Sylhet Today 24 PRINT

শহীদ মিনার ভাঙচুর ও হত্যা মামলার আসামী হলেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র!

ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও কয়েস লোদি নিজেও একাধিক মামলার আসামি। কয়েস লোদির ক্ষেত্রে আইন অনুসরণ করা হয়নি বলে অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক |  ০৭ জানুয়ারী, ২০১৫

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সিটি কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদি। তিনি ছিলেন প্যানেল মেয়র-১ এবং সিটির ৪ নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলর।



সাবেক অর্থমন্ত্রি শাহ কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি হওয়ার কারণে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে তাঁর পদ থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আইন (সিটি করপোরেশন) ২০০৯ এর ধারা ১২ এর ১ উপধারানুযায়ী বরখাস্ত করার পর কয়েস লোদিকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়।



৭ জানুয়ারি বুধবার স্থানিয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব সরজ উমার নাথ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে কয়েস লোদিকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে নিয়োগ দান করা হয়। তিনি অন্তবর্তিকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন করবেন এবং প্রয়োজনীয় প্রটোকল পাবেন।



এদিকে সিসিকের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও কয়েস লোদি নিজেও একাধিক মামলার আসামি। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখে সিলেট কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার ভাঙচুর মামলার আসামি তিনি। এই মামলার অভিযুক্ত হিসেবে তিনি জেলও খেটেছেন এবং বর্তমানে জামিনে আছেন।



উল্লেখ্য, সিসিক মেয়র আরিফের গ্রেফতারের আগে ভারপ্রাপ্ত মেয়র পদ নিয়ে সিটি কাউন্সিলরদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। প্যানেল মেয়র-১ এবং প্যানেল মেয়র-২ এই দুই প্রার্থিদের মধ্যকার দ্বন্দ্বে সে সময়ে বিভক্ত হয়ে পড়েন সিটি কাউন্সিলবৃন্দ। প্যানেল মেয়র-২ সালেহ আহমেদ চৌধুরী আরিফের গ্রেফতারের অব্যবহিত পর দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও সেখানে মন্ত্রণালয়ের কোন নির্দেশনা ছিলনা। কয়েস লোদির সমর্থনে দশ কাউন্সিলরের গোপন বৈঠক মিডিয়ায় প্রকাশ হলে সিলেট মহানগরীতে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। 


এদিকে শুধু শহীদ মিনার ভাঙচুর মামলার আসামীই শুধু নন, কয়েস লোদি হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি। আদালতে গৃহিত হওয়া চার্জশীটের মধ্যে আসামি হওয়া সত্বেও সে অভিযোগ আমলে নেয়নি স্থানিয় সরকার মন্ত্রণালয়। 


আদালতে দায়ের হওয়া ৩৫৪ নম্বর এবং ৩৫৫ অভিযোগপত্রে যথাক্রমে ২৬ ও ২৭ নম্বর আসামি কয়েস লোদি। হত্যা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় প্রায় বছরখানেক আগে তাকে আসামি করে এ দুই মামলায় সম্পূরকসহ তিনটি অভিযোগপত্র (নম্বর- ৩৫৪, ৩৫৫ ও ৩৫৫-ক) আদালতে দাখিল করা হয়। এই মামলায় কয়েস লোদি কিছুদিন কারাভোগও করেন। আদালত অভিযোগপত্রগুলো গৃহীত হয়। মামলা দু’টি মহানগর ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। 



৩৫৫ নং চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি বিকেল ৩টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হামলা-ভাঙচুর করা হয়। এদিন হামলাকারীরা চৌহাট্টা পয়েন্টে পুলিশের পিকআপ, লেগুনা ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগসহ ব্যাংকের বুথে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এঘটনায় পুলিশসহ আহত হন অনেকে। হামলাকারীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে মোস্তফা মোর্শেদ নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। এ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে ৮৪ জনকে আসামি করা হয়। এরমধ্যে নগরীর হাউজিং এস্টেট ১০১-১০২ নম্বর বাসার এমইউ আহমেদ লোদির ছেলে কয়েস লোদি হচ্ছেন ২৭ নম্বর আসামি। 




এছাড়া ২০১৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সিলেটে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগেরর ঘটনায় কোতয়ালি মডেল থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনে (ধারা-১৬(২)/২৫-ঘ) মামলা দায়ের করেন এসআই কমর উদ্দিন। একই বছরের ৩১ ডিসেম্বরের এই প্রাক্তন উপ পরিদর্শক (এসআই) নারায়ণ দত্ত বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৬(২)/২৫-ঘ ধারায় অভিযোগপত্র (নং-৩৫৪) দায়ের করেন। এই অভিযোগপত্রে কয়েস লোদি হচ্ছেন ২৬ নম্বর আসামি। 



যে অভিযোগে আরিফুল হক চৌধুরীকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল সে একই অভিযোগে অভিযুক্ত থাকার পরেও কয়েস লোদি কীভাবে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে নিয়োগ পান এই আলোচনায় মূখর সিলেট মহানগরী। 

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.