষকদের পদোন্নতি ও বদলির আদেশ বাতিলের দাবি নিয়ে গত বুধবার বেলা পৌনে একটার দিকে সৈকত চন্দ ও তাওহীদ প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ও বহিরাগত অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জনকে নিয়ে দুই দলে বিভক্ত হয়ে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ এবং বিভাগীয় প্রধানের কক্ষে যান। অধ্যক্ষ বিষয়টিতে তার কিছু করার নেই, বোর্ডের অধীন পদোন্নতি ও পদায়ন করা হয়েছে জানালে প্রতিষ্ঠানের অজ্ঞাতনামা ছাত্ররা ইনস্টিটিউটের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বিভাগীয় প্রধানের কক্ষে পদোন্নতি ও পদায়নপ্রাপ্ত শিক্ষক অমল কৃষ্ণ চক্রবর্তীকে আটকে রেখে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফয়সল মুফতির কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। খবর পেয়ে ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রিহান উদ্দিন ও প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলমসহ অন্য শিক্ষকেরা অমল কৃষ্ণ চক্রবর্তীকে উদ্ধার করতে গেলে প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন দুই শিক্ষার্থী ও তাঁদের সহযোগীরা গালিগালাজ করেন। এতে শিক্ষকেরা প্রতিবাদ করলে তাঁরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়। পরে চাঁদা দেওয়ার দাবিতে প্রতিষ্ঠানের ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন তাঁরা।

একপর্যায়ে দুপুর সোয়া ১২টা থেকে বেলা সোয়া ২টা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কার্যালয় ও ক্যাম্পাসে প্রবেশপথ অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। পরে বিষয়টি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশকে জানালে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ব্যাপারে জানতে অধ্যক্ষ রিহান উদ্দিনের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে ফোন দেওয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। মামলার বাদী প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলমের ব্যবহৃত মুঠোফোনেও বারবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান তালুকদার বলেন, বুধবার রাতে ইনস্টিটিউটের আবাসিক হলে তল্লাশি চালানো হয়। সে সময় মামলায় উল্লেখিত আসামিসহ বহিরাগত কাউকে পাওয়া যায়নি। মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.