Sylhet Today 24 PRINT

বিদ্রোহীতে অস্বস্থিতে নৌকার শুকুর

বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা

বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি::  |  ০২ জুন, ২০২২

বিয়ানীবাজার পৌরসভার নির্বাচনের প্রচারণায় সময় বাকি আছে মাত্র ১০ দিন। নির্বাচনে দলীয় বনাম একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে লড়াই জমে উঠছে।

প্রতীক নিয়ে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ছুটছেন ১০ মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী প্রার্থীরা। উন্নয়নের প্রতিশুতি দিয়ে করছেন ভোট প্রার্থনা। তবে ভোটাররা বলছেন ভিন্ন কথা- এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নয়, প্রার্থী সংখ্যা বেশি হওয়ায় ব্যক্তি ইমেজের ওপরেই পড়বে ভোটারদের ভোট।

জানা গেছে, বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন ১০ প্রার্থী। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র মো. আব্দুস শুকুর (নৌকা), জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. সুনাম উদ্দিন (লাঙল) এবং বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আবুল কাশেম (কাস্তে) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এছাড়া মেয়র পদে স্বতন্ত্র সাত প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আহবাব হোসেন সাজু প্রতীক (কম্পিউটার), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ফারুকুল হক (চামচ), প্রভাষক আব্দুস সামাদ আজাদ (হ্যাঙ্গার), মোহাম্মদ অজি উদ্দিন (নারিকেল গাছ) মোহাম্মদ আব্দুস সবুর (মোবাইল ফোন), আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী আব্দুল কুদ্দুছ টিটু (হেলমেট) এবং সাবেক পৌর প্রসাসক তফজ্জুল হোসেন (জগ)।

সরেজমিনে পৌর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই পৌরসভার শহর ও শহরের অলিগলি এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডের পাড়া-মহল্লা জুড়ে ঝুলছে প্রার্থীদের প্রতীক সম্বলিত পোস্টার। সেইসঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে উচ্চ শব্দে প্রচার মাইকিং। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মেয়র প্রার্থীরা চালাচ্ছেন প্রচার-প্রচারণা। গণসংযোগের পাশাপাশি করছেন উঠান বৈঠকও। ভোট চাওয়ার পাশাপাশি ভোটারদের দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। ভোটাররাও তাদের নিয়ে শুরু করেছেন বিচার-বিশ্লেষণ।

প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থক এবং সাধারণ ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, নৌকা প্রতীক ও বর্তমান মেয়র মো. আব্দুস শুকুরের রয়েছে দলের পাশাপাশি ব্যক্তি-জনপ্রিয়তা। তবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুকুল হক, আব্দুল কুদ্দুছ টিট ও আহবাব হোসেন সাজুকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না নেতাকর্মীরা। এক মেয়াদে পৌরসভা পরিচালনা এবং নৌকা প্রতীক পেয়েও এই তিন বিদ্রোহীর কারণে পুরোপুরি স্বস্তি পাচ্ছেন না আব্দুস শুকুর। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুকুল হক ও আব্দুল কুদ্দুছ টিটুর কর্মী সমর্থক ও ভোটারদের মতে, ‘নৌকা কোনো ফ্যাক্টর না’। এমনকি তারা নিজেরা বিদ্রোহী নন, হয়ে উঠেছেন প্রতিবাদী।

তবে আওয়ামীলীগের ঘরের কোন্দ্রলে সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন সাবেক পৌর প্রশাসক তফজ্জুল হোসেন। আওয়ামী বিরোধী ভোট এখন তার দিকে যুকছে বলে তার কর্মী সমর্থকদের দাবী।

বৃহস্পতিবার প্রচারণা কালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মো. আব্দুস শুকুর বলেন, তিনি বিগত পাঁচ বছরে পৌরসভার যে উন্নয়ন করেছি, পৌরবাসী তার ম্ল্যূায়ন করে অবশ্যই তাকে পুনরায় ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করবেন।

মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দীতায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ফারুকুল হক বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে বিয়ানীবাজার পৌরসভাকে দুর্নীতিমুক্ত ও জবাবদিহিতামূলক একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলবেন। পাশাপাশি পৌরবাসীর নাগরিক অধিকার শতভাগ নিশ্চিতকরণ, উন্নয়ন প্রকল্পের সমবন্টনসহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন কার্য সম্পাদন করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি।

সাবেক পৌর প্রশাসক তফজ্জুল হোসেন বলেন, আমি ১৭ বছর পৌরসভা জনগনকে সেবা দিয়ে গেছি। ‘প্রবাসী অধ্যুষিত বিয়ানীবাজার পৌরসভায় যেভাবে উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল তার কিছুই হয়নি। পৌরবাসী গত ৫ বছর নাগরিক সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত ছিল।

বিয়ানীবাজার পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, প্রার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনে বিয়ানীবাজার পৌরসভার ২৭ হাজার ৭শত ৯৩জন ভোটার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোট প্রদান করবেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.