Sylhet Today 24 PRINT

এবার উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে শাবি শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ১৭ জানুয়ারী, ২০২২

পুলিশের হামলা ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পর উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

রোববার রাত ১১ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। রাত সাড়ে ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভে পাঁচশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে।

রাত ৮টার দিকে জরুরী সিন্ডেকট সভা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা ও সোমবার বেলা ১২টার মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদ।

এরআগে সন্ধ্যায় তিনদফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও আন্দোলনকারীরা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখার প্রেক্ষিতে পুলিশের সাথে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছুঁড়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে পুলিশ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন।

শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় সন্ধ্যার পর থেকে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে একদল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের অভিযোগ উপাচার্যের নির্দেশেই পুলিশ হামলা চালিয়েছে।

এই বিক্ষোভ চলাকালেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও হল ছাড়ার নির্দেশনা আসে। এমন নির্দেশনার পরপরই বিক্ষোভ শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের অর্ধশতাধিক এ সময় তারা ‘পরীক্ষা কেন বন্ধ, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘হল কেন বন্ধ, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কেন বন্ধ, প্রশাসন জবাব চাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে শাহপরান হল ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলের কিছু আবাসিক শিক্ষার্থীও এ কর্মসূচিতে যোগ দেন। পরে তারা ক্যাম্পাসে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের দিকে চলে যান।

রাত ৯টার পর বিক্ষোভকারী প্রধান ফটক ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন। এসময় বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরাও এসে যোগ দেন এই বিক্ষোভে। তারা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকেন। রাত সাড়ে ১২টায় এই রিপোর্ট লেখার সময়ও বিক্ষোভ চলছিলো।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সায়েম আহমদ বলেন, উপাচার্যের নির্দেশেই আজকে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়ে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা ও হল ছাড়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। আচমকা হল ছাড়ার নির্দেশে শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে। এছাড়া করো্নার কারণে এমনিতেই শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত তার উপর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষনায় শিক্ষার্থীদের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়বে। আমরা এসব অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত মানি না।

আরেক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মেহরাব হােসেন কায়েস বলেন, আজকের ঘটনাগুলোই প্রমাণ করে এই উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় অযোগ্য। যে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উপর হামলার নির্দেশনা দিতে পারেন তিনি কোনোভাবেই উপাচার্যের পদে থাকতে পারেন না। আমরা তার পদত্যাগ চাই।  

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আলমগীর কবির বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা ও হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সবাইকে সোমবার বেলা ১২টার মধ্যে হল ছাড়তে হবে।

তিনি বলেন, উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীরাই সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগ, হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর করে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত এবং ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ কমিটি নিয়োগের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন করছেন হলের কয়েক শতাধিক ছাত্রী।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.