Sylhet Today 24 PRINT

দরপতনে সিলেটে পাউন্ড বিনিময়ে ধস, প্রভাব পড়েছে ঈদ বাজারে

দেবব্রত চৌধুরী লিটন |  ২৭ জুন, ২০১৬

যুক্তরাজ্যে পাউন্ডের দরপতনের প্রভাব পড়েছে সিলেটে। যুক্তরাজ্য প্রবাসী অঞ্চল হিসেবে পরিচিত সিলেটে গত কয়েকদিনে কমে গেছে পাউন্ডের বিনিময়। সিলেটের মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর প্রভাব পড়েছে ঈদের বাজারেও।

এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ সভাপতি হাছিন আহমদ সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পাউন্ডের দরপতনের কারনে অনেকেই পাউন্ড ভাঙ্গাতে চাচ্ছেন না। এতে করে স্থানীয় মুদ্রা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। এ কারণে এবারের ঈদ বাজারে ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ ব্যবসা করতে পারছেন না।

তিনি বলেন, অন্যান্য বছরগুলোতে জুলাই মাসের ১৫ তারিখের পর সাধারনত প্রবাসীরা দেশে আসেন। এবারের ঈদ ১৫ তারিখের আগে হওয়ার কারনে প্রবাসীরা দেশে আসতে পারেননি। এর প্রভাবও পড়েছে ঈদের কেনাকাটায়।

তবে সিলেটের বিভিন্ন ব্যাংক সূত্রে ভিন্ন তথ্য জানা গেছে। এবার ব্যাংকিং চ্যানেলে গত বছরের চেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা।

তবে মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবসার সাথে যুক্ত একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, সিলেটের প্রবাসীদের অর্থের একটা বড় অংশ ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে বিভিন্ন পন্থায় এসে থাকে। এসব অর্থ আসা গত কয়েকদিন ধরে একেবারে কমে গেছে বলে জানিয়েছেন তারা। ব্যাংকের চাইতে বাইরে মুদ্রার বিনিময় হার বেশি পাওয়া যায় বলেও জানান তারা।

জানা যায়, সিলেট জেলায় অনুমোদনপ্রাপ্ত বৈদেশিক মূদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৩টি। এর মধ্যে দরগাগেইট সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখার নিচে সুরমা সুপার মার্কেটে রয়েছে ৭টি। বাকি ৬টির মধ্যে দক্ষিণ সুরমার ভার্থখলায় ২টি এবং বন্দরবাজার মধুবন সুপার মার্কেট, করিমউল্লাহ মার্কেট, জিন্দাবাজার ইদ্রিস মার্কেট ও আম্বরখানায় একটি করে প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া অনুমোদনহীন আরো শতাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে নগরীতে।

আম্বরখানাস্থ সোনালী ব্যাংক ভবনের নীচতলায় অবস্থিত একাধিক মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত বছর ঈদ মৌসুমে প্রতিদিন তাদের লেনদেন হতো ৪ থেকে ৬ লাখ টাকা। তবে পাউণ্ডের দাম কমায় ও রেমিটেন্স কম আসায় চলতি সপ্তাহে প্রতিদিন লেনদেন হচ্ছে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা।

ব্যবসায়ীরা জানান, রোববার সিলেটে পাউন্ডের বিনিময়ে টাকার মূল্য ছিলো ১০৬/১০৭ টাকা। এক সপ্তাহ আগে পাউন্ড বিনিময় হয়েছে ১১৭/১১৮ টাকায়। ব্রিটেনের গণভোটে ইইউ ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টিই চূড়ান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাউন্ডের মূল্য কমে যায়।

আম্বরখানাস্থ সোনালী ব্যাংক ভবনের নীচতলায় অবস্থিত আলিফ মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপক হেলাল আহমদ সিলেটটুডে টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পাউন্ডের দাম কমায় বাজারে প্রভাব পড়েছে। এতে করে মুদ্রা বিনিময় একদম কমে গেছে। অন্য ঈদগুলোর তুলনায় খোলা বাজারে মুদ্রা বিনিময়ের হার বহুলাংশে কমে গেছে বলে জানান তিনি।

একই ভবনের জাহান মানি এক্সচেঞ্জ এর ব্যবস্থাপক দেবাশিষ চক্রবর্তী বলেন, গত বছরের তুলনায় মুদ্রাবিনিময়ের হার ৬০ শতাংশ কমে যাওয়ায় এবার মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে এর প্রভাব পড়েছে। ফলে এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীরা পড়েছেন লোকসানের মুখে। প্রবাসীদের দেশে কম আসাকেও এর অন্যতম কারন বলে মনে করেন তিনি।

তবে পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের সিলেটের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক আহমেদ এনায়েত লস্কর সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিগত ২০১৪ সালের জুন মাস থেকে ২০১৫ সালের মে মাস পর্যন্ত সিলেট বিভাগে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন  ৬০৮ কোটি টাকা। আর জুন ২০১৫ থেকে মে ২০১৬ পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন মোট ৬৫০ কোটি টাকা। সে হিসেবে প্রবাসীদের দেশে পাঠানো টাকার পরিমাণ বেড়েছে।  

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.