Sylhet Today 24 PRINT

ইসির ভুলে এনআইডি কার্ডে পিংকু হয়ে গেলেন মনি রানী

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ২৮ মার্চ, ২০২৪

ছবি: সংগৃহীত

পিংকু বিশ্বাস মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি ২০২০ সালে নতুন ভোটার হন। একই বছর স্মার্ট এনআইডি কার্ড পান। কিন্তু স্মার্ট কার্ড হাতে পেয়েই বিস্মিত হন তিনি। কারণ স্মার্ট কার্ডে তার ছবির পাশে নামের জায়গায় মনি রানী বিশ্বাস লেখা। এমনকি মা-বাবার নামও ভিন্ন।

স্থানীয় নির্বাচন অফিসের লোকজন পিংকু বিশ্বাসের হাতে যে স্মার্ট এনআইডি কার্ড (নম্বর ৬৯১২২৭৯৩৭৬) হস্তান্তর করে তাতে ‘পিংকু বিশ্বাসের ছবি ও স্বাক্ষর ব্যতীত সব তথ্য মনি রানী বিশ্বাস (যার পৃথক এনআইডি নম্বর ৩৭৬২১১৮৬১৪) নামে এক নারীর। তাত্ক্ষণিক পিংকু বিশ্বাস বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রতিবাদ করেন। কিন্তু নির্বাচন অফিসের লোকজনের সংশোধন করে দেওয়ার আশ্বাসে ভুল কার্ডটিই গ্রহণ করেন।

এখন ভুলে ভরা এই স্মার্ট কার্ড নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন পিংকু বিশ্বাস ও তার পরিবার। প্রয়োজনীয় কোনো কাজেই ব্যবহার করতে পারেন না এনআইডি। উলটো প্রতিনিয়ত নানা হয়রানি, বিড়ম্বনা ও বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। বন্ধ হয়ে গেছে পড়াশোনা।

বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পেতে প্রায় তিন বছর আগে তথ্য সংশোধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেন পিংকু বিশ্বাস। তবে উলটো তার ভোগান্তি বেড়েছে। সংশোধন করতে গিয়ে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র জমা দেওয়ার পরও গত প্রায় তিন বছর ধরে স্থানীয় বড়লেখা উপজেলা নির্বাচন অফিস, মৌলভীবাজার জেলা নির্বাচন অফিস, সিলেট আঞ্চলিক কার্যালয় কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। কিন্তু স্মার্ট কার্ড সংশোধন হয়নি। সব শেষ চলতি বছরের ৪ মার্চ সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুল হালিম খান পিংকু বিশ্বাসের আবেদনটি জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বরাবর পাঠান। পাশাপাশি সহকারী পরিচালকের (সংশোধন ও প্রতিস্থাপন) দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠি পাঠান। এরপর কার্ড সংশোধনের জন্য শুনানিতে অংশ নিতে পিংকু বিশ্বাস ঢাকায় নির্বাচন কমিশনে তিন বার আসেন। কিন্তু কোনোবারই শুনানি হয়নি।

ইসি সচিবালয়ে পিংকু বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘সংশোধনের আবেদনের পর নির্বাচন অফিস সংশ্লিষ্টরা যে সমস্ত কাগজ চেয়েছেন, সব দিয়েছি। আদালতের মাধ্যমে এফিডেভিট, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একের পর এক প্রত্যয়ন। তবুও সংশোধন হয়নি। বড়লেখা-মৌলভীবাজার-সিলেট অফিসে দৌড়াদৌড়ি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। গত প্রায় তিন বছরে কার্ড সংশোধনের জন্য ঘুরতে ঘুরতে প্রয়োজনীয় কাজ ও যাতায়াত বাবত প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়ে গেছে। জানি না, আর কত পরীক্ষা দিলে কার্ড সংশোধন হবে।’

শুধু পিংকু বিশ্বাসই নয়, এমন অভিযোগ স্মার্ট এনআইডি কার্ড পাওয়া অসংখ্য মানুষের। তারা বলছেন, আগের এনআইডি কার্ডে ঠিক থাকলেও নাম, পিতার নাম কিংবা ঠিকানায় ভুল মিলছে স্মার্ট কার্ডে। আবার অনেকেই নিয়ম মেনে সংশোধন করার পরও আগের ভুলই থেকে যাচ্ছে তাদের স্মার্ট কার্ডে। এতে ভোগান্তি আরো বাড়ছে তাদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব ও এনআইডির মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। এইমাত্র আমি জানলাম।’ দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।-খবর ইত্তেফাকের

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.