Sylhet Today 24 PRINT

স্থলজ পরিবেশে চাষ হবে সামুদ্রিক শৈবাল

শাবি গবেষকদের চাষপ্রযুক্তি উন্নয়ন

সিলেটটুডে ডেস্ক: |  ১১ আগস্ট, ২০২২

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের অনেক দেশে সামুদ্রিক শৈবাল এখন মানবখাদ্য, প্রাণিখাদ্য। ওষুধ, সার, রাসায়নিক পণ্য, জ্বালানি, প্রসাধনী ও কাগজ তৈরির কাঁচামাল হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে এ শৈবাল। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে কেবল শীতকালে ৪ থেকে ৫ মাস এ শৈবাল পাওয়া যায়। এ কারণে যথেষ্ট চাহিদা থাকা সত্ত্বেও জোগান দেওয়া সম্ভব হয় না। এ শৈবাল যাতে সারাবছর পাওয়া যায় এবং স্থলজ পরিবেশে চাষ করা যায়, সে জন্য কিছু চাষ প্রযুক্তি উন্নয়ন করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) দুই গবেষক। তারা কৃত্রিমভাবে চারা উৎপাদনের মাধ্যমে স্থলজ পরিবেশে সামুদ্রিক শৈবাল উৎপাদনে সফলতা পেয়েছেন।- খবর সমকালের

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র, কক্সবাজার পরিচালিত একটি গবেষণা প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রথমবার 'সী উইড সীডলিং প্রোডাকশন থ্রো বায়োটেকনোলজি: হ্যাচারি টু ফিল্ড অ্যাসেসমেন্ট' শিরোনামে শাবির জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ফারুক মিয়া ও অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম এ গবেষণা সম্পন্ন করেন। প্রকল্প পরিচালক ছিলেন মোহাম্মদ মহিদুল ইসলাম।

অধ্যাপক ফারুক মিয়া বলেন, শিল্পজাত পণ্য উৎপাদনে কাঁচামাল হিসেবে প্রচুর সামুদ্রিক শৈবাল প্রয়োজন। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে চার-পাঁচ মাসে তা যথেষ্ট পাওয়া যায় না। এ জন্য সারাবছর শৈবাল উৎপাদন প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে কেবল কৃত্রিম পরিবেশে এ শৈবালের চারা উৎপাদন ও স্থলজ পরিবেশে চাষের মাধ্যমে চাহিদা পূরণ সম্ভব। তিনি বলেন, তারা ১১ প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবাল- উলভা লেক্টোকা, উলভা ইন্টেস্টাইনালিস, হাইড্রোক্লেথ্রাস ক্লেথ্রাটাস, সারগেসাম অর্নোডিয়েনাম, কলারপা রেসিমোসা, এন্টেরোমর্ফা ক্লেথ্রাটা, হিপ্নিয়া ভেলেন্টেই, গ্রেসিলারিয়া ভেরোকোসা, গ্রেসিলারিয়া কর্টিকাটা, পাদিনা বরিয়ানা ও কন্টোমেনিয়া সাইনোসা নিয়ে গবেষণা করে বিশেষ প্রক্রিয়ায় চারা উৎপাদন করেছেন। চারাগুলো নিয়ে বড় পরিসরে স্থলজ পরিবেশে চাষের পদ্ধতি উন্নয়নে গবেষণা চালিয়েছেন।

অধ্যাপক ফারুক বলেন, তারা ভিন্ন পরিবেশে দুটি ল্যাবের মাধ্যমে গবেষণা চালান। সামুদ্রিক পানি ব্যবহার করে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামুদ্রিক মৎস্য প্রযুক্তি কেন্দ্র এবং শাবির জিইবি বিভাগে কৃত্রিমভাবে গবেষণা পরিচালনা করেন। উভয় পরিবেশেই সামুদ্রিক শৈবালের উৎপাদন সম্ভব। তবে স্বাভাবিকভাবেই সামুদ্রিক পানি এ শৈবালের স্থলজ চাষে অধিক উপযোগী। তিনি জানান, ১১ প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবালের মধ্যে তিনটি- উলভা লেক্টোকা, উলভা ইন্টেস্টাইনালিস ও গ্রেসিলারিয়া কর্টিকাটা শৈবালের চারা কৃত্রিমভাবে উৎপাদন করে স্থলজ পরিবেশে সফল চাষ প্রযুক্তির উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে, যা দ্রুতই শৈবাল চাষিদের মধ্যে হস্তান্তর করা সম্ভব।

এ ছাড়া কলারপা রেসিমোসা শৈবালের চারা উৎপাদন ও স্থলজ পরিবেশে চাষ নিয়ে গবেষণা চলছে। অধ্যাপক ফারুক জানান, তারা আশাবাদী খুব শিগগির এ প্রজাতিরও চারা উৎপাদন ও চাষে সাফল্য আসবে এবং এটি সারাবছরই চাষ করা যাবে। এ গবেষক মনে করেন, বাকি প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবালও স্থলজ পরিবেশে উৎপাদন সম্ভব। তবে এর জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.