Sylhet Today 24 PRINT

শিলাবৃষ্টিতে কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ!

জাহিদ উদ্দিন, গোলাপগঞ্জ  |  ১৪ এপ্রিল, ২০২৪

গোলাপগঞ্জে প্রাকৃতিক দুর্যোগ শিলাবৃষ্টির কারণে অনেকেই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। গত ৩১ মার্চ রাতের ভয়াবহ শিলাবৃষ্টিতে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

হঠাৎ করে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপাকে পড়ে গেছেন অনেক নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত লোকজন। ধারদেনা করে যারা ঘরের টিন লাগাতে চাচ্ছেন এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দিয়েছে টিনের দাম। সেই সাথে ভ্যান ও লেগুনা চালকরাও এই বিপদের সময়েও তাদের ভাড়া দুই থেকে তিন গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

সেই সাথে দেখা দিয়েছে মিস্ত্রি সংকট। সবার মিস্ত্রির প্রয়োজন হওয়ায় মিস্ত্রিরাও তাদের মজুরি বাড়িয়ে দিয়েছে। এক এক জন মিস্ত্রিকে রোজ প্রতি মজুরি দিতে হচ্ছে ১৫শ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ যেন তাদের সকলের পৌষ মাস আর শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বনাশ।

শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী পৌর এলাকার মখদ্দছ আলী জানান, কিছু টাকা ধারদেনা করে টিন কিনতে এসে দেখি আগের তুলনায় টিনের দাম বানপ্রতি ১ হাজার থেকে ১৫শ টাকা বেড়ে গেছে। টিন কিনে ভ্যানচালক আনতে গিয়ে অবাক হয়েছি। যে জায়গার তারা ২০০ টাকায় যেত সেখানে সুযোগে ভাড়া বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করে দিয়েছে। এখন বাধ্য হয়েই বেশি ভাড়ায় টিন বাড়িতে নিতে হচ্ছে। এই চরম বিপদে সবাই সুযোগ নিচ্ছে।

ফুলবাড়ি ইউনিয়নের কায়স্থগ্রামের পারভেজ আহমদ জানান, হঠাৎ করে শিলাবৃষ্টি হওয়ায় মিস্ত্রি সংকট দেখা দিয়েছে। যাদের কিছু সামর্থ্য আছে বা যারা কিছু সাহায্য সহযোগিতা পেয়ে কিছু টিন সংগ্রহ করেছে তারা মিস্ত্রির জন্য টিন লাগাতে পারছেন না। মিস্ত্রিরা যেখানে বেশি টাকা রোজ পাচ্ছেন যেখানে তারা টিন লাগাচ্ছেন। গরিবরা পড়েছেন মহা বিপদে।

আমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান কামরান হোসেন বলেন, এই বিপদে যারা সুযোগ নিয়ে টিনের দাম বাড়িতে দিয়েছে, যারা টিন লাগাতে মজুরি বেশি নিচ্ছে তাদের মনুষ্যত্ব নেই। তারা মানুষের পর্যায়ে পড়ে না। এই বিপদে তারা এগিয়ে আসার কথা ছিল কিন্তু সুযোগে তারা মানুষের পকেট কাটতেছে।

তিনি আরও বলেন, আমার আমুড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড। একটা টিনের ঘর বাকি নেই যে চাল ফুটো হয়নি। সবাই অনেক মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মানুষের এই কষ্টের মাঝে যারাই পকেট ভারী করছেন তাদের মহান আল্লাহ তালা ছাড় দেবেন না।

এদিকে কোন বিক্রেতা যাতে বেশি দামে টিন বিক্রি করতে পারে এজন্য মাঠে সক্রিয় ছিলো প্রশাসন। উপজেলার বিভিন্ন টিনের দোকানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।

গোলাপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, আমরা সব সময় বাজার মনিটরিং করছি। বিশেষ করে টিন ব্যবসায়ী যারা রয়েছেন তাদের দোকানগুলোতে অভিযান চালিয়েছি। দোকানদারদের সাথে কথা বলে ও কাগজপত্র দেখে জানা যায়, তারা সিলেটের যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে টিন ক্রয় করতো তারা বেশি দামে টিন বিক্রি করছে। এজন্য তারাও বেশি দামে এনে টিন বিক্রি করতে হয়েছে। আমরা এসব কাগজপত্র সিলেটের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছি। এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.