Sylhet Today 24 PRINT

লাউয়াছড়ায় মারা যাওয়া টিকওক গাছের নমুনা সংগ্রহে বন গবেষণা ইনস্টিটিউট

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি |  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

মৌলভীবাজার কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে বিরল প্রজাতির বৃক্ষ আফ্রিকান টিকওকের মারা যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করেছেন বাংলাদেশ বন গবেষণা ইন্সটিটিউটের গবেষকেরা। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকাল পর্যন্ত লাউয়াছড়া বনের আফ্রিকান টিকওক গাছটির বিভিন্ন উপাদান নমুনা সংগ্রহ করেন।

গবেষক দলে ছিলেন বাংলাদেশ বন গবেষণা ইন্সটিটিউটের বনরক্ষণ বিভাগের গবেষণা কর্মকর্তা মো.জিল্লুর রহমান এবং মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের গবেষণা কর্মকর্তা আব্দুল রাশেদ মোল্লা। সম্প্রতি লাউয়াছড়ায় থাকা দেশের একমাত্র টিকওক গাছটি মারা যায়।

বন রক্ষণ বিভাগের গবেষণা কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান বলেন, গাছটির মারা যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশ বন গবেষণা ইন্সটিটিউট এর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক নির্দেশনায় আজ আমরা গাছটি কি কারণে মারা গেছে তার নমুনা সংগ্রহের জন্য সরেজমিনে পরিদর্শনে এসেছি।

তিনি আরও বলেন, গাছটি থেকে আমরা বিভিন্ন উপাদান নমুনা সংগ্রহ করে সাথে করে নিয়ে যাচ্ছি। কোন গাছ মারা যাওয়ার কারণ কোন রোগ হতে পারে,পোকার কারণ হতে পারে, মাইক্রোঅর্গানিজম অথবা মৃত্তিকা জনিত কোন সমস্যা হতে পারে। তা একক ভাবে কোন উপাদান দায়ী নাও হতে পারে। তাৎক্ষণিক ভাবে আমরা বলতে পারব না গাছটি কি কারণে মারা গিয়েছে। আজ আমরা গাছটির গোড়ার মাটি, মাটির নিচের অংশের মরা শিকড়, কাণ্ডের উপরের অংশের মরা ছাল বাকল বিভিন্ন উপাদানের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছি। এগুলো আমাদের প্রতিষ্ঠানের ল্যাবে পরীক্ষাগারে গবেষণা ও বিশ্লেষণ করব, এরপর যা ফলাফল আসবে তখন বলা যাবে গাছটি মারা যাওয়ার কারণ কি ছিল। এরপর আমরা কর্তৃপক্ষকে পুর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করব।

গবেষণা দলে আসা মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের গবেষণা কর্মকর্তা আব্দুল রাশেদ মোল্লা বলেন, আফ্রিকান টিকওক আমাদের দেশের বিরল প্রজাতির একটি বৃক্ষ। গাছটি কি কারণে মারা গেল তা আগে বলা যাবেনা। আজ আমরা মৃত্তিকা নমুনা গুলো গাছটি থেকে সংগ্রহ করেছি। পরীক্ষা করার পর এর কারণ জানা যাবে। তিনি বলেন যার জন্ম আছে, মৃত্যুও আছে গাছেরও জীবন রয়েছে। তার আয়ুস্কালের বিষয়ও রয়েছে। এমনও তো হতে পারে গাছটির আয়ুস্কাল ফুরিয়ে গেছে।

তিনি আরও জানান, গাছটি এখনও আংশিক বেঁচে আছে। তবে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম এর কারণ গাছটির নিচের খাবার সংগ্রহের রুট গুলো সে রুট গুলো পচে গেছে গাছটির নিচের অংশের মাটি খুঁড়ে তাই দেখতে পেলাম। এজন্য গাছটি খাবার সংগ্রহ করতে পারছেনা।

বাংলাদেশ বন গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড. রফিকুল হায়দার বলেন, এই গাছের গোড়ায় বছরখানেক আগে মাটি দেওয়া হয়েছিল। তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, মাটির সঙ্গে আসা কোনো জীবাণুর কারণে গাছটি মারা গেছে।

রফিকুল হায়দার আরও বলেন, তারা গত বছর ও এ বছরে গাছটি থেকে নমুনা নিয়ে গিয়েছিলেন। এগুলো তাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন টিস্যু কালচার ও অন্য মাধ্যমে গাছের বংশবৃদ্ধির। যদি ১০টি চারাও বেড়ে ওঠে, তাহলে একটি বিদেশি গাছ হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে। এ রকম দুটি গাছ ব্রিটিশ ফরেস্টার নিয়ে এসেছিল। দুটি গাছই মারা গেছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.