নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৭ জুন, ২০২৩
বিয়ের পিঁড়িতে বসা হল না সৌরভের। এর আগেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি। বুধবার (৭ জুন) কাজে যাওয়ার সময় সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় নাজিরবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান নির্মাণ শ্রমিক সৌরভ মিয়া।
এদিকে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বাবা সিরাজ মিয়ার সঙ্গে হাসপাতালে আসেন নিহত সৌরভের মা আমিনা বেগম। হাসপাতালে পৌঁছে ছেলের লাশ দেখতে পেয়ে শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েন মা আমিনা। ট্রাকের সঙ্গে পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে ছেলে সৌরভের মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি।
তিনি জানান, এক সপ্তাহ আগে বেড়ানোর কথা বলে সুনামগঞ্জের দিরাই থেকে সিলেটে এসেছিলেন সৌরভ মিয়া। পরে বাড়ির লোকদের না জানিয়েই পরিচিতদের সঙ্গে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে লেগে যান। এ দিকে বাড়িতে তার বিয়ের জন্য পাত্রী পছন্দ করে রেখেছিলেন তিনি।
ছেলের মৃত্যু শোকে মুহ্যমান আমিনা বেগম কেঁদে কেঁদে বারবারই একইকথা বলছিলেন, আমার পুতরে (ছেলে) বিয়া করাইতে আসলাম, মেয়ে দেখি রাখছিলাম গো। আমার পুতের কিতা হইল, তোমরা আমার পুতরে আনি দেও।
এ সময় শোকাহত এই মায়ের কান্না-আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে সিলেটের ওসমানী হাসপাতালের পরিবেশ। তাকে ধরে রাখা স্বজনরাও সৌরভের বিভিন্ন কথা বলে-বলে কান্না করছেন। পাশে বসেই কান্না করছেন বাবা সিরাজ মিয়াও।
সিরাজ মিয়া ও আমিনা বেগমের বাড়ি দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে। তাদের ছেলে সৌরভ মিয়া বেড়াতে এসে সিলেট নগরীর আম্বরখানা এলাকায় পরিচিতদের সঙ্গে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে যুক্ত হয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার ভোরে উঠে ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারে যাওয়ার জন্য পিকআপে উঠেন সৌরভসহ ৩০ জন নির্মাণ শ্রমিক। পথে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দক্ষিণ সুরমায় নাজিরবাজার এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মালবাহী একটি ট্রাকের সঙ্গে তাদের বহনকারী পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে সৌরভসহ ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১২ জন।