Sylhet Today 24 PRINT

আল হারামাইন হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসা অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

সিলেটের আল হারামাইন হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠেছে।

এমন অভিযোগ তুলেছেন চিকিৎসক নুরিয়া জাহান কেয়া।

প্রথমে ফেইসবুক লাইভে এসে ভুল চিকিৎসায় তার বাবার মৃত্যু অভিযোগ তুলেন কেয়া। পরে সংবাদ সম্মেলন করেও এমন অভিযোগ জানান।

এরপর সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয়ে একই অভিযোগ দেন ডা. কেয়া।

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয় এবং ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে আল-হারামাইন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তদন্ত চলমান থাকায় মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এর আগে শনিবার (২৯ নভেম্বর) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন ওসমানীনগরের সাদিপুর ইব্রাহিমপুরের বাসিন্দা ডা. নুরিয়া জাহান কেয়া।

সম্মেলনে তিনি বলেন, তার পিতা ৬৯ বছর বয়সী বেদার আহমেদকে ভুল ইনসুলিন ডোজ দেওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।

হাসপাতাল থেকে দেয়া মৃত্যুর সার্টিফিকেটেও সত্য গোপন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

লিখিত বক্তব্যে ওই চিকিৎসক জানান, তার পিতা পন্টাইন ইনফার্কশন থেকে সুস্থতার দিকে যাচ্ছিলেন। নর্থ-ইস্ট ও মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সম্পূর্ণ স্থিতিশীল অবস্থায় ছিলেন। মাউন্ট এডোরা থেকে বাসায় যাওয়ার পরদিন বমি হয় এবং কাশি বেড়ে যায়। তাই আল হারামাইন হাসপাতালে ডা. রাহাত আমিন চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে ভর্তি করা হয়।

ডা. কেয়া অভিযোগ করে বলেন, আল হারামাইনে ভর্তির সময় তার বাবার খাওয়া-দাওয়া স্বাভাবিক ছিল। সে সময় এনজি করা লাগেনি। ১৩ নভেম্বর সকালে এফবিএস ছিল ৭.১। তিনি তার বোনকে বলেছিলেন ওইদিন সকালে সিস্টারকে বলতে যাতে তার বাবাকে ইনসুলিন না দেন। কিন্তু এফবিএস ৭.১ হওয়া পরও নার্স কাউকে না জিজ্ঞেস করেই ১৬ ইউনিট ইনসুলিন দিয়ে দেয়। কোনো ডাক্তারকে না জানিয়ে ও রোগীর অবস্থার মূল্যায়ন না করেই ইনসুলিন দেয়ার পর এটাই নিয়ম বলে জানায় ওই নার্স।

ডা. কেয়া জানান, ইনসুলিন দেওয়ার পর আরবিএস নেমে যায় ৩.১-এ। এরপর নার্স চেক করলেও বিষয়টি আমাদেরকে অবগত করা হয়নি কিংবা কোনো ডাক্তারকেও জানানো হয়েছে কি-না আমরা জানি না। তবে এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তার বোন একজন মেডিকেল অফিসারকে বিষয়টি জানালে তখন আরবিএস চেক করে ডেক্সট্রোজ দেওয়া হয়। পরদিন ভোর ৪টায় হ্যালোপেরিডল দেওয়া হয় কোনো মনিটরিং ছাড়াই। শেষ মুহূর্তে ভুল পদ্ধতিতে সাকশন করা হয়। পালস্ অক্সিমিটার ০২ চেক না করেই এবং অক্সিজেন না দিয়ে এমনকি সেচুরেশন না দেখে, এয়ারওয়ে সুরক্ষিত না করেই নার্স সাকশন করে। সাথে একজন মেডিকেল অফিসার থাকা সত্ত্বেও তিনি ০২ লেভেল দেখার দরকার মনে করেননি। ১০ সেকেন্ডের মধ্যে সাইনোসিস দেখা দেয়। তখন নার্স দৌড়ে গিয়ে পালস্ অক্সিমিটার নিয়ে আসে। কিন্তু এর আগেই আমার পিতা মারা যান।’

তিনি বলেন, মৃত্যুর সার্টিফিকেটে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার উল্লেখ নেই। আরবিএস ৩.১ থাকা সত্ত্বেও ডেথ সার্টিফিকেটে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার উল্লেখ করা হয়নি।’ এটি সত্য গোপন করার চেষ্টা বলে উল্লেখ করেন ডা. কেয়া।

সংবাদ সম্মেলনে ডা. নুরিয়া জাহান কেয়া বলেন, ‘নিজে একজন চিকিৎসক হয়েও হেরে গেলাম এই অবহেলার কাছে।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
✉ sylhettoday24@gmail.com ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.