Sylhet Today 24 PRINT

টানা বর্ষণে প্লাবিত নবীগঞ্জ, পানিবন্দি সহস্রাধিক পরিবার

মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ |  ১৯ জুন, ২০১৭

গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম আবারো প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় সহস্রাধিক পরিবার। কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ওই এলাকার বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আউশ ধান ও বিভিন্ন জাতের সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ঝড়-বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত হয়েছে বহু কাঁচা ঘর-বাড়ি।

বৃষ্টির পানি ঘরে প্রবেশ করায় অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাৎক্ষনিকভাবে বেড়ি বাঁধ নির্মাণ না দিলে কুশিয়ারার করাল ঘ্রাসে গ্রামগুলো বিলীন হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।



প্লাবিত গ্রামগুলো ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি হওয়ায় নবীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীতে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নদীর তীরবর্তী ও কুশিয়ারা ডাইকের বাইরের অংশে দীঘলবাক, কসবা, চরগাঁও, মাধবপুর, মতুরাপুর, রাধাপুরসহ ৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মানুষের বসতঘরে পানি প্রবেশ করায় পানিবন্দি হয়ে প্রায় সহস্রাধিক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অনেকেই নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন, আবার অনেকে সাপের আতঙ্কে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।
 
অন্যদিকে, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কুশিয়ারা ডাইক এর বেশ কয়েকটি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। যে কোন সময় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ কুশিয়ারা ডাইক ভেঙে যাওয়ার আশংকায় রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। বিশেষ করে দীঘলবাক বাজারে অন্তত শতাধিক দোকান পানিবন্দি অবস্থায় আছে। দোকানে পানি থাকায় নেই ক্রেতা। এমনকি বর্ষা মৌসুমে বাধ্য হয়ে দোকান বন্ধ রাখতে হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি টানা বর্ষণের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ।



অকাল বন্যায় অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কিন্তু কোন চেয়ারম্যান, মেম্বার অথবা জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোন ধরণের ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। যদিও কয়েকদিন পূর্বে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিভিন্ন টিভি চ্যানেল এবং জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশের পর প্রায় ৩০০ পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছিল উপজেলা প্রশাসন।

এদিকে, পবিত্র রমজান মাসে অনেক বাড়ি-ঘরে পানি ওঠায় ইফতার ও সেহরীর সময় তারা ঠিক মতো রান্না করতে পারছেন না। কোন উপায় না পেয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে গিয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। আর যাদের অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, তারা অনেকটা কষ্ট করে পানিবন্দি অবস্থায়ই বসবাস করছেন। দিন যায় যেমন তেমন, রাত হলে সাপসহ নানা আতংকে থাকেন তারা। বিশেষ করে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের।



এমন অবস্থায় বেড়ি বাঁধ নির্মাণসহ সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য তাৎক্ষনিক কোন ব্যবস্থা না নিলে পুরো দীঘলবাক বিলীন হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ এওলা মিয়া।
 
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাজিনা সারোয়ার জানান, খুব শীঘ্রই বেড়িবাধ ও সুইস গেইট নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.