নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৭ জুন, ২০২৩
আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২০ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছিলেন বিহীত গুপ্ত চৌধুরী বাবলা। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে সব ভোটারের দ্বারে দ্বারে যেতে পারবেন না বলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
বুধবার (৭ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বাবলা এ ঘোষণা দেন। এসময় তিনি ২০ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও ‘অধিকতর যোগ্য’ প্রার্থী আজাদুর রহমানকে ভোট দিয়ে ফের বিজয়ী করার আহ্বান জানান।
২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২ জুন প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল। তারও পাঁচদিন পর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন বাবলা।
বুধবার লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন- ‘দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলায় আমি কখনো আদর্শচ্যুত হইনি। কোনো লোভ-লালসা কিংবা অনৈতিকতায় নিজেকে বিক্রি করিনি। কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ার পেছনেও আমার কোনো ব্যক্তিস্বার্থ নেই। নির্বাচিত হলে প্রিয় ওয়ার্ড ও ওয়ার্ডের মানুষের কল্যাণ এবং উন্নয়নে নিজেকে সঁপে দেওয়ার মানসিকতায় প্রার্থী হয়েছিলাম। কিন্তু ব্যক্তিগত ও পারিবারিক নানা সমস্যার কারণে আমি নির্বাচনী প্রস্তুতি পুরোপুরি নিতে পারিনি। একজন প্রার্থী হিসেবে উচিত প্রত্যেক ভোটারের কাছে যাওয়া, তাদের কাছে ভোট প্রার্থনা করা। কিন্তু এই স্বল্প সময়ের মধ্যে সেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে না পারায় আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। আমি জানি প্রস্তুতি ছাড়াও নির্বাচন করলে আমি বিজয়ী হবো। কিন্তু ভোটারদের কাছে না গিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হলে সেটা হবে স্বার্থপরের মতো কাজ। আমি বিশ্বাস করি ভোট হচ্ছে ভোটারদের আমানত। সেই আমানত ভোটারদের কাছ থেকে চেয়ে নিতে হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে সবার কাছে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।’
বাবলা আরও বলেন- ‘আমার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে আমার প্রিয় ওয়ার্ডবাসী মারাত্মকভাবে মর্মাহত হবেন। তাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হবে। তারপরও আমি বলতে চাই, আপনারা অত্যন্ত এই ভেবে স্বস্তি পেতে পারেন আপনাদের বাবলা কোন চাপ কিংবা লোভে পড়ে নয়, নীতি-নৈতিকতার প্রশ্নে আপোষহীন থেকে এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশাকরি আমার প্রাণপ্রিয় ওয়ার্ডবাসী আমাকে ভুল বুঝবেন না।’
বিহীত গুপ্ত চৌধুরী বাবলা ওয়ার্ডবাসীর উদ্দেশে বলেন- ‘সিলেট নগরীর ঐতিহ্যবাহী এলাকা ২০নং ওয়ার্ড। আমরা এই ওয়ার্ডের গর্বিত বাসিন্দা। তাই আমাদের সবার উচিত আমাদের ভোটাধিকার সুচিন্তিতভাবে প্রয়োগ করা। একটি উন্নত অগ্রসরমান নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ ওয়ার্ড বিনির্মাণের লক্ষ্যে আমাদের উচিত এমন একজনকে নির্বাচিত করা- যার রাজনৈতিক ও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। আমাদের ওয়ার্ডে প্রার্থী হওয়া ৩জনকেই আমি ব্যক্তিগতভাবে ভালো করে চিনি। তাদের মধ্যে আমার কাছে বর্তমান কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদকেই বেশি যোগ্য মনে হয়। তার হাত ধরে ২০নং ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নসহ নাগরিক সুযোগ-সুবিধা যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তা তার সমালোচকরাও অস্বীকার করতে পারবেন না। আপনারাও বর্তমান কাউন্সিলর আজাদুর রহমানকে যোগ্যতার বাটখারায় অধিকতর যোগ্য মনে করলে তার উপর আস্থা রাখতে পারেন। তবে আজাদুর রহমানেরও উচিত আগামীতে তিনি আরও বড় পরিসরে চিন্তা করা।’
তিনি বলেন- ‘কয়েক বছর আগেও যারা এই ওয়ার্ডে উদ্বাস্তু হিসেবে পরিচিত ছিল, তাদের কেউ জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলে নিশ্চয় আমাদের ওয়ার্ডের মানসম্মান অক্ষুন্ন থাকবে না। ঐতিহ্যের ২০নং ওয়ার্ডের আকাশে নেমে আসবে কালো মেঘের ছায়া। গেল কয়েক বছর আগে যেভাবে গোপালটিলার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জায়গা দখলের চেষ্টা হয়েছিল, সেভাবে ওয়ার্ডজুড়ে দখল আর লুটপাটের রাজত্ব কায়েম হবে। তাই আমাদেরকে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও সবসময় ওয়ার্ডবাসীর পাশে থাকবেন বলে জানান বিহীত গুপ্ত চৌধুরী বাবলা।