ইয়াকুব শাহরিয়ার, শান্তিগঞ্জ | ৩১ মার্চ, ২০২৩
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার বাজারগুলোতে এখনও পুরোদমে জমে উঠেনি ইফতার সামগ্রীর বাজার। অন্যান্য বছর ৮ রোজায় ইফতার সামগ্রীর দোকানগুলোতে যে পরিমাণ ইফতারি বিক্রি হতো এ বছর বিক্রি হচ্ছে তার অর্ধেক। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন আগামী দু’চার দিন অর্থাৎ রোববার-মঙ্গলবার নাগাদ বাজার জমজমাট হয়ে উঠবে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা বাজার, আক্তাপাড়া মিনাবাজার, নোয়াখালী বাজার, শান্তিগঞ্জ বাজার ও পাথারিয়া বাজারসহ উপজেলার একাধিক বাজার ঘুরে দেখা যায়, ইফতার সামগ্রীর দোকানে সাধারণত মিষ্টি, নিমকি, জিলাপি, খাজা, ছোলা, পিঁয়াজি, বেগুনি, পোলাও, আলুর চপ ইত্যাদি খাদ্য সামগ্রী বিক্রি হয়। মূলত: এসব পণ্যের সাধারণ খুচরা ক্রেতার চেয়ে পাইকারি ক্রেতার পরিমাণ বেশি। আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে পাঠানোর জন্য এসব ইফতার সামগ্রী বেশি বিক্রি হয়। দলবেঁধে, দু’চার-পাঁচজন এক সাথে হয়ে এসব ইফতার সামগ্রী কিনতে আসেন ক্রেতারা।
দোকানদাররা জানান, অন্যান্য বছর আট রোজায় ইফতার সামগ্রীর বিক্রির পরিমাণ খুব বেশি থাকতো। যে পরিমাণ মিষ্টি, নিমকি, জিলাপি আর খাজা বিক্রি করতাম তার অর্ধেক বিক্রি হচ্ছে। এখনো জমজমাট বিক্রি শুরু হয়নি। তবে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সময় থেকে বিক্রি বাড়বে।
দোকানিরা জানান, প্রতি কেজি সাদা মিষ্টি বিক্রি হচ্ছে ২শ ৫০ টাকায়, মিক্সড (সাদা-লাল) ২শ ২০টাকা, খাজা ২শ টাকা, নিমকি ১শ ৪০ থেকে ১শ ৬০ টাকা, জিলাপি ১শ ৫০ টাকা, ছোলা ২শ টাকা, পিঁয়াজি ২শ টাকা, বেগুনি ও আলুচপ প্রতি পিচ ৫ টাকা।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইফতার সামগ্রীর পণ্যের দাম বেশি। ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে ইফতার পাঠানোর জন্য লক্ষ্য নিয়ে বাড়ি থেকে বের হই সে পরিমাণ ইফতার ক্রয় করা যায় না। পণ্যের দাম খুব বেশি।
বীরগাঁও নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মোবারক হোসেন। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন ছয় বছর আগে। এখনো নিজের ভালো লাগা থেকে মেয়ের বাড়িতে প্রতি বছর সামর্থ্য অনুযায়ী ইফতার নিয়ে যান তিনি। পাগলা বাজারের দেব মিষ্টি ঘরে এসেছেন ইফতার ক্রয় করতে। তার সাথে ৮-১০ বছরের মাহমুদুল নামের এক নাতি। ১ কেজি মিষ্টি, ৪ কেজি জিলাপি, ৩ কেজি নিমকি, ১ কেজি খাজা, ১ কেজি ছোলা ও কিছু পিঁয়াজির অর্ডার করেছেন তিনি। কথা হয় তার সাথে। তিনি জানান, ইচ্ছা ছিলো আরও বেশি করে ইফতারি দেওয়ার। কিন্তু পণ্যের যে পরিমাণ দাম, কম কম কিনে নিচ্ছি। এটা আমার ভালা লাগা থেকেই দেই।
পাগলা বাজারের মা রেস্টুরেন্ট এন্ড মিষ্টি ঘরের স্বত্বাধিকারী সুজাতুল ইসলাম সুজা ও দেব মিষ্টি ঘরের পরিচালক কেশব দেব বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ক্রেতাও কম, বিক্রিও কম। তবে, আমরা আশাবাদী, রোব-সোমবার নাগাদ অর্থাৎ দশ রোজার পর বিক্রির পরিমাণ বাড়বে। আমরা চেষ্টা করছি যত কম দামে পারা তত কম দামে গ্রাহকদের সেবা দিতে। ময়দা, তেল, চিনি, দুধসহ সব ধরণের পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়ে আমাদেরকেও দাম কিছু বাড়াতে হচ্ছে।