Sylhet Today 24 PRINT

ব্যবসায়ীকে হুমকি দিয়ে নিয়ে যাওয়া টাকা ফেরত দিলো ডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার |  ১৯ জানুয়ারী, ২০২২

ফাইল ছবি

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের এক ব্যবসায়ীকে হুমকি দিয়ে নিয়ে যাওয়া টাকা ফেরত দিয়েছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গত ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শহরের হবিগঞ্জ সড়কে ওই ব্যবসায়ীর কাছে কালাম নামে এক ব্যক্তি টাকা ফেরত দেন। তবে টাকা দেওয়ার বিষয়টি এই প্রতিবেদকের কাছে অস্বীকার করেন কালাম।

পূর্বা টি হাউজের স্বত্বাধিকারী নারায়ণ সূত্রধর বলেন, গত ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় স্থানীয় আশিদ্রোন ইউনিয়নের স-মিল ব্যবসায়ী কালাম নামের এক ব্যক্তি আমার সাথে দেখা করতে চান, ওইদিন রাত সাড়ে দশটার দিকে শহরের হবিগঞ্জ সড়কে একটি রেস্টুরেন্টের সামনে নিয়ে আমাকে এক লক্ষ টাকা দিয়ে বলেন, আপনাকে আপনার এক লাখ টাকা দিয়ে গেলাম ডিবির সাথে আপনার ঝামেলাটা মিটিয়ে ফেলেন এবং বিষয়টি আপনি কাউকে জানাবেন না।

উল্লেখ্য গত ১২ জানুয়ারি শহরের সাগরদিঘী সড়কের পূর্বা টি হাউজের সত্বাধিকারী নারায়ণ সূত্রধরের কাছ থেকে অবৈধ ও ভেজাল চা পাতা থাকার কথা বলে হুমকি দিয়ে একলক্ষ টাকা নিয়ে যায় জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল।

এনিয়ে গত ১৫ জানুয়ারী সিলেটটুডে ২৪ এ “দোকান সিলগালার হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি, অভিযোগ ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মো কালাম এই প্রতিবেদককে টাকা দেয়ার ব্যাপারটি অস্বীকার করে বলেন আমি নারায়ণকে কোন টাকা দেই নি।আমি প্রতিদিন দোকান বন্ধ করে এমনিতেই ওই রেস্টুরেন্টের সামনে যাই।

এদিকে জেলা গোয়েন্দা শাখার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন শহরতলীর সোনার বাংলা মার্কেটের আরেক ব্যবসায়ী লিটন স্টোরের মালিক লিটন দেবনাথ।

তিনি বলেন, গত ১৫ ডিসেম্বর ডিবি পুলিশ তার জর্দার ফ্যাক্টরিতে যায়। সেখানে গিয়ে তারা মাল জব্দ করে তার নামে মামলা দেয়ার ভয় দেখায়। পরে দুই লক্ষ টাকা দিয়ে তিনি বিষয়টি শেষ করেন।

এদিকে অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দুটি অভিযানে নেতৃত্বে ছিলেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মাজহারুল ইসলাম। এ সময় তার সাথে ছিলেন এএসআই রেজা, কনস্টেবল মোশারফ হোসেন, রাফি ও জীবন। এছাড়া শহরের ১০ টি মসলা মিল থেকে ডিবি পুলিশ ২ হাজার টাকা করে মাসোয়ারা নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের এক মসলা মিল ব্যবসায়ী জানান, পরিছন্নতা নেই এই অভিযোগে প্রায়ই আমাদের মিলে অভিযানে আসে ডিবি পুলিশ, অভিযানে এসে নানান ধরনের হয়রানী করে। এই হয়রানী থেকে রক্ষা পেতে আমাদেরকে নিয়মিত ২ হাজার টাকা মাসোহারা দিতে হয়।

সামগ্রিক বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ বদিউজ্জামান বলেন, টাকা নেয়ার বিষয়টি আমি জানি না। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জর্দা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা একটা ‘মিসটেক’ হয়েছে।

শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী কামাল হোসেন বলেন, ‘টাকা নেয়ার বিষয়টি অনেক ব্যবসায়ী আমাকে জানিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা এখন ডিবি আতঙ্কে আছেন। ডিবি সদস্যরা অভিযানে যাবার আগে আমাদের সাথে নিয়ে গেলে এমন ঘটনা ঘটতো না। এভাবে চলতে থাকলে দোকান বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা  রাস্তায় নেমে আন্দোলন করবে।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.