Sylhet Today 24 PRINT

কুশিয়ারায় বাড়ছে পানি, সুরমায় কমছে

সিলেটটুডে ডেস্ক: |  ২২ জুন, ২০২২

ছবি: স্টারমেইল

সিলেটের গোলাপগঞ্জে সুরমার পানি কমতে শুরু করলেও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি বুধবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। বুধবার ভোর থেকে কুশিয়ারা নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক বেয়ে সুরমা নদীতে উপচে পড়ছে। বর্তমানে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে চারখাই থেকে উপজেলার তেরমাইল নামক স্থান পর্যন্ত হাঁটুপানি রয়েছে।

পানি থাকায় সব ধরনের ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি বাস চলাচল করছে না। তবে দু-একটি চললেও যাত্রীসংকট রয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চরম দুর্ভোগ দেখা দিবে পূর্ব সিলেটের জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, কানাইঘাট উপজেলার কয়েক লক্ষাধিক মানুষের।

কয়েক দিনের বন্যায় সুরমা-কুশিয়ারা নদীতীরবর্তী লোকালয়ের লক্ষাধিক মানুষ পানিবিন্দ হয়ে পড়লে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তায় উপজেলার ৩০ হাজার মানুষকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রের আওতায় নেওয়া সম্ভব হলেও অবশিষ্ট মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বন্যাকবলিতরা জানিয়েছেন।

উপজেলার ১৮০টি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৮টিতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে বলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেওয়ান নাজমুল আবেদীন জানিয়েছেন। তাছাড়া ১৮টি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

স্থানীয়রা জানায়, এগুলোর মধ্যে কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধিতে প্লাবিত হয়ে পড়ায় লোকজনকে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ঘরের প্রায় শতাধিক ঘরে নতুন করে পানি ঢুকে পড়ায় লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

বুধবারী বাজার ইউনিয়নের বহর গ্রাম এলাকার বাসিন্দা আবু সাইদ জানান, তাদের এলাকার কয়েকটি গ্রামসহ বানীগ্রাম বাজার, বহরগ্রাম বাজার, বাগিরঘাট বাজার, চন্দরপুর বাজার কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। তাছাড়া, কাদিপুর-মেহেরপুর বাজার, ঢেপুটি বাজার, আছিরগঞ্জ বাজারও পানিতে ছুঁইছুঁই করছে। ভাদেশ্বর মীরগঞ্জ বাজারে সকাল থেকে কমর পর্যন্ত পানি উঠে পড়ায় সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।

জানা গেছে, হাকালুকি হাওর, দামড়ীর হাওর এলাকায় পানি অধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় গোবাদি পশুর খাদ্যসংকটের পাশাপাশি বানবাসি মানুষ মহাবিপদে রয়েছেন। এসব এলাকা যোগাযোগে অনেকটা পিছিয়ে থাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ কার্য বিতরণও সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্যাকবলিত এলাকায় প্রচুর ত্রাণসামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি রান্না করা খাবার পৌঁছে দিলেও বাদেপাশা, শরীফগঞ্জ এলাকায় ত্রাণ তুলনামূলক কম হচ্ছে।

পনাইরচক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার পাল জানান, আমার প্রতিষ্ঠানের নিচতলা ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। তবুও দ্বিতীয় তলায় বন্যাকবলিত কেউ আশ্রয় নিতে চাইলে যাতে আশ্রয় নিতে পারে সেজন্য বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

অপরদিকে দুদিন ধরে সুরমার পানি অনেকটা কমলেও আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা লোকজন এখনই তাদের নিজ নিজ বাসাবাড়িতে ফিরতে পারছেন না। অনেকের কাচা-আধাকাচা বাড়ি থাকায় বেড়া ধসে পড়েছে। তাছাড়া বানের পানিতে ভেসে আসা পলিতে রাস্তা-ঘাট কর্দমাক্ত এবং পানিতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে প্রকট সংকট দেখা দিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম কবির জানান, সুরমার পানি কমতে শুরু করেছে, অন্যদিকে কুশিয়ারায় স্থিতিশীল রয়েছে। তবে কিছু কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.