নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৭ নভেম্বর, ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত ।
মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌর শহরের উত্তর চৌমুহনীতে রেলওয়ের লিজকৃত জমিতে কয়েকজনের পাকা স্থাপনা নির্মাণকে কেন্দ্র করে ট্রাক পরিবহন শ্রমিকরা প্রায় তিন ঘণ্টা কুলাউড়া-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে পৌর প্রধান সড়কে কয়েকশ হালকা, ভারী ও দূরপাল্লার যানবাহন আটকা পড়ে দূরপাল্লার যাত্রী, পথচারী, ব্যবসায়ী ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সসহ সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি হয়। পরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় থানা পুলিশ সড়ক থেকে প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
সরেজমিনে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বড়লেখা পৌর শহরের উত্তর চৌমুহনী এলাকায় প্রায় ১৫ বছর আগে রেলওয়ের পরিত্যক্ত ভূমি ভরাট করে উপজেলা ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন পাকা টিনসেট ঘর নির্মাণ করে কার্যালয় ব্যবহার করে আসছেন। সম্প্রতি রেলওয়ের ওই জমি নিজেরে লিজকৃত দাবি করে মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে জাকারিয়া আহমদ, ব্যবসায়ী হারুনুর রশীদ, গোলজার আহমদ ফকু, নুরুল আমীনসহ কয়েকজন শ্রমিক সমিতির কার্যালয়ের উত্তর ও পশ্চিম পাশে পাকা দোকান নির্মাণ শুরু করেন। শ্রমিকদের বাধায় কাজ বন্ধ থাকলেও বৃহস্পতিবার রাতে কয়েক ফুট ইটের গাঁথুনি দেয়ায় শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শ্রমিকরা কুলাউড়া-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের উত্তর চৌমুহনী ও খাদ্যগুদাম এলাকার অংশে ট্রাক আড়াআড়ি রেখে সড়ক অবরোধ করেন। এতে তিন ঘণ্টা ধরে উত্তর দিক ও দক্ষিণ দিক থেকে আসা শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুপুর ১টায় সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশ সড়ক ক্লিয়ার করে দিলে ভুক্তভোগীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে।
ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাইফুর রহমান খলকু বলেন, “১৫ বছর ধরে আমরা রেলওয়ের নিচু জমি ভরাট করে কার্যালয় ব্যবহার করছি। ২০০৮ সালেও তারা স্থাপনা করার চেষ্টা করলে বাধা দেই। এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। বৃহস্পতিবার রাতে আমাদের কার্যালয়ের পেছন ও উত্তর পাশে স্থাপনা তোলা হয়েছে—যেকোনো সময় কার্যালয় ভেঙে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে। পুলিশের কোনো সহযোগিতা না পেয়ে আমরা সড়ক অবরোধ করেছি।”
অন্যদিকে মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে জাকারিয়া আহমদ ও ব্যবসায়ী হারুনুর রশীদ জানান, “রেলওয়ে থেকে বাণিজ্যিক লিজ নিয়ে ১৫ থেকে ১৬ বছর আগে দোকানঘরের ফাউন্ডেশন ও লিন্টার দিয়েছি। নিয়মিত খাজনাও দিচ্ছি। বৈধভাবেই আমরা লিজের জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করছি।”
বড়লেখা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, “অবরোধের কারণে মানুষের চরম ভোগান্তি হচ্ছিল। শ্রমিক নেতাদের অনুরোধ করেও তারা ট্রাক সরায়নি। জনদুর্ভোগ লাঘবে সেনাবাহিনীর সহায়তায় সড়ক ক্লিয়ার করা হয়েছে।”