Sylhet Today 24 PRINT

ওসমানীনগরে শিক্ষিকাকে প্রত্যাহারের দাবিতে ফের শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন

ওসমানীনগর প্রতিনিধি |  ১৬ মে, ২০১৭

সিলেটের ওসমানীনগরে অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষার্থীদের সাথে অসদাচরণ করার অভিযোগে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌসি বেগমের প্রত্যাহারের দাবিতে ফের রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিন দিন ধরে উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউপির নিজ করনসী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন অব্যাহত রেখেছে।

অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফেরদৌসি বেগমকে বিদ্যালয় থেকে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ক্লাস বর্জন অব্যাহত থাকবে বলেও অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির একাধিক সদস্যদের নিকট থেকে জানা গেছে। ইতিমধ্যে ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর ঐ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ প্রদান করা হলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

উপজেলা শিক্ষা অফিস, ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, ২ মার্চ বিনা অনুমতিতে একজন মহিলা অভিভাবক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌসির কক্ষে প্রবেশ করায় তার সাথে অসদাচরণ করেন শিক্ষিকা ফেরদৌসি বেগম। ঘটনার সময় বিদ্যালয়ে মাসিক সভা চলছিল। এই অভিভাবক তাৎক্ষণিক উপস্থিত ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের কাছে নালিশ করেন।

কমিটির সদস্যরা বিষয়টি শিক্ষিকার নিকট জানতে চাইলে তাদের সাথেও অসদাচরণ করেন ঐ শিক্ষিকা। একপর্যায়ে তিনি পুলিশও ডেকে আনেন। এর জেরে ম্যানেজিং কমিটি, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ৪ মার্চ থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত প্রথম দফায় বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ২৮২ জন শিক্ষার্থী স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। এর প্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে ৭ মার্চ থেকে দীর্ঘ দুই মাসের ছুটি প্রদান ও ঐ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা পুনরায় ক্লাসে ফিরে আসে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ফেরদৌসি বেগমকে প্রত্যাহার না করায় ও ৮ মে শিক্ষিকা ছুটি শেষে বিদ্যালয়ে যোগদান করায় ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ফের ১৪ মে থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন অব্যাহত রেখেছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে অন্য দিকে ২৮২ জন শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটছে।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় শিক্ষার্থী শূন্য শ্রেণি কক্ষ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সহকারী শিক্ষিকা গত তিন দিন ধরে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জনের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

নিজ করনসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি মন্নান বকস শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিক্ষিকাকে বিদ্যালয় থেকে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ক্লাস বর্জন অব্যাহত থাকবে।

বালাগঞ্জ উপজেলার নবাগত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রকিব ভূঁইয়ার নিকট নিজ করনসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি। এ ব্যাপারে কিছু জানি না পূর্বের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন বাবুর সাথে যোগাযোগ করেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রতন চন্দ্র সরকার নিজ করনসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তিন দিন ধরে ক্লাস বর্জনের বিষয়টি জানেন না বলে জানান। তিনি আরো বলেন, শিক্ষিকা ফেরদৌসির বিষয়টি তদন্ত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট রিপোর্ট প্রেরণ করেছি। আশা করি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূরুল ইসলামের ব্যক্তিগত মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.