Sylhet Today 24 PRINT

সিলেটে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনার অনুষ্ঠানেও বিবাদে বিএনপি

মহানগর বিএনপির সভাপতি পদ নিয়ে বিরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ০২ ডিসেম্বর, ২০২৫

সিলেট খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনার করে অনুষ্টানেও বিরোধে জড়িয়েছেন বিএইপর দুই পক্ষের নেতারা। সোমবার সিলেট মহানগর বিএনপির নির্বাচিত সভাপতি নাসিম হোসাইন ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর অনুসারীরা এ বিরোধে জড়ান।

জানায় যায়, সোমবার দুপুরে নগরীর কাজিটুলার মক্তবগলি এতিমখানায় নাসিম হোসাইনের আয়োজনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নগরীর কাজিটুলার মক্তবে এতিমদের নিয়ে দোয়া ও দুপুরের খাওয়ানোর আয়োজন করেন। এই আয়োজনের খবর পেয়ে অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে গিয়ে হাজির হন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।

নাসিম অনুসরীদের অভিযোগ, এ আয়োজনে গিয়ে কয়েকজন ব্যানার খুলে নেন।এবং মহানগর বিএনপির নাম ব্যবহার করে অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন তুলেন।


অপরদেকে বিএনপির আরেকপক্ষের অভিযোগ, অনুষ্ঠানে কয়েস লোদী হাজির হওয়ার পরপরই নাসিম হোসাইন ও তার সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীরা দ্রুত অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে চলে যান।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাতে রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আগে মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসিম হোসেইনের দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হয়েছিল। আবেদনের প্রেক্ষিতে তার পদের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু নাসিমের কোনো পদ স্থগিত করেনি বিএনপি। বিষয়টি জানার পর বৃহস্পতিবার রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে নতুন আরেকটি বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়, ভুলবশত সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসেইনের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তবে তার দলীয় পদ স্থগিত ছিল না।

এ অবস্থায় নাসিম হোসেইন সভাপতি দাবি করছেন। তবে কয়েস লোদী অনুসারীরা দাবি করছেন মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে নাসিম হোসাইনকে রাখাই হয়নি। ফলে তিনি সাবেক সভাপতি, বর্তমান কমিটির কেউ নয়।

এ নিয়ে মহানগর বিএনপিতে নতুন করে দুজনের বিবাদ তৈরি হয়। সোমবার সেই বিবাদটি এতিমখানায় গিয়ে গড়াল।

এ ব্যাপারে নাসিম হোসাইন বলেন, ‘আমি সভাপতি ছিলাম, এখনো আছি। কারণ আমার পদে এখনো কাউকে দেওয়া হয়নি। আমরা মহানগর বিএনপি থেকে দেশনেত্রীর (খালেদা জিয়া) সুস্থতার জন্য দোয়া ও এতিম বাচ্চাদের খাবারের ব্যবস্থা করি। আমাদের নির্ধারিত অনুষ্ঠানে কয়েস লোদী এসে বিশৃঙ্খলা করেন। তবে আমরা এই বিশৃঙ্খলায় না জড়িয়ে শিরনি বিতরণ করে চলে আসি। নেত্রীর এই কঠিন সময় কেন এই বিশৃঙ্খলা করলেন তিনি সেটা ভালো বলতে পারবেন।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কয়েস লোদী বলেন, ‘আমি ওই অনুষ্ঠানে ছিলাম না। শেষ মুহূর্তে শিরনি বিতরনের সময় গিয়েছিলাম। উনি (নাসিম হোসাইন) কেন বিশৃঙ্খলার কথা বলছেন সেটা আমি জানি না।’

কয়েস লোদী বলেন, ‘মহানগর বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব দল আমাকে দিয়েছে। উনার (নাসিম হোসাইন) পদ নিয়ে দল থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। দল থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হবে আমি সেভাবেই কাজ করব।’

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ১০ মার্চ কাউন্সিলরদের ভোটে মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে নাসিম হোসেইন, সাধারণ সম্পাদক পদে ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সৈয়দ সাফেক মাহবুব নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে বিদেশে চলে যান নাসিম হোসেইন। ওই বছরের ১ আগস্ট কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে কেন্দ্র থেকে ৪ নভেম্বর নাসিম হোসেইনকে বাদ দিয়ে সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করে ১৭০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে কয়েস লোদী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
✉ sylhettoday24@gmail.com ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.