Sylhet Today 24 PRINT

সামাজিক অবস্থান নিয়ে দ্বন্দ্ব, বিয়ে করে ঘরছাড়া নবদম্পতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার |  ২৮ মার্চ, ২০২৩

সামাজিক অবস্থান নিয়ে দুই সমাজের মধ্যে দ্বন্দ্বের বলি হচ্ছেন এক নবদম্পত্তি।  সমাজপতিদের না জানিয়ে বিয়ে করায় নব বিবাহিত স্বামী স্ত্রী নিজ বাড়িতে যেতে পারছেন না। বিয়ে গ্রামের মুরব্বিদের দ্বিমত থাকায় পাত্র ও পাত্রী পক্ষের কেউই এই দম্পতিকে ঘরে তুলতে পারছেন না।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের সদর উপজেলার ইউএনও বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন কনে পলি আক্তার।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আপার কাগাবালা ইউনিয়নের উত্তর কাগাবলা গ্রামের ইমন মিয়ার সাথে গত ১৯ মার্চ সাতবাক গ্রামের পলি আক্তারের বিয়ে হয়। ধর্মীয় বিধান মেনে চার লক্ষ টাকা কাবিন নির্ধারণ করে নিকাহনামা রেজিষ্টারের মাধ্যমে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের কথা এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর বাধা হয়ে দাড়ান স্থানীয় মুরব্বিরা। গত ২৫ মার্চ পলি আক্তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এমনটি জানিয়ে পোস্ট দেয়ার পর বিষয়টি আলোচনায় আসে।

পলি আক্তার বলেন, আমার মা শিল্পি বেগম একজন সহজ সরল মহিলা। তিনি আমার বিয়ের বিষয়ে আমার দুঃসম্পর্কের আত্মীয় ও এলাকার মুরব্বিদের জানালে তারা আমার বিয়েকে অস্বীকার করে। বরং আমার স্বামী আমাকে অপহরণ-ধর্ষণ করেছেন বলে মিথ্যা মামলা প্রদানের জন্য আমার মাকে কুমন্ত্রণা প্রদান করে যাচ্ছেন। আমার স্বামীর আত্মীয় স্বজনকেও বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে তারা। এমনকি তারা আমার স্বামীকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে বলে আমার মাকে জানিয়েছে।

তিনি বলেন, বিয়ের পর থেকে আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি। গ্রামের মুড়লদের হুমকির ধমকির কারণে আমি ও আমার স্বামী উভয়ে একসাথে বর্তমানে আত্মগোপনে আছি। আমি আমার স্বামীর বাড়িতে যেতে চাই। আমাদের সুন্দর জীবন দেয়ার জন্য প্রশাসনসহ সকলের সাহায্য চাচ্ছি। আমি পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

আপার কাগাবলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি খলকু মিয়া (৫৫), আগিহুন গ্রামের রুজিনা আক্তার (৪০), সাতবাক গ্রামের বশির আহমদ সুনু মিয়া (৪০)কে অভিযুক্ত করে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পলি আক্তার।

পলি আক্তারের স্বামী ইমন মিয়া বলেন, আমি গত ১৯ মার্চ পলি আক্তারকে বিয়ে করেছি। বিয়ে করার পর আমাদের পাশের গ্রাম ও বাজারের কিছু মুড়লদের বাধায় পড়েছি। তারা আমাকে ও আমার পরিবারকে বিভিন্ন রকম হুমকি দিয়ে আসছে। যার কারণে আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে ঘরে উঠতে পারছি না।

অভিযুক্ত আপার কাগাবলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি খলকু মিয়া বলেন, এখানে দুইটি আলাদা সমাজ আছে। বিয়ে হলে তাদের মধ্যে ঝামেলা আসবে। কনের পক্ষ আমার কাছে এসেছিল আমি তাদের সান্তনা দিয়েছি। আমি কাউকে হুমকি ধমকি এসব কিছু দেইনি। কেউ এর প্রমাণ দিতে পারবে না।

আপার কাগাবলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ইমন মোস্তফা বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। এখানে সামাজিক বাঁধা আছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। কেউ এখনো এই ঘটনা নিয়ে কোন সংঘাতে জড়ায়নি।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শরীফ উদ্দিন বলেন, ওই দম্পতি আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি তাদেরকে থানায় গিয়ে আইনের আশ্রয় নেয়ার জন্য বলেছি। আমরা তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবো।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.