Sylhet Today 24 PRINT

মাধবপুরে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীর গালে খুন্তির ছ্যাঁকা

মাধবপুর প্রতিনিধি: |  ১৮ মে, ২০২২

হবিগঞ্জের মাধবপুরে যৌতুকের দেড় লাখ টাকা না পেয়ে স্ত্রী মৌসুমী আক্তার (২১) বাম গালে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা ও শরীলের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেছে স্বামী সাইফুল ইসলাম।

রোববার (১৫ মে) তাকে উদ্ধার করে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা করা হয়েছে।

এর আগে যৌতুকের টাকা নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে মৌসুমী আক্তারকে মারপিট করে হাত, পায়ে, পিঠে ও মাথায় আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জকম করে স্বামী ও পরিবারের লোকজন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩ বছর আগে উপজেলার ২ নম্বর চৌমুহনী ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের মিজান মিয়ার মেয়ে মৌসুমী আক্তারের ১১ নম্বর বাঘাসুরা ইউনিয়নের বাঘাসুরা গ্রামের আব্দুল নুরের ছেলে সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে স্বামীর সংসারে সুখেই বসবাস করে আসছেন মৌসুমী। চাকুরির সুবাদে সাইফুল একসময় স্ত্রী, মা, বোনকে নিয়ে নোয়াপাড়া ভাড়া বাসায় উঠে বেশ কিছুদিন যাবত। সাইফুল মৌসুমী দম্পতির ১৮ মাসের রাব্বি নামে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

গত কয়েক মাস ধরে স্বামী, শাশুড়ী ও ননদ দেড় লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছে মৌসুমীকে। গরীব পিতার পক্ষে এ টাকা দিতে অস্বীকার করায় ওইদিন দুপুরে সাইফুল ক্ষিপ্ত হয়ে মৌসুমীকে বেধরক মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে সাইফুল, তার বোন নাইমা খাতুন ও মা বেদেনা খাতুন মিলে মৌসুমীর শরীরের হাত, পা, মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে জখম করে। একসময় মৌসুমীর বাম গালে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেয়। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে ওইদিনই মৌসুমীর ১৮ মাসের শিশু সন্তানসহ বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয় সাইফুল। পিতা মিজান মিয়া মেয়ের করুন অবস্থা দেখে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

গরম খুন্তির ছ্যাঁকায় মৌসুমী গাল ঘা হয়ে ফুলে গেছে। শরীর ব্যথায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।শরীরের অন্যান্য জায়গায়ও আঘাতের ফলে কালচে দাগ হয়ে আছে।

মৌসুমীর বাব মিজান মিয়া বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছে জামাতা সাইফুল। আমার মেয়েকে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়েছে। পার্শ্ববর্তী লোক না গেলে ওরা আমার মেয়েকে মেরেই ফেলতো। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

গুরুতর আহত মৌসুমী আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বিয়ের পর আমাকে প্রায়ই যৌতুকের জন্য মারধর ও নির্যাতন করতো। আমার গরীব বাবার পক্ষে যৌতুক দেয়া সম্ভব ছিলো না। ওইদিন আমার কাছে দেড় লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। আমি এ টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাকে স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ মিলে মারধর করে গালে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.