বিশ্বনাথ প্রতিনিধি | ১১ আগস্ট, ২০২২
সম্প্রতি সিলেটের বিশ্বনাথের দেওকলস ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য আলেয়া বেগমের বিরুদ্ধে বানভাসিদের ত্রাণের চাল বিক্রির অভিযোগ তুলেন কদর আলী নামে তারই এক প্রতিবেশী। তিনি অবন মালাকার নামের এক বানভাসির কাছে এক হাজার টাকায় ৫০ কেজির এক বস্তা চাল বিক্রি করেছেন মর্মে ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগ তদন্তের দায়িত্বপান উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহবুব আলম সরকার। তিনি গত ১ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত জাহানের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে চাল বিক্রির অভিযোগ মিথ্যা বলে উল্লেখ করেন।
এদিকে অভিযোগকারী কদর আলীর শাস্তি চেয়ে গত ৭ আগস্ট ইউএনও বরাবরে পাল্টা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আলেয়া বেগম। তিনি কালীজুরি গ্রামের সোনাফর আলীর স্ত্রী। অভিযোগকারী কদর আলী একই গ্রামের আব্দুল বারিকের ছেলে এবং অবন মালাকারও একই গ্রামের মৃত সুরেন্দ্র মালাকারের ছেলে।
অন্যদিকে অবন মালাকার এ বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। এতে তিনি বলেছেন ইউপি সদস্য আলেয়া বেগম ও কদর আলীর মধ্যে দীর্ঘদিনের পূর্ব শত্রুতা রয়েছে। তারই জেরে ইউপি সদস্যকে ফাঁসাতে কদর আলী তাকে (অবন মালাকার) ব্যবহার করে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, বাড়ির রাস্তা, জমিজমা এবং ইউপি নির্বাচন নিয়ে আলেয়া বেগমের সঙ্গে পূর্ব বিরোধ রয়েছে কদর আলীর। এরই জেরে আলেয়া বেগমকে ফাঁসাতে গত ১৮ জুলাই তাকে অভিযুক্ত করে কদর আলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন।
তদন্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলম সরকার এ প্রতিবেদককে বলেন, চাল বিক্রির কোন সত্যতা পাওযা যায়নি। কদর আলীর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
অবন মালাকারের স্ত্রী জোছনা মালাকার এ প্রতিবেদককে বলেন, অজান্তে তার স্বামীর নাম ব্যবহার করে পূর্ব শত্রুতার জেরে মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়েছেন কদর আলী। বরং ২ হাজার টাকা উৎকোচের চুক্তি করে ঘর মেরামতের জন্য সরকারি ১০ হাজার টাকা পাইয়ে দেবার কথা বলে কদর তার স্বামীকে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
ইউপি সদস্য আলেয়া বেগম বলেন, মিথ্যা অভিযোগে তিনি সমাজে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন। তাই কদর আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
কদর আলী বলেন, তার বিরুদ্ধে অবন মালাকার কিংবা তার স্ত্রীর আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। তিনি অবন মালাকারের চাল কেনার স্বীকারোক্তিতেই অভিযোগ দিয়েছিলেন।
দেওকলস ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খায়রুল আমীন আজাদ এ প্রতিবেদককে বলেন, ভবিষ্যতে কারও বিরুদ্ধে যাতে মিথ্যা কোন অভিযোগ দেওয়া না হয়, সেজন্য পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী।
বিষয়টি নজরে রয়েছে জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত জাহান জানান, এবিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।